নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর প্রতীক ও মুক্ত চিন্তার প্রতিচ্ছবি হিসেবে পরিচিত আবরার ফাহাদকে তার নিজ ক্যাম্পাসে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের ছাত্র সংগঠনের কিছু সদস্য জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
সোমবার (৩ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আবরার ফাহাদের স্বাধীনতা পদক প্রাপ্তি এবং তার আত্মত্যাগকে স্মরণ করে একটি পোস্ট শেয়ার করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
তিনি তার পোস্টে লেখেন, 'অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহসিকতার প্রতীক, মুক্ত চিন্তার এক প্রতিচ্ছবি আবরার ফাহাদ। মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক ২০২৫-এ ভূষিত হওয়া তার আত্মত্যাগের স্বীকৃতি। তার আদর্শ আমাদের আলোকিত করে, ন্যায়বিচারের পথে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা দেয়। জাতি তোমাকে ভুলবে না, আবরার!'
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে শিবির সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তার নির্মম মৃত্যু সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল। শিক্ষাঙ্গনে সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার প্রতীক হিসেবে তাকে স্মরণ করা হয়।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
দিল্লি যাওয়ার সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জুনায়েদ আহমেদ পলককে আটক করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ থেকে তাকে আটক করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিমানবন্দরে দায়িত্বরত একজন জানান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলক বিমানবন্দরে অবস্থান করছিলেন। তিনি মাস্ক পরিহিত ছিলেন। এ সময় কর্মচারীরা তাকে দেখে চিনে ফেলেন। সেখানেই আটক হন পলক।
এদিকে, গতকাল সোমবার তার ব্যক্তিগত সহকারী গণমাধ্যমকে জানান, রবিবার রাতের পর থেকে পলকের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করতে পারছেন না।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবর প্রচারের পরপরই নাটোরের সিংড়ায় জুনাইদ আহমেদ পলকের বাড়িতে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। এদিন বিকেল ৪টা নাগাদ সিংড়া উপজেলা সদরের গোডাউন পাড়ায় পলকের বাড়িতে জনতা আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এ সময় লুটপাটের ঘটনাও ঘটে।
মন্তব্য করুন
রেলের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, তাদের দাবি পূরণের বিষয়ে অর্থ বিভাগের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, "দাবি থাকতে পারে, কিন্তু ট্রেন বন্ধ রেখে যাত্রীদের জিম্মি করে আন্দোলন করা দুঃখজনক। এই বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের হাতে কিছু নেই, যা করার তা অর্থ মন্ত্রণালয়কে করতে হবে। আলোচনা চলছে, সমাধান হবে।"
পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে সারা দেশে কর্মবিরতি পালন করছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। এতে বন্ধ হয়ে যায় সারা দেশের ট্রেন চলাচল।
মঙ্গলবার সকালে কমলাপুর রেলস্টেশনে সরেজমিনে দেখা যায়, যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। ব্যস্ত টিকিট কাউন্টারগুলোতে নিরবতা বিরাজ করছে। ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, রাজশাহী কিংবা কক্সবাজারগামী যাত্রীরা স্টেশনে এসে জানতে পারেন, ট্রেন চলাচল বন্ধ।
পরিবারসহ শীতে স্টেশনে অপেক্ষা করা যাত্রীরা জানান, ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার খবর আগে জানলে হয়তো আসতেন না। তবে কাউন্টারে এসে বিপাকে পড়তে হয়েছে তাদের।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
চট্টগ্রামে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের হাতে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনার ভিডিও দেখে সন্দেহভাজন অন্তত ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বার্তায় আরও জানানো হয়, সংঘর্ষ চলাকালে ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে গতকালই ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)। ওই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ থেকে আরও ছয়জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশীয় ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভসহ (ককটেল) আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ছয় সদস্যকে আটক করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ, দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া, সংসদ ভেঙে দেয়া এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সোমবার (২১ অক্টোবর) এ বক্তব্যের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে বিবৃতি দেয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের উপপ্রেস সচিব মুহা. শিপলু জামান সই করা বিবৃতিতে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ইস্যুতে রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে প্রচারণা চালানো হয়েছে তা জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে, ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও দেশত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সাংবিধানিক বৈধতার উপর যত ধরনের প্রশ্ন জনমনে উদ্রেক হয়েছে সেগুলোর যাবতীয় উত্তর স্পেশাল রেফারেন্স নং-০১/২০২৪ এ সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের গত ৮ আগস্ট, ২০২৪ এর আদেশে প্রতিফলিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ০৮ আগস্ট, ২০২৪ সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের মতামত চাওয়ার প্রেক্ষিতে আপীল বিভাগ এই মতামত দিয়েছিলেন। মীমাংসিত এই বিষয়ে নতুন করে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল কিংবা বিব্রত করা থেকে বিরত থাকার জন্য রাষ্ট্রপতি সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে পালিয়ে যান ততকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ পত্র রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি।
উল্লেখ্য, শনিবার (১৯ অক্টোবর) মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে আলাপকালে রাষ্ট্রপতি বলেন, তিনি শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু তার কাছে এ সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই। সাক্ষাৎকারটি মানবজমিন পত্রিকার রাজনৈতিক ম্যাগাজিন সংস্করণ 'জনতার চোখ'-এ প্রকাশিত হয়েছে।
সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরীর মতে, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র যদি সত্যিই জমা দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে সেটির অনুলিপি কারও না কারও কাছে থাকার কথা। কিন্তু তিন সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন জায়গায় অনুসন্ধান চালালেও এর খোঁজ কেউ দিতে পারেনি তাকে। এমনকি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগেও যোগাযোগ করা হয়েছে, যেখানে সাধারণত প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র সংরক্ষিত থাকে। কিন্তু সেখানেও কিছু পাওয়া যায়নি। তাই শেষমেষ রাষ্ট্রপতির কাছেই সরাসরি এর উত্তর জানার সুযোগ মেলে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-আন্দোলন ও গণবিক্ষোভের মুখে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। সংবিধানের ৫৭(ক) ধারা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, তার কাছে শেখ হাসিনার কোনো পদত্যাগপত্র বা সংশ্লিষ্ট কোনো প্রমাণ পৌঁছায়নি।
রাষ্ট্রপতির ভাষ্যে, ‘বহু চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়তো সময় পাননি।’
কথোপকথনের সময় রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গভবনে ফোন এলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে। বলা হলো, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে আসবেন মহামান্য প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য। এটা শুনেই প্রস্তুতি শুরু হলো বঙ্গভবনে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ফোন এলো তিনি আসছেন না।’
তিনি বলেন, ‘চারদিকে অস্থিরতার খবর। কী হতে যাচ্ছে জানি না। আমি তো গুজবের ওপর নির্ভর করে বসে থাকতে পারি না। তাই সামরিক সচিব জেনারেল আদিলকে বললাম খোঁজ নিতে। তার কাছেও কোনো খবর নেই। আমরা অপেক্ষা করছি। টেলিভিশনের স্ক্রলও দেখছি। কোথাও কোনো খবর নেই। এক পর্যায়ে শুনলাম, তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। আমাকে কিছুই বলে গেলেন না।’
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার যখন বঙ্গভবনে এলেন তখন জানার চেষ্টা করেছি প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন কি না? একই জবাব। শুনেছি তিনি পদত্যাগ করেছেন। মনে হয় সে সময় পাননি জানানোর।’
তিনি বলেন, ‘সব কিছু যখন নিয়ন্ত্রণে এলো তখন একদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব এলেন পদত্যাগপত্রের কপি সংগ্রহ করতে। তাকে বললাম, আমিও খুঁজছি।’
মতিউর রহমান চৌধুরীর সাথে আলাপচারিতার এক পর্যায়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এ বিষয়ে আর বিতর্কের সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী চলে গেছেন এবং এটাই সত্য। তবুও, এই প্রশ্নটি যাতে আর কখনো না ওঠে তা নিশ্চিত করতে আমি সুপ্রিম কোর্টের মতামত চেয়েছি।’
রাষ্ট্রপতির পাঠানো রেফারেন্সের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ ৮ আগস্ট এ সম্পর্কে তাদের মতামত দেন। এতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক শূন্যতা দূর করতে এবং নির্বাহী কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে। প্রেসিডেন্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টামণ্ডলীকে শপথবাক্য পাঠ করাতে পারবেন বলে আপিল বিভাগ মতামত দেন।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও গণবিক্ষোভের মুখে দেশত্যাগ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবিধানের ৫৭ (ক) ধারা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হয়। কিন্তু রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, তার কাছে শেখ হাসিনার কোনো পদত্যাগপত্র বা সংশ্লিষ্ট কোনো প্রমাণ পৌঁছায়নি।
মন্তব্য করুন
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে। তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে "চোরতন্ত্র" প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তিনি বলেন, অর্থের বিনিময়ে বড় বড় প্রকল্পের কাজ দেওয়া এবং দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ পাচার করা সেই সময়ের নিয়মিত ঘটনা ছিল। সে সময় পাচার করা অর্থ দিয়েই এখন প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে পাচারকারীরা।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ‘জুলাই বিপ্লবে গণমাধ্যমের ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জুলাই বিপ্লবের প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, “যারা এই বিপ্লবে অংশ নিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এখানে কোনো গণঅভ্যুত্থান হয়নি বরং মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটেছে। এ ধরনের অপপ্রচার করে পরাজিত শক্তি আপনাদের জঙ্গি হিসেবে উপস্থাপন করতে চায়।”
তিনি আরও বলেন, "জুলাই বিপ্লবের সময় অনেক গণমাধ্যম আন্দোলনকারীদের 'জাতির শত্রু' হিসেবে চিত্রিত করেছিল। গণমাধ্যমের মাধ্যমে এমন ভাষা ব্যবহার করা হয়েছিল যা শাসকদের কাছে আন্দোলনকারীদের দমন করার বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল। যদি ফ্যাসিস্ট শক্তি জয়ী হতো, তবে হাজার হাজার মানুষকে কারাগারে পাঠানো হতো এবং আন্দোলনকে 'অরাজকতা সৃষ্টিকারী' হিসেবে দেখানো হতো।"
সাংবাদিকতা কেবল পেশা নয়, এটি একটি দায়িত্ব উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, "জুলাই বিপ্লবে কার কী ভূমিকা ছিল তা আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। সবাইকে তাদের অভিজ্ঞতা এবং পর্যবেক্ষণ লিখে রাখার আহ্বান জানাই।"
অনুষ্ঠানে উপস্থিত পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, “যদি ফ্যাসিস্ট সরকার আরও এক মাস সময় পেত, তাহলে ২৫ মার্চের মতো আরও একটি কালরাত দেখা যেত। সেই রাতে শিক্ষক, সাংবাদিক এবং তরুণদের টার্গেট করে হত্যা করা হতো। ফ্যাসিস্ট সরকার টিকে গেলে যুবসমাজের চাকরির অধিকারও হরণ করা হতো।”
মন্তব্য করুন
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বিচার বিভাগ শেখ হাসিনার দাসে পরিণত হয়েছিল।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর কাকরাইলে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন।
গত ১৬ বছরে সরকারি ও বেসরকারি খাতে দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, "দুদক ছিল, উচ্চ আদালত ছিল, কিন্তু বিচার হয়নি। তবে বিচার হয়েছে খালেদা জিয়ার।"
বিচার না হওয়ায় দুর্নীতি সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ও দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, "দুদকে ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন।"
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, "সৎ প্রজন্ম তৈরি করতে পারলে দুর্নীতিবিরোধী সমাজ গঠন করা সহজ হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেবল প্রতিকারমূলক কার্যক্রম গ্রহণ নয়, বরং সবার মনে দুর্নীতিবিরোধী চেতনা জাগ্রত করতে হবে।"
মন্তব্য করুন
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ ও দেশ গড়ার স্বপ্ন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেরণা। ৭১-এর হানাদার বাহিনীর জুলুমের পুনরাবৃত্তি ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ করেছে।’
আজ শনিবার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে যেভাবে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তারই পুনরাবৃত্তি আমরা এ বছরের জুলাই মাসে দেখেছি। আপনারা দেখেছেন কিভাবে আমাদের শীর্ষ ছাত্র নেতাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন আমরা দেখছি এবং যেভাবে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এগিয়ে যাচ্ছেন, তা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্নের ধারাবাহিকতা। তাদের আদর্শ ও স্বপ্নকে ধারণ করেই আমরা এগিয়ে চলেছি। ড. ইউনূসের পুরো টিম শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শকে লালন করে কাজ করছে।’
এছাড়া শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান আমাদের সামনে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। দেশ গড়ার দ্বিতীয় সুযোগকে কোনোভাবেই হাতছাড়া করা যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা নিয়ে যেভাবে মুক্তিযোদ্ধারা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, তারই ধারাবাহিকতায় আমরা জুলাই মাসে গণঅভ্যুত্থান দেখেছি। ছাত্ররা জীবনের মায়া ত্যাগ করে গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছে। আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে দাঁড়িয়ে তাদের ত্যাগের কথা মনে পড়ছে।’
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির আহমেদ রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার ফলে ভারত শোকাহত হয়েছে। ভারত শেখ হাসিনার জন্য খুব কষ্ট পেয়েছে এবং তারা যড়ষন্ত্র করছে যাতে শেখ হাসিনাকে আবার দেশে ফিরিয়ে এনে ক্ষমতায় বসানো যায়।
রবিবার বিকেলে লালমনিরহাটের বড়বাড়ী শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের চতুর্থ খেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া জেল-জুলুম সহ্য করে দেশে ছিলেন এবং এখনো আছেন, কিন্তু শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের রেখে ভারতে পালিয়ে গেছেন। এটিই হলো শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়ার মধ্যে পার্থক্য।
তিনি আরও বলেন, ভারতীয় মিডিয়া স্বাধীন দেশের বিষয়ে অপ্রচার চালাচ্ছে শুধুমাত্র শেখ হাসিনার জন্য। ভারতকে আমি বলব— যদি শেখ হাসিনার জন্য এত মায়া থাকে, তাহলে ভারতে তার জন্য আরেকটি তাজমহল তৈরি করুন।
তিনি বলেন, ভারতীয় যড়ষন্ত্রের কারণে সতর্ক থাকতে হবে। দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, একজন মেয়রের বাড়ি থেকে ভাত আনতে রাষ্ট্রের মাসে ২৫ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে—এটা কী ভাবা যায়? এর মাধ্যমে দুর্নীতির পরিমাণ বোঝা যায়।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ বিনা ভোটে জনগণের গণতন্ত্র হরণ করে নিজেদের লোকজনকে লুটপাটের সুযোগ দিয়েছে। পুলিশের একজন আইজি হাজার কোটি টাকার মালিক, এবং একজন মন্ত্রীর দেশের বাইরে ২৫০ মিলিয়ন পাউন্ডের বাড়ি রয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার জন্য হাজার হাজার মানুষকে খুন করেছেন, বিরোধী মতের ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। তিনি নিজের ইচ্ছামতো দেশ পরিচালনা করেছেন এবং ব্যাংক লুট করেছেন। শেখ হাসিনা রক্তপিপাসু, এখন ভারতে পলাতক থেকেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। তাই ফ্যাসিবাদ যাতে পুনরায় ক্ষমতায় না আসে, সে জন্য আমাদের সজাগ থাকতে হবে। তাহলেই ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ সার্থক হবে।
এ সময় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক মন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক একেএম মমিনুল হক বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
রাষ্ট্রপতির অপসারণের প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নিতে রাজনৈতিক ঐকমত্যের প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
রবিবার সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, এখানে আমাদের তাড়াহুড়ো করার সুযোগ নেই আবার অনেক বেশি দেরিও করা ঠিক হবে না। রাজনৈতিক ঐক্যমত্য তৈরির প্রচেষ্টা চলছে, সেখান পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।"
তিনি আরও বলেন, "রাষ্ট্রপতির পদচ্যুতির বিষয়ে গোপনীয় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা প্রকাশ্যে নেওয়া হবে। রাজনৈতিক ঐকমত্য যত তাড়াতাড়ি হবে, তার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত আসবে।"
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উল্লেখ করেন, "বিএনপি বলছে যে তারা রাজনৈতিক সংকট দেখছে, আবার বিএনপির কিছু নেতারা বলছেন, তারা সেই সংকট দেখছেন না। যারা রাষ্ট্রপতির অপসারণ চাচ্ছেন এবং যারা মনে করছেন এটা হলে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হবে—তাদের মধ্যেই ঐক্যের চেষ্টা চলছে।"
তিনি বলেন, "এখন কোনো সিদ্ধান্ত হবে কি না বা রাজনৈতিক ঐক্যের ফলে সিদ্ধান্ত কী হবে, তা বলা সম্ভব নয়। কারণ রাজনৈতিক ঐক্য কোন দিকে যাবে এবং মতামত কোন দিকে বেশি যাবে, তা পূর্বাভাস দেওয়া কঠিন।"
মন্তব্য করুন
রাজধানীর লালবাগ থানাধীন আজিমপুর এলাকায় আইডিয়াল কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যা মামলায় সাবেক মন্ত্রী ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ এ আদেশ দেন।
আজ ঢাকার সিএমএম আদালতে চার দিনের রিমান্ড শেষে তাকে হাজির করে পুলিশ। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক সাজ্জাদ হোসেন, রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
নথি থেকে জানা গেছে, গত ৮ নভেম্বর আদালত এ মামলায় তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। ২৫ আগস্ট বিকেলে উত্তরার একটি বাসা থেকে ইনুকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশের একটি টিম। এরপর তাকে বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে নেয়া হয়।
এছাড়াও নথি থেকে জানা যায়, গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় লালবাগের আজিমপুর সরকারি আবাসিক এলাকায় আইডিয়াল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এ ঘটনায় তার বাবা কামরুল হাসান বাদী হয়ে গত ১৯ আগস্ট লালবাগ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন