পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, সারাদেশে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কাছে কোনো ম্যাজিক নেই। পুলিশ যে পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, সেটি সবাই জানে।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর রাজারবাগে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতির ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, সারাদেশে চুরি, ছিনতাই ও খুন বন্ধ করার জন্য পুলিশের কাছে কোনো ম্যাজিক নেই। তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। ছাত্রসমাজের সহযোগিতা চাই। সবাই মিলে একসঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, আগুন লাগার ঘটনা তদন্তাধীন। তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবে।
এছাড়া, সমন্বয়কদের হুমকি সংক্রান্ত প্রতিটি ঘটনাকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তবে এখনো কোনো গুরুতর কিছু পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে ডিএমপির কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, স্বাধীনতার পরে জনগণ এমন একটি পুলিশ বাহিনী চায়নি। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। মানুষের পুলিশের ওপর এত ক্ষোভ কেন, তা বিশ্লেষণ করা উচিত। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ৫ আগস্টের ঘটনার ৭২ ঘণ্টা আগেও যদি পুলিশ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতো, তাহলে এত প্রাণহানি হতো না।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকারের অভিযোগে ৩টি ফিশিং ট্রলারসহ ৪৮ ভারতীয় জেলেকে আটক করা হয়েছে।
মোংলা বন্দরের অদূরে ফেয়ারওয়ে-সংলগ্ন গভীর সাগর থেকে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাতে এসব ট্রলার ও জেলেদের আটক করে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী। আজ শুক্রবার তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
জানা গেছে, মা ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের প্রজনন নিশ্চিতে ২২ দিন মৎস্য আহরণ বন্ধ। এ অবস্থায় বঙ্গপোসাগরে দেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করছে ভারতীয় জেলেরা। এমন অপরাধে ভারতীয় পতাকাবাহী ৩টি ফিশিং ট্রলারসহ ৪৮ জেলেকে আটক করেছে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড।
পুলিশ বলছে, গত ১৭ অক্টোবর বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের নিয়মিত প্যাট্রোলিং চলাকালে জাহাজের রাডারে সন্দেহজনক ফিশিং ট্রলারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে বিদেশি পতাকাবাহী ট্রলার হিসেবে শনাক্ত করা হয়। এ সময় দেশীয় প্রশাসনের উপস্থিতি বুঝতে পেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড সদস্যরা ধাওয়া করে ট্রলার তিনটি বাংলাদেশের জলসীমাতেই আটক করতে সক্ষম হয়।
মোংলা থানার ওসি মো. আনিসুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় থানায় কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলা দায়ের শেষে শুক্রবার বিকালে আটক জেলেদের আদালতে পাঠানো হবে।
মন্তব্য করুন
পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বলেছেন, বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লিরা কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে থাকবেন। পুরো ময়দান সিসি ক্যামেরার আওতায় এনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দেওয়া হবে। তিন পর্বের ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকায় ৬ হাজার পুলিশসহ বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে।
বুধবার দুপুরে ইজতেমা ময়দানের বিদেশি নিবাসের পাশে স্থাপিত জিএমপির কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুমে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, এবারের ইজতেমা ভিন্ন রকমের, কারণ গত আন্দোলনে পুলিশের বিপুল পরিমাণ অস্ত্র হারিয়ে গেছে এবং দেশের বিভিন্ন জেলখানা থেকে অস্ত্র লুট হয়েছে। সেসব এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এবার পুরো ইজতেমা ময়দান ড্রোনের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশের পাশাপাশি ইজতেমা আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক ময়দানের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন।
তিনি জানান, ইজতেমা ময়দানে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ময়দানের চারপাশে পোশাকধারী, সাদা পোশাকে, ড্রোন ভিউ, সিআইডি, ডিবি, সিসিটিভি মনিটরিং, নাইটভিশন ক্যামেরা, রুফটপ পর্যবেক্ষণ, ওয়াচ টাওয়ারসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন থাকবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান, গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল করিম রনি, উপ-পুলিশ কমিশনার এনএম নাসিরুদ্দিন, সিটি এসবির উপ-পুলিশ কমিশনার আলমগীর হোসেন, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হাফিজুল ইসলাম, সহকারি উপ-পুলিশ কমিশনার (টঙ্গী জোন) মেহেদি হাসান দিপু, ইজতেমা আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরব্বি মাহফুজ হান্নান, মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান, টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাবেদ আহমেদ সুমন, সাধারণ সম্পাদক গাজী সালাহ উদ্দিন প্রমুখ।
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, হামাসের সামরিক এবং প্রশাসনিক কাঠামো নির্মূল না করা পর্যন্ত যুদ্ধ অব্যাহত রাখা হবে।
তিনি বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধ করার ক্ষেত্রে ইসরাইলের যে শর্ত রয়েছে সেটি পরিবর্তিত হয়নি; হামাসের সামরিক ও প্রশাসনিক কাঠামো ধ্বংস করা, সব জিম্মিকে মুক্ত করা এবং নিশ্চিত করা যে, গাজা আবারও ইসরাইলের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে না।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধে শুক্রবার একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ প্রস্তাবে বাইডেন বলেছেন, প্রথমে ছয় সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি হবে, এরপর ইসরাইলি বাহিনী গাজার জনবহুল এলাকা থেকে সরে যাবে, গাজায় বিপুল ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে, কয়েকশো ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরাইল, হামাস মুক্তি দেবে ইসরাইলি জিম্মিদের— যার মধ্যে থাকবে পুরুষ সেনারাও।
এরপর গাজার পুনর্গঠনের কাজ শুরু হবে। সবশেষে দুই পক্ষের মধ্যে সব ধরনের হামলা বন্ধ অর্থাৎ স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হবে। বাইডেন এটিকে ইসরাইলের প্রস্তাব হিসেবেই অভিহিত করেছেন।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন দখলদার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
তিনি আরও বলেছেন, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হওয়ার আগ পর্যন্ত ইসরাইল তার শর্তে অটল থাকবে। এসব শর্ত পূরণ হওয়ার আগে ইসরাইল স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবে এমন ধারণা বাস্তব হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এদিকে বাইডেন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হামাস বলেছে, তারা এতে ‘ইতিবাচক’।
এছাড়া ইসরাইলের বিরোধী দলগুলোও এতে সমর্থন জানিয়েছেন। হামাসের হাতে যেসব জিম্মি রয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরাও এই শর্ত কার্যকর করার জন্য দাবি জানাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন
পঞ্চদশ সংশোধনী মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে ধ্বংস করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের প্রশ্নে রায় ঘোষণার সময় বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন। রায় ঘোষণা এখনও চলমান রয়েছে।
এর আগে, বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ হবে না, এ বিষয়ে রুল জারি করা হয়েছিল। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী রায় ঘোষণা শুরু করেন। রায়ের মূল অংশ পাঠ করেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।
গত ৫ ডিসেম্বর হাইকোর্ট পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে রুলের রায়ের জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেছিল। দীর্ঘ ২৩ কার্যদিবসের শুনানি শেষে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন। রিটকারী সুজনের বদিউল আলমের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া। বিএনপির পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল। জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী। ইনসানিয়াত বিপ্লবের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান, চার আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী, ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে রুলে বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার পক্ষভুক্ত হন। এছাড়া ইনসানিয়াত বিপ্লব, গণফোরাম, চার আবেদনকারী রুলে ইন্টারভেনর হিসেবে পক্ষভুক্ত হন।
মন্তব্য করুন
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বিচার বিভাগ শেখ হাসিনার দাসে পরিণত হয়েছিল।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর কাকরাইলে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন।
গত ১৬ বছরে সরকারি ও বেসরকারি খাতে দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, "দুদক ছিল, উচ্চ আদালত ছিল, কিন্তু বিচার হয়নি। তবে বিচার হয়েছে খালেদা জিয়ার।"
বিচার না হওয়ায় দুর্নীতি সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ও দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, "দুদকে ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন।"
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, "সৎ প্রজন্ম তৈরি করতে পারলে দুর্নীতিবিরোধী সমাজ গঠন করা সহজ হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেবল প্রতিকারমূলক কার্যক্রম গ্রহণ নয়, বরং সবার মনে দুর্নীতিবিরোধী চেতনা জাগ্রত করতে হবে।"
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার শেষে রায় হলে শেখ হাসিনার দেশে ফেরার বিষয়ে ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানানো হবে। তিনি এ বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি আন্তর্জাতিক আইনের উল্লেখ করে বলেন, "ভারত এ আইন মেনে কাজ করতে বাধ্য হবে।"
গত শনিবার নিক্কেই এশিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস। সোমবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়।
তিনি বলেন, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার সবকিছু ধ্বংস করে গেছে, নির্বাচনের আগে আমাদের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা, আমলাতন্ত্র ও বিচারব্যবস্থায় ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন। এ জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনি ব্যবস্থা, সংবিধান এবং বিচার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে। জানুয়ারির মধ্যে ওই কমিশনগুলোর সুপারিশ হাতে পাওয়ার পর পূর্ণাঙ্গ সংস্কার বাস্তবায়ন করার কথা জানান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তবে এ সংস্কার বাস্তবায়নে কিছুটা সময় লাগবে।
তিনি বলেন, "নতুন বাংলাদেশ" গড়তে আমরা একেবারে শূন্য থেকে শুরু করেছি, তাই সংস্কার বাস্তবায়নে সময় লাগবে।
নির্বাচন কখন হবে তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেছেন, "নির্বাচনের সময় নির্ভর করবে সংস্কার প্রক্রিয়ার ওপর। এর ফলাফলই সময় নির্ধারণ করবে।"
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সাধারণ নির্বাচনে ড. ইউনূস প্রার্থী হবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, "না, আমি রাজনীতিবিদ নই। আমি সবসময় রাজনীতি থেকে দূরে থেকেছি।" তিনি মনে করেন, রাষ্ট্রের যেসব ব্যক্তি নীতি-নৈতিকতা সমুন্নত রাখেন, নিয়ম-কানুন মেনে চলেন এবং দুর্নীতিমুক্ত থাকেন, তারা নির্বাচনে দাঁড়ানো উচিত।
ড. ইউনূস বলেন, হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে দেশের শাসনকাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে, আর গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করে তা পুনর্গঠন করার বিরাট কাজ এখন আমাদের করতে হবে।
তিনি বলেন, "হাসিনার শাসনামলে গণতন্ত্রের রীতি-নীতি একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে। টানা তিন মেয়াদে ভোটারবিহীন ভুয়া নির্বাচন আয়োজন করা হয়েছে, যাতে হাসিনা এবং তার দল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। একজন ফ্যাসিবাদী শাসক হিসেবে এসব করেছেন হাসিনা।"
ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, "এ বছর আগস্টে ছাত্রনেতৃত্বাধীন সরকারি চাকরিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে কয়েকশ শিক্ষার্থী নিহত হন। এরপর শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন হাসিনার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। শেষ পর্যন্ত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে হাসিনার ১৫ বছরের শাসন শেষ হয়। তিনি হেলিকপ্টারে চড়ে ভারতে পালিয়ে যান। অক্টোবরে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা এবং তার বেশ কয়েকজন সহযোগীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।"
কূটনৈতিক ফ্রন্টে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী ও সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়। এ ক্ষেত্রে ড. ইউনূস দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) পুনরুজ্জীবনের প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি ভারত ও পাকিস্তানের বৈরী সম্পর্কের কারণে সার্ক কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, সার্কের লক্ষ্য হলো, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর মতো নিজেদের মধ্যে চলাফেরার স্বাধীনতা এবং আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য উৎসাহিত করা। তিনি ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন।
হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগের বিষয়ে ড. ইউনূস বলেছেন, "সংখ্যালঘু ইস্যুতে যা বলা হচ্ছে তার বেশিরভাগই প্রোপাগান্ডা।" তিনি দাবি করেন, এসব তথ্য সঠিক নয়। তিনি ভারতীয় সাংবাদিকদের বাংলাদেশে এসে সঠিক তথ্য সংগ্রহের আহ্বান জানান এবং বলেন, "আমরা এসব অপ-তথ্যের বিরুদ্ধে ভারত সরকারকে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য কাজ করছি।"
অন্য আঞ্চলিক সম্পর্কের বিষয়ে ড. ইউনূস চীনকে "আমাদের বন্ধু" হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, "সড়ক ও বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ থেকে শুরু করে সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত চীন আমাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে।"
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ বেইজিংয়ের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
ড. ইউনূস দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সংস্থা (আসিয়ানে) বাংলাদেশের যোগদানের বিষয়ে জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, "বাংলাদেশ আসিয়ানে যোগ দেওয়ার বিষয়ে একটি প্রতিশ্রুতিশীল সুযোগ হিসেবে এটি গ্রহণ করতে চায়, বিশেষ করে ২০২৬ সালে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসার পর।"
তিনি জানান, মালয়েশিয়া আগামী জানুয়ারিতে আসিয়ানের সভাপতি হতে যাচ্ছে এবং তিনি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তার দমন-পীড়ন থেকে বাঁচতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, "এই দায় (রোহিঙ্গা) বাংলাদেশ কতদিন বহন করবে?" তিনি বলেন, "রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আমাদের একটি সুস্পষ্ট গন্তব্য এবং অভিন্ন লক্ষ্য ঠিক করা দরকার।"
বাংলাদেশ মিয়ানমারে জাতিসংঘ-শাসিত একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে, যাতে রোহিঙ্গারা সেখানে নিরাপদে থাকতে পারে এবং তাদের দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে তারা নিজেদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারে।
মন্তব্য করুন
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)রাও পালিয়ে গেছেন। ৫১টি জেলার পিপি গায়েবি মামলার তথ্য পাঠিয়েছেন। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে সংস্কার নিয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংলাপে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা আমলের গুম-খুন ও জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচারের চ্যালেঞ্জ নিয়ে এই সংলাপের দ্বিতীয় দিন চলছে।
ড. আসিফ নজরুল আরও বলেন, "সব বিচার আইন বিভাগই করবে, কোনো গাফিলতি হবে না। হাসান মাহমুদ, ওবায়দুল কাদেরের মতো বদমাশরা কেন পালিয়ে গেল, এই প্রশ্ন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে করা হবে।"
আলোচনার শুরুতেই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা বক্তব্য রাখেন। তারা গত ১৬ বছরে দেশে ঘটে যাওয়া সব হত্যা, বিডিআর হত্যাকাণ্ডসহ সকল গুমের বিচার দাবি করেন। ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাধারণ সম্পাদক অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার সরকারের গুমের সংস্কৃতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র গুম হওয়ার মাধ্যমে শুরু হয়েছে।
এছাড়া জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অন্তবর্তী সরকার এখনও গুমের বিচার শুরু করেনি।
সংলাপের দ্বিতীয় সেশন দুপুর ২:৩০ থেকে শুরু হবে, যেখানে সংস্কারের দায়িত্ব ও নির্বাচন বিষয়ক দিক নিয়ে আলোচনা হবে। বিকেল পৌনে ৫টায় পঞ্চম অধিবেশন শুরু হবে, যেখানে ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় দেশের স্বার্থ ও নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা হবে।
মন্তব্য করুন
র্যাবের মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমান বলেছেন, বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে নিরাপত্তাজনিত কোনো ঝুঁকি নেই। তিনি বলেন, দুপক্ষের অন্তর্কোন্দল ছাড়া আপাতত অন্য কোনো ঝুঁকি দেখা যাচ্ছে না। ময়দানের সার্বিক নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ইজতেমা ময়দান পরিদর্শন শেষে র্যাবের কন্ট্রোল রুমে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেছেন তিনি।
র্যাব মহাপরিচালক জানান, ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তায় র্যাবের ফুট পেট্রোল, গাড়ি ও মোটরসাইকেল টহল, স্ট্রাইকিং ফোর্স, রিজার্ভ ফোর্স, ড্রোন পর্যবেক্ষণ দল এবং ময়দানসহ আশপাশের এলাকায় সিসি টিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। এছাড়া নদীপথেও র্যাবের নৌ-টহল চলছে।
তিনি আরও বলেন, ইজতেমাকে কেন্দ্র করে ছোটখাটো কিছু অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে। এই বিষয়টি মাথায় রেখে র্যাব, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা ময়দানের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন।
তিনি উল্লেখ করেন, ইজতেমা উপলক্ষে টঙ্গীতে দেশ-বিদেশের লাখো মুসল্লির সমাগম ঘটে। এসময় মোবাইল চুরি, ছিনতাই, মলম পার্টি, মাদকাসক্তি, উচ্ছৃঙ্খলতা ও পকেটমারদের দমাতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
এ সময় র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল মোহাম্মদ জাহিদুল করিমসহ র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আগামীকাল শুক্রবার বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
আগামী ৯ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ২৭ দেশের রাষ্ট্রদূতরা সাক্ষাৎ করবেন।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আগামী ৯ ডিসেম্বর ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ দেশের রাষ্ট্রদূত (২০ জন অনাবাসী রাষ্ট্রদূতসহ) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতসহ মোট ২৮ জন একত্রিত হয়ে বৈঠক করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব সদস্য রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত একত্রিত হয়ে সরকারের প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করার উদ্যোগ এটি প্রথমবার। এই বৈঠক বাংলাদেশ ও ইইউ-এর সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রফিকুল আলম আরও বলেন, আসন্ন যৌথ সভায় তারা বাংলাদেশের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত সদস্য রাষ্ট্রসমূহ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সার্বিক পর্যালোচনা, সহযোগিতার নতুন ও সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রসমূহ, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী জিএসপি প্লাস বাণিজ্য সুবিধা, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অস্তিত্ব সংকট মোকাবিলা, দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন এবং সর্বোপরি একটি টেকসই ভবিষ্যত গঠনে উভয়ের অঙ্গীকার ও করণীয় বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসা কার্যক্রম সীমিত থাকার কারণে নয়াদিল্লির বুলগেরিয়া ও রোমানিয়া দূতাবাস থেকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুলগেরিয়া ও রোমানিয়া গমনেচ্ছু বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের তৃতীয় কোনো দেশে অবস্থিত বুলগেরিয়া ও রোমানিয়া দূতাবাস থেকে ভিসা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুলগেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ায় অবস্থিত বুলগেরীয় দূতাবাস থেকে ৮৬ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে ভিসা প্রদানে সম্মত হয়েছে। এছাড়া, রোমানিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডে অবস্থিত রোমানিয়া দূতাবাস থেকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রদান করছে।
রফিকুল আলম বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কাজাখস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সে দেশে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে যাওয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ব্যাংককে অবস্থিত কাজাখস্তান দূতাবাস থেকে ভিসা প্রদানে সম্মত হয়েছে। এছাড়া, চলমান আলোচনা অনুযায়ী, বুলগেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে তারা ভিএফএস গ্লোবালের মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা প্রদান করতে আগ্রহী।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, বলেছেন যে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার বা কোনো রাজনৈতিক দল গঠনের ইচ্ছা পোষণ করেন না। তিনি যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তার সরকার এখনো নির্বাচনের রূপরেখা চূড়ান্ত করেনি। সাক্ষাৎকারটি বুধবার (৩০ অক্টোবর) প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বলেন, "আমাদের কাজ হলো সবকিছু স্বাভাবিক করা এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করা। নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবো।"
ড. ইউনূস আওয়ামী লীগের প্রতি কঠোর মনোভাব প্রকাশ করে বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগে ফ্যাসিবাদের সব বৈশিষ্ট্য দেখা গেছে। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশে তাদের কোনো স্থান নেই।
ফিনান্সিয়াল টাইমস জানায়, শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের এই বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, তার নেতৃত্বাধীন সরকার শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের প্রতি কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এছাড়া, তিনি উল্লেখ করেন, সরকার শেখ হাসিনাকে ভারতের কাছ থেকে ফেরত চাইবে না, যাতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা না বাড়ে।
ড. ইউনূস আরও বলেন, "আওয়ামী লীগ দেশের জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কোনো ফ্যাসিবাদী দলের অবস্থান থাকার প্রয়োজন নেই।"
দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দল ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নির্বাচন কারচুপি ও বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ করে আসছে। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি পরবর্তী সময়ে দেশে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার দাবিও উঠেছে।
ড. ইউনূস বলেন, "আওয়ামী লীগ ভেঙে যেতে পারে বলে আমার ধারণা। তবে অন্তর্বর্তী সরকার তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে না। তাদের রাজনৈতিক অবস্থান নির্ধারণ এবং ভবিষ্যতে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে নেওয়া হবে।"
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে সাম্প্রতিক অবনতির বিষয়ে তিনি বলেন, "আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর আমরা ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইতে পারি। তবে রায় ঘোষণার আগে এই পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন নেই।"
ড. ইউনূস বলেন, "আমাদের প্রতিবেশী সম্পর্ক থাকা প্রয়োজন। ভারত যদি বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পে সমর্থন দেয়, তবে তা উভয় দেশের জন্যই উপকারী হবে।"
মন্তব্য করুন