আগামী জানুয়ারিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার প্রয়োগের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে সব নির্বাচনী উপকরণ ক্রয় ও মাঠ পর্যায়ে বিতরণ সম্পন্ন করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপে এমন কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর তার দুই মাস আগে ঘোষণা হবে সংসদ নির্বাচনের তফসিল। আর নির্বাচনের সেই কর্মপরিকল্পনা লিপিবদ্ধ করে একটি সময়সীমা করেছে নির্ধারণ করেছে সংস্থাটি।
রোডম্যাপে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মধ্যে প্রবাসীদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোটের যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করা হবে। পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন চলতি বছরের ২২ অক্টোবরের মধ্যে চূড়ান্ত করে ১৫ নভেম্বর নিবন্ধন সনদ দেওয়া দেওয়া হবে। বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের অনুমতি প্রদানে যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করা হবে একই সময়ের মধ্যে।
নির্বাচনী তথ্য প্রচারের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়, আইসিটি মন্ত্রণালয়, টিঅ্যান্ডটি, বিটিআরসিসহ বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর কোম্পানির সঙ্গে সভা আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে।
এদিকে আগামীকাল থেকে শুরু হবে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, যা শেষ হবে ভোটের কয়েকদিন আগে। নির্বাচনী ম্যানুয়াল, নির্দেশিকা, পোস্টার ইত্যাদি মুদ্রণ ১৫ সেপ্টেম্বর মধ্যে, নির্বাচনের সকল প্রকার মালামাল সংগ্রহ ও বিতরণ কার্যক্রম ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ব্যবহার উপযোগী স্বচ্ছ ব্যালট চূড়ান্ত করা হবে ৩০ নভেম্বর মধ্যে, ১৫ নভেম্বর চূড়ান্ত করা হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাজেট। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুকূলে অর্থ বরাদ্দের জন্য বৈঠক ১৬ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত শেষ হবে ৩০ সেপ্টেম্বরে মধ্যে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রথম সভা হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। আবার নির্বাচনের আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ৩১ অক্টোবর হবে। একই সময়ের মধ্যে ৩১ আইসিটি সংক্রান্ত সকল কাজ সম্পন্ন করা হবে।
রোডম্যাপে মোট ২৪ ধরনের কার্যাবলি ও সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এক-এগার সরকারের সময়কার এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন প্রথমবারের মতো রোডম্যাপ ঘোষণা করে। এরপর প্রতিটি কমিশন সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে আসছে।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ, দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া, সংসদ ভেঙে দেয়া এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সোমবার (২১ অক্টোবর) এ বক্তব্যের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে বিবৃতি দেয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের উপপ্রেস সচিব মুহা. শিপলু জামান সই করা বিবৃতিতে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ইস্যুতে রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে প্রচারণা চালানো হয়েছে তা জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে, ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও দেশত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সাংবিধানিক বৈধতার উপর যত ধরনের প্রশ্ন জনমনে উদ্রেক হয়েছে সেগুলোর যাবতীয় উত্তর স্পেশাল রেফারেন্স নং-০১/২০২৪ এ সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের গত ৮ আগস্ট, ২০২৪ এর আদেশে প্রতিফলিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ০৮ আগস্ট, ২০২৪ সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের মতামত চাওয়ার প্রেক্ষিতে আপীল বিভাগ এই মতামত দিয়েছিলেন। মীমাংসিত এই বিষয়ে নতুন করে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল কিংবা বিব্রত করা থেকে বিরত থাকার জন্য রাষ্ট্রপতি সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে পালিয়ে যান ততকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ পত্র রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি।
উল্লেখ্য, শনিবার (১৯ অক্টোবর) মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে আলাপকালে রাষ্ট্রপতি বলেন, তিনি শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু তার কাছে এ সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই। সাক্ষাৎকারটি মানবজমিন পত্রিকার রাজনৈতিক ম্যাগাজিন সংস্করণ 'জনতার চোখ'-এ প্রকাশিত হয়েছে।
সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরীর মতে, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র যদি সত্যিই জমা দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে সেটির অনুলিপি কারও না কারও কাছে থাকার কথা। কিন্তু তিন সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন জায়গায় অনুসন্ধান চালালেও এর খোঁজ কেউ দিতে পারেনি তাকে। এমনকি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগেও যোগাযোগ করা হয়েছে, যেখানে সাধারণত প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র সংরক্ষিত থাকে। কিন্তু সেখানেও কিছু পাওয়া যায়নি। তাই শেষমেষ রাষ্ট্রপতির কাছেই সরাসরি এর উত্তর জানার সুযোগ মেলে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-আন্দোলন ও গণবিক্ষোভের মুখে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। সংবিধানের ৫৭(ক) ধারা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, তার কাছে শেখ হাসিনার কোনো পদত্যাগপত্র বা সংশ্লিষ্ট কোনো প্রমাণ পৌঁছায়নি।
রাষ্ট্রপতির ভাষ্যে, ‘বহু চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়তো সময় পাননি।’
কথোপকথনের সময় রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গভবনে ফোন এলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে। বলা হলো, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে আসবেন মহামান্য প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য। এটা শুনেই প্রস্তুতি শুরু হলো বঙ্গভবনে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ফোন এলো তিনি আসছেন না।’
তিনি বলেন, ‘চারদিকে অস্থিরতার খবর। কী হতে যাচ্ছে জানি না। আমি তো গুজবের ওপর নির্ভর করে বসে থাকতে পারি না। তাই সামরিক সচিব জেনারেল আদিলকে বললাম খোঁজ নিতে। তার কাছেও কোনো খবর নেই। আমরা অপেক্ষা করছি। টেলিভিশনের স্ক্রলও দেখছি। কোথাও কোনো খবর নেই। এক পর্যায়ে শুনলাম, তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। আমাকে কিছুই বলে গেলেন না।’
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার যখন বঙ্গভবনে এলেন তখন জানার চেষ্টা করেছি প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন কি না? একই জবাব। শুনেছি তিনি পদত্যাগ করেছেন। মনে হয় সে সময় পাননি জানানোর।’
তিনি বলেন, ‘সব কিছু যখন নিয়ন্ত্রণে এলো তখন একদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব এলেন পদত্যাগপত্রের কপি সংগ্রহ করতে। তাকে বললাম, আমিও খুঁজছি।’
মতিউর রহমান চৌধুরীর সাথে আলাপচারিতার এক পর্যায়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এ বিষয়ে আর বিতর্কের সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী চলে গেছেন এবং এটাই সত্য। তবুও, এই প্রশ্নটি যাতে আর কখনো না ওঠে তা নিশ্চিত করতে আমি সুপ্রিম কোর্টের মতামত চেয়েছি।’
রাষ্ট্রপতির পাঠানো রেফারেন্সের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ ৮ আগস্ট এ সম্পর্কে তাদের মতামত দেন। এতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক শূন্যতা দূর করতে এবং নির্বাহী কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে। প্রেসিডেন্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টামণ্ডলীকে শপথবাক্য পাঠ করাতে পারবেন বলে আপিল বিভাগ মতামত দেন।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও গণবিক্ষোভের মুখে দেশত্যাগ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবিধানের ৫৭ (ক) ধারা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হয়। কিন্তু রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, তার কাছে শেখ হাসিনার কোনো পদত্যাগপত্র বা সংশ্লিষ্ট কোনো প্রমাণ পৌঁছায়নি।
মন্তব্য করুন
একজন সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন, এমন প্রস্তাবে সব দল একমত হয়েছে বলে জানান জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ।
রবিবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে চলমান দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৯তম দিনে এ কথা বলেন তিনি।
আলী রীয়াজ জানান, ‘আমরা একটা বিষয়ে একমত হয়েছিলাম, কিন্তু সেটা বলা হয়নি। সেটা হলো, প্রধানমন্ত্রী ১০ বছর মেয়াদে দায়িত্ব পালন করবেন। সনদে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছর উল্লেখ করব।’
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা কি একমত হয়েছি? এ বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ সাহেব একটি শর্ত দিয়েছিলেন, সেটা কি এখনো আছে?’
জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা একবার বলেছি তো বলেছি, ১০ বছরের বেশি কোনো ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল থাকবেন না। আমি বলেছিলাম সংবিধান ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের কমিটি থাকলে বিষয়টি মানব না। আমরা এ হাউসের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নিয়োগসংক্রান্ত বিধান সংবিধানে যুক্ত করব। এর বাইরের বিষয়ে আলোচনা হলে আমাদের শর্ত বহাল থাকবে। আশা করি, সেটা বিবেচনা করবেন। এখন ১০ বছরের বিষয়ে আপনারা ঘোষণা দিতে পারেন। বরং এটা আমাদের প্রস্তাব।’
‘স্বাধীন পুলিশ কমিশন’ গঠনের প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলো একমত জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘পুলিশ কমিশনের বিষয়ে আমরা একমত। গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে আমরা আলোচনা করব। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো আলাপ-আলোচনায় একটি স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনে একমত হয়েছে। যা পুলিশের জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করবে, জনবান্ধবতা নিশ্চিত করবে।’
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে তিন বাহিনী প্রধান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করা হয়েছে। ১ জুলাই ২০২৪ থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও বিভিন্ন মামলায় আটকদের মুক্তি দেওয়া শুরু হয়েছে এবং এরই মধ্যে অনেকে মুক্তি পেয়েছেন।
৬ আগস্ট বঙ্গভবন থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো প্রেস রিলিজে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে গতকাল সোমবার (৫ আগস্ট) রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জানান, কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজনৈতিক বন্দিকে শিগগির মুক্তি দেওয়া হবে। এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান ও আহতদের সুচিকিৎসার প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার কথাও জানান রাষ্ট্রপতি।
তিনি আরও বলেন, জরুরি ভিত্তিতে একটি অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠন করা হবে। সব দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে।
অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠনের লক্ষ্যে গতকাল রাতে বঙ্গভবনে সেনাপ্রধান, নৌপ্রধান, বিমান বাহিনীর প্রধান এবং দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাষ্ট্রপতি।
বৈঠকে কোটাবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করা হয়। এসময় অনতিবিলম্বে একটি অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে সবাইকে ধৈর্য ও সহনশীল আচরণ করার আহ্বান জানানো হয় বৈঠকে। লুটতরাজ ও হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।
সেই বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অনতিবিলম্বে মুক্তির সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে এবং সম্প্রতি বিভিন্ন মামলায় আটক সব বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি যেন কোনোভাবেই বিনষ্ট না হয় সে ব্যাপারেও সভায় ঐকমত্য হয়।
মন্তব্য করুন
জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানসহ ৮ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুই মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি, তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা দিতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ নির্দেশ দেন।
আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ, গাজী এম এইচ তামিম।
এর আগে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানসহ আট কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
অন্য পাঁচজন হলেন ঢাকা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. আবদুল্লাহ আল কাফি, মিরপুর ডিএমপির সাবেক ডিসি মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা, ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুর ইসলাম, গুলশান থানার সাবেক ওসি মাজহারুল হক, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান এবং ঢাকা উত্তর ডিবির সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন।
গত ২০ নভেম্বর, জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক পুলিশ প্রধান ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালকসহ আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে, তাদের ট্রাইব্যুনালের মামলায় কারাগারে রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। সেদিন এ মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়েছিল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দিয়েছিলেন।
এর আগে, জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক পুলিশ প্রধান ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালকসহ আট কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল।
মন্তব্য করুন
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশে এখন পর্যন্ত ভোটের পরিবেশ শতভাগ অনুকূলে রয়েছে। রোববার দুপুরে রাজধানীতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কোনো অনিশ্চয়তা নেই। নির্বাচন নিয়ে কমিশনের কাছে প্রতিকূল পরিস্থিতির তথ্য আসেনি। আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা, নিরপেক্ষতা ও যৌক্তিক বিষয় বিবেচনা করে সীমানা নিয়ে গেজেট প্রকাশ করেছি।
তিনি আরও জানান, ভোটারসংখ্যার ভিত্তিতে জেলা পর্যায়ে গড় ও মোট সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে। কোথাও জনসংখ্যা, কোথাও ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং কোথাও প্রশাসনিক দিককে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তবে শতভাগ একভাবে করা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ভোট কি হবে? এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে ইসি আনোয়ারুল বলেন, এই প্রশ্ন আমাকেও অনেকে করে। ভোট হবে বলেই আমরা রোডম্যাপ ঘোষণা করেছি।
রাজনৈতিক দল নিবন্ধন প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রায় সব রিপোর্ট কমিশনের হাতে এসেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে। তবে নিবন্ধন প্রক্রিয়ার শেষ ধাপে দলগুলোর নাম নিয়ে আপত্তি জানাতে সুযোগ রাখা হবে।
সংবিধান ও বিদ্যমান আইন নিয়ে বিভ্রান্তি প্রসঙ্গে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রস্তাবিত আরপিও সংশোধনী আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের পরই চূড়ান্ত হবে। অন্য কোনো আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু থাকলে তা সমন্বয় করা হবে।
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আগামী ২৪ জুনের মধ্যে তাদের ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। তারা উপস্থিত না হলে, তাদের অনুপস্থিতিতে বিচার হবে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
সোমবার (১৬ জুন) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আদালতের আদেশে বলা হয়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য তাদের ব্যক্তিগতভাবে হাজিরা নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের অবগত করা হবে। তবে এই বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি শেখ হাসিনা কিংবা আসাদুজ্জামান খান কামাল।
মন্তব্য করুন
কাউকে গ্রেফতার করলে ১২ ঘণ্টার মধ্যে তার পরিবারকে বিষয়টি জানাতে হবে- ফৌজদারি কার্যবিধিতে এমন সংশোধনী এনেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
এখন এটি কার্যকর হলে কাউকে গ্রেফতার করে থানায় নেওয়ার সর্বোচ্চ ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবার, বন্ধু বা আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানাতে হবে। কোনো অবস্থায় এই সময় ১২ ঘণ্টার বেশি নেওয়া যাবে না।
বৈঠক শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সংবিধান ও ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী- কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিকটস্থ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করতে হয়। অন্যদিকে কাউকে গ্রেফতার করার সঙ্গে সঙ্গে তার পরিবার ও স্বজনদের জানাতে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের ছয় বছর পর তার কন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে জিয়াউর রহমান তাকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের পৈতৃক বাড়িতে ঢুকতে দেননি।কিন্তু তাকে গাড়ি-বাড়ি দিতে চেয়েছিলেন। সেই প্রস্তাব তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন। আজ শুক্রবার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে গণভবনে দেশে ফেরার ঘটনাপ্রবাহের স্মৃতিচারণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে সেদিন সাধারণ মানুষ সেখানে গিয়েছিল। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বক্তব্য রাখলাম, সব থেকে বড় কথা হলো, আমি যখন যাই, তখন কামাল, জামাল, রোজি, খুকি সবাই বিমানবন্দরে ছিল। আমি যখন ফিরে আসলাম, হাজার হাজার মানুষ, কিন্তু আমি পেলাম বনানীতে সারি সারি কবর।’
তিনি বলেন, ‘৩২ নম্বরে আমরা মিলাদ পড়তে চাইলাম, আমাকে ঢুকতে দেয়নি জিয়াউর রহমান। উল্টো বলেছিল বাড়ি দেবে, গাড়ি দেবে, সব দেবে। বলেছিলাম, তার কাছ থেকে কিছু নেব না। খুনির কাছ থেকে আমি কিছু নিতে পারি না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি যখন দিল্লিতে ছিলাম, সেখানে গিয়ে জিয়াউর রহমান আমার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিল। তার স্ত্রীও দেখা করতে চেয়েছিল, আমি দেখা করি নাই। লন্ডনে যখন, তখনও দেখা করতে চেয়েছিল, আমরা দেখা করিনি। আমি যখন আসলাম ৩২ নম্বরে ঢুকতে দেবে না, উল্টো বাড়ি-গাড়ি সাধবে, সেটা তো আমার কাছে গ্রহণযোগ্য না।’
দেশে ফিরে কোথায় উঠবেন, থাকবেন সেটা জানতেন না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধু আমার পরার কাপড়-চোপড়, দুটো স্যুটকেস ও পুতুলকে (মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল) নিয়ে আমি চলে এসেছি। তারপর এই যাত্রা শুরু। আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী ও দলকে গোছানোর চেষ্টা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নেই, কিন্তু অন্তত এইটুকু বলতে পারি, তার বাংলাদেশ কিছুটা হলেও যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে স্বাধীন করেছিলেন এবং যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন, কিছুটা হলেও সেটা আমরা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।’
তার নির্বাসিত সময়, দেশে ফেরার পরের পরিস্থিতি এবং আওয়ামী লীগ সংগঠন গোছানোর বিষয়গুলোর উল্লেখ করে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘সেদিন ফিরে এসেছিলাম। এত বড় দল পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা ছিল না, ছাত্রলীগ করার সময় নেতা হওয়ার চেষ্টা করি নাই। দলের প্রয়োজনে যে দায়িত্ব দিয়েছে, সেটাই পালন করেছি। কিন্তু যখন এ দায়িত্ব (আওয়ামী লীগ সভাপতি) পেলাম, এটা বড় দায়িত্ব।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে শক্তিশালী বড় সংগঠন। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য দল আওয়ামী লীগ। প্রতিবার চক্রান্ত হয়, সেটা মোকাবিলা করে আমরা বেরিয়ে আসি। আমাদের তা ধরে রাখতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ রক্ত দিয়ে যে অধিকারগুলো আদায় করেছিল, সেটা আমরা সমুন্নত করতে পেরেছি। কিন্তু আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘কী পেলাম, না পেলাম, সেই চিন্তা করিনি। ভবিষ্যৎ কী, সেই চিন্তাও করি না। চিন্তা করি দেশের মানুষের ভবিষ্যৎটা আরও সুন্দরভাবে গড়ে তুলে দিয়ে যাব। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
দলীয় নেতাদের তিনি বলেন, ‘এটাই মনে রাখবেন, একটা দল করি শুধু নেতা হওয়া না, মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম, কী দিতে পারলাম, কী দিয়ে গেলাম, এটাই রাজনৈতিক মানুষের জীবনের বড় কথা। এই কথাটা মাথায় রাখতে পারলে দেশের মানুষের জন্য অনেক কিছুই করা যেতে পারে।’
সংগঠনকে শক্তিশালী করার তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আর যেন যুদ্ধাপরাধী, খুনিরা বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, এই ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে।’
১৯৭৫-পরবর্তী যুদ্ধাপরাধীরা মন্ত্রী-এমপি-উপদেষ্টা হয়েছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ যারা করছেন তারাই অপরাধী হয়ে গেল। যারা বিরোধিতা করেছিল, গণহত্যা করেছিল, তারাই ক্ষমতায়। ওই অবস্থায় দেশে ফিরেছিলাম। আমার তো কিছুই ছিল না। একটা বিশ্বাস ছিল, দেশের জনগণ ও আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মী। এরপর লড়াই-সংগ্রাম করে এইটুকু বলতে পারি, পঞ্চমবারের মতো আওয়ামী লীগ ক্ষমতা এসেছে।’
আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের যদি রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা না থাকে, দেশপ্রেম না থাকে, সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় না থাকে, তাহলে সেটা এগোতে পারে না। পঁচাত্তরে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা নিজেদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা করেছিল, দেশের কোনো উন্নতি করতে পারেনি। আজকে আমরা বলতে পারি, দেশটা বদলে যাওয়া, বদলাতে পেরেছি। সামনে আরও বদলাতে হবে। কারণ আমার বাবার একটাই স্বপ্ন ছিল, দেশটাকে গড়ার। আমাদের পরিকল্পনা সেটাই আছে।’
আওয়ামী লীগের সংগ্রামের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, কারফিউ, প্রতি রাতে মার্শাল ল, দেশের মানুষের কোনো আশা নেই, শুধু হতাশা। এই হতাশ জাতিকে টেনে তোলা যায় না। তাদের মাঝে আশার আলো জাগাতে হয়, ভবিষ্যৎ দেখাতে হয়, উন্নত জীবনের চিত্র তুলে ধরতে হয়। তবেই মানুষকে নিয়ে কাজ করা যায়। আমরা সেটাই করার চেষ্টা করছি।’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের আগে বিদেশে যাওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আশা করেছিলাম আমরা খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসব। কিন্তু সেই ফিরে আসা আর হয়নি।’
আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি জানতাম না যে, আমাকে এত বড় একটা দায়িত্ব দেওয়া হবে। আমি কখনো এটা ভাবতে পারিনি।’
মন্তব্য করুন
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাত আলী বলেছেন, হরতালসহ যেকোনো নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগসহ কোনো গোষ্ঠী যদি হরতাল বা অন্যান্য কর্মসূচির মাধ্যমে নাশকতার চেষ্টা করে, তাহলে তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) একুশে বইমেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
তিনি আরও বলেন, বইমেলার নিরাপত্তায় ডিএমপির পাশাপাশি র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও নিয়োজিত থাকবে। এবার বইমেলা চলাকালীন টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত সড়ক সারাদিন বন্ধ থাকবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বইমেলা চলাকালীন এক মাস ঢাবি এলাকায় কোনো ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারবে না।
ডিএমপি কমিশনার আরও উল্লেখ করেন, বইমেলায় উস্কানিমূলক কোনো বই যেন না থাকে, সে বিষয়ে বাংলা একাডেমিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বইমেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে নিশ্ছিদ্র করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বইমেলায় খাবারের দোকানগুলোতে যাতে অতিরিক্ত মূল্য ধার্য করা না হয়, সে বিষয়ে পুলিশকে নজরদারি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজধানীতে চলমান বিভিন্ন আন্দোলন প্রসঙ্গে সাজ্জাত আলী বলেন, ছোট ছোট আন্দোলনের নামে রাস্তা বন্ধ করা উচিত নয়। তিনি আরও বলেন, পুলিশের উদ্দেশ্য কাউকে আঘাত করা নয়, বরং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা।
মন্তব্য করুন
৮ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ হিসেবে পালনের সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহল এবং বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই এ প্রস্তাবের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সর্বস্তরের এমন জোরালো আপত্তির মুখে অবশেষে সরকার সেই বিতর্কিত সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে।
রোববার (২৯ জুন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, ৮ আগস্ট কোনো দিবস পালিত হচ্ছে না, ৫ আগস্ট পালিত হবে গণঅভ্যুত্থান দিবস।
নিজের ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া পোস্টে তিনি জানায়, রোববার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১৬ জুলাই ‘জুলাই শহীদ দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
এর আগে গত বুধবার (২৫ জুন) ৮ আগস্ট নতুন বাংলাদেশ দিবস ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদ দিবস ঘোষণা করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে আলাদা পরিপত্র জারি করা হয়েছিল।
পরিপত্রে দিবসটিকে প্রতি বছর যথাযথ মর্যাদায় প্রতিপালন করতে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাকে অনুরোধ করা হয়েছিল। দিবসটি পালনের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালন সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পরিপত্রের ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছিল।তবে আজ সেটি বাতিল হয়ে গেল।
মন্তব্য করুন