নির্বাচনকে বিলম্বিত করতেই পিআর পদ্ধতির নামে আন্দোলন চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘চাপিয়ে দেওয়া কোনো কিছু এই দেশের মানুষ গ্রহণ করে না।’
রবিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট আয়োজিত এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের প্রধান সমন্বয়ক ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পিআর পদ্ধতি সংস্কার কমিশন থেকে নয়, বরং কয়েকটি রাজনৈতিক দলের দাবি থেকে এসেছে। এই পিআর পদ্ধতি জনগণ চায় না, জনগণ চায় সরাসরি ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে।’
নির্বাচন ঘিরে সামনে কঠিন পরীক্ষা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের কোনো কিছু বিশ্বাস করার আগে সত্য-মিথ্যা যাচাই করার আহ্বান জানান তিনি। সংস্কার কার্যক্রমের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি সব সময় সংস্কারের পক্ষে ছিল।
এখনো কেউ কেউ প্রচার করছে যে আমরা সংস্কার চাই না—এটা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর। বিএনপি নিজেই সংস্কার আন্দোলনের ফসল।’
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, কিছু দল বিএনপিকে নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ‘আমরা চাই ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন হোক।
জনগণ এখনই নির্বাচন চায়। আমরা চেষ্টা করছি নতুন করে বাংলাদেশকে জাগিয়ে তোলার, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এই সুযোগটি যেন হারিয়ে না যায়।’
মন্তব্য করুন
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের আদালতে মুখোমুখি করার উদ্যোগ নিতে হবে৷ এই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে।
শুক্রবার (২ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এবি পার্টির উদ্যোগে দলটির পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানায়।
তারেক রহমান জানান, দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল সংস্কারের পক্ষে৷ তারপরেও সংস্কার নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার কেনো এতো সময়ক্ষেপণ করছেন? এ নিয়ে জনগণের মনে ধীরে ধীরে প্রশ্ন বেড়েই চলেছে৷ রাজনৈতিক দলগুলোকে অবজ্ঞা এবং জনগণের রায়কে অবহেলা করে রাজনীতিকরণকে উৎসাহিত করা হলে সেটি শেষ পর্যন্ত গণতন্ত্রকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেবে৷ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই, সুনির্দিষ্টভাবে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের আদালতে মুখোমুখি করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে৷ এই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জানায়, রাষ্ট্র ও রাজনীতি মেরামতের জন্য সংস্কারের কর্মযজ্ঞ চলছে। চলমান সংস্কার যদি রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিকে অবজ্ঞা করতে হয়; তাহলে সংস্কারের তাৎপর্যটা কি? এটি আজ বহু মানুষের প্রশ্ন৷
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তারেক রহমান জানান, আমাদের দলীয় আর্দশ ভিন্ন হলেও আমাদের উদ্দেশ্যে যেহেতু দেশের স্বার্থ রক্ষা এবং জনগণের কল্যাণ সাধন। লাখো প্রাণের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের স্বাধীন বাংলাদেশ, ‘৭৫-এর ৭ নভেম্বরে আধিপত্যবিরোধী তাবেদারমুক্ত বাংলাদেশ, ‘৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী বাংলাদেশ এবং ২০২৪-এর ফ্যাসিবাদবিরোধী বাংলাদেশ৷ দেশের ইতিহাসে এমন প্রতিটি বাঁকে মানুষ কেনো অকাতরে জীবন দিয়েছিলেন? কি ছিল এই শহীদদের স্বপ্ন? শহীদদের স্বপ্ন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কেবল তাদের আত্মত্যাদের প্রতিদান দেওয়ার চেষ্টা আমরা করতে পারি।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘৭১ আর ২৪-এর রাজনৈতিক বার্তাটি হলো- দিল্লির তাবেদার হওয়ার জন্য বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে পিন্ডি ত্যাগ করেনি। ১৯৭৫ সালে ৭ নভেম্বরে দেশের সিপাহী জনতা এই বার্তাটি দিয়েছিলেন।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর সভাপতিত্বে সভায় জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. দিলারী চৌধুরী, বাংলাদেশ খেলাফত মসজিসের আমীর মাওলানা মামুনুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ সাতজনকে আসামি করে নিজের গুমের অভিযোগ জমা দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
আজ মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালে এ অভিযোগ জমা দেন তিনি।
অভিযোগ জমা দিয়ে সালাহউদ্দিন জানান, মামলা করার জন্য আমার আরো আগে আসার কথা ছিল। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের ব্যস্ততা এবং তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে দেরি হয়েছে। এ কারণে যে কাজটা আমি বেশ কয়েক মাস আগে করতে পারতাম, সেটা দেরি হয়ে গেল।
তিনি আরো বলেন, আমি প্রাথমিকবাবে সাতজনকে আসামি করেছি। এর মধ্যে শেখ হাসিনা এবং তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ র্যাব পুলিশের কর্মকর্তারা রয়েছেন। তবে আরো অনেক আসামি রয়েছে যারা বিভিন্ন তদন্তের মাধ্যমে বের হবে যেগুলো আমার পক্ষে এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
এ সময় শেখ হাসিনাসহ গুম-খুনে জড়িত সকলের বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানায় বিএনপির এই নেতা।
এর আগে, গত ১৫ অক্টোবর গুমসংক্রান্ত কমিশনেও নিজের গুমের অভিযোগ জমা দেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, গুমের ঘটনায় এখন পর্যন্ত যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের সাজা এবং যারা পালিয়ে গেছেন তাদের কমিশনকে খুঁজে বের করতে হবে। এই সরকারের দায়িত্ব সবাইকে আইনের আওতায় আনা।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে সালাহউদ্দিন নিখোঁজ হন। প্রায় দুই মাস পর ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তার সন্ধান পায়।
এরপর সালাহউদ্দিনকে আটক করা হয়। পরে বৈধ নথিপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে দেশটির ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা করে মেঘালয় পুলিশ। সেই মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে ২০১৮ সালে সালাহউদ্দিন খালাস পান।
ভারত সরকার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তাকে সেখানেই থাকতে হয়।
মন্তব্য করুন
কিছু করতে হলে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও চিন্তার দরকার মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ৫২ বছরে আমরা ক্ষমতার পরিবর্তনের বিধানই আমরা পরিবর্তন করতে পারিনি। হঠাৎ করে এসে আজ সব পরিবর্তন করে ফেলবো, এমনটি মনে করি না। কিছু করতে হলে সুনির্দিষ্টি লক্ষ্য ও চিন্তা দরকার। বিচ্ছিন্নভাবে জোড়াতালি দিয়ে কিছু করা যায় না।
আজ শনিবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল আরো বলেন, আমাদের কাঠামোটা সংস্কার করা দরকার। কাঠামোটা বদলাতে হবে। গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। আমরা লাগাব বেগুন গাছ, আসা করব কমলালেবু তা তো হবে না। আমাদের সিস্টেমটা পরিবর্তন করতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের সংকটের অন্যতম কারণ হলো দুর্নীতি। প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি।
ধীরে ধীরে এটা আরও খারাপের দিকে গেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সংসদ সদস্যদের আইন প্রণয়ন করার কথা। সেই জায়গায় তিনি কোথায় কি ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে তা নিয়ে পড়ে থাকেন।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে এবার নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের সমাজে যে বৈষম্য, শোসন—এগুলো ঠিক করার একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে।
রাজনৈতিক দলের আন্তরিকতা প্রয়োজন। এই সুযোগটা ব্যবহার করে আমরা আমাদের যেন লক্ষ্যের কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারি।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’-এ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিএনপির ৩ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
আমন্ত্রিত অন্য দুই নেতা হলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আগামী ৫-৬ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ অনুষ্ঠিত হবে।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের এক নেতার সঙ্গে কয়েকজন কূটনীতিকের সাক্ষাৎ নিয়ে বিএনপি চিন্তা করে না বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় আমীর খসরু বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এক নেতার সঙ্গে কয়েকজন কূটনীতিকের সাক্ষাৎ নিয়ে বিএনপির কোনো মাথা ব্যথা নেই। কে কার সঙ্গে বৈঠক করল তা মুখ্য নয়, দেশের জনগণ কি চায়, সেটিই মুখ্য বিষয়।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, বাংলাদেশে দ্রুত গণতান্ত্রিক সরকার দেখতে চায় জার্মানিসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। দেশের মানুষও এখন ভোটের অপেক্ষায় আছে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, রাজনীতিতে প্রতিটি দলের স্বাধীনভাবে কাজ করার অধিকার আছে, বাধা বিপত্তির রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, সকলের অধিকারকে সম্মান দেখাতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে নির্বাচনের পাশাপাশি ভবিষ্যতে জার্মানির সাথে প্রযুক্তিগত নানা বিষয়ে যৌথভাবে কাজ করার বিষয়েও আলোচনা হয়।
মন্তব্য করুন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, অতীতে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা বারবার অপব্যবহারের শিকার হয়েছে, যার মাধ্যমে বরং হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা উৎসাহ পেয়েছে।
তিনি বলেন, 'বিএনপি নীতিগতভাবে একমত যে ক্ষমা প্রদর্শনের বিষয়টি আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিত এবং তা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।'
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অনুমতির বিষয়টি আলোচনায় আসাকে তিনি ‘সন্তোষজনক অগ্রগতি’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ বিভাগীয় পর্যায়ে স্থাপনের বিষয়ে বিএনপি সম্মত বলে জানান সালাহউদ্দিন আহমেদ। তবে তিনি বলেন, 'এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট এবং প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এটি বাস্তবায়ন করা গেলে বিচার ব্যবস্থাকে জনগণের আরও কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'জনগণের কাছে আমাদের দায় অনেক বেশি। এখানে মতামত দলীয় নয়, বরং জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্যের ভিত্তিতে আলোচনা চলছে। কে কতটা সহযোগিতা করছে, তা জনগণ বিবেচনা করবে।'
সালাহউদ্দিন আহমেদ দ্রুত জাতীয় সনদ প্রণয়নের পক্ষে বিএনপির অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।
মন্তব্য করুন
অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোনো মহল যেন রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের এজেন্ডাকে সরকারের কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
শনিবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা ক্ষমতায় থাকাকালীন রাজনৈতিক দল গঠন প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত হওয়ায় জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সংস্কার আগে নাকি নির্বাচন আগে—এ ধরনের অপ্রয়োজনীয় বিতর্কের কোনো স্থান নেই।
তিনি বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, তাই সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া একই সঙ্গে চলতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমতের ভিত্তিতে একটি সংস্কার সনদ তৈরি করা সম্ভব, যা নির্বাচিত সরকার পরবর্তীতে বাস্তবায়ন করবে। এ অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব হলো একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে দ্রুত নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করা এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচিত সরকারই জনগণের প্রত্যাশিত সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে। কারণ নির্বাচিত সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ এবং ন্যায়বিচার ও সুশাসন নিশ্চিত করার অঙ্গীকারাবদ্ধ। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা রাজনৈতিক দল গঠন প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকায় জনমনে সংশয় তৈরি হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় প্রশাসনিক যন্ত্রকে ব্যবহার করার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে, যা দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য মোটেও ইতিবাচক নয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের স্প্রেডশিটে যে অপশন বা পছন্দগুলো দেওয়া হয়েছে, তাতে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে, যেসব বিষয় প্রস্তাব আকারে আসার কথা ছিল, সেগুলো প্রস্তাব না রেখে শুধু ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ উত্তর দিতে বলা হয়েছে। যেমন, প্রস্তাবগুলো গণপরিষদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন চাই কি না—এ প্রশ্নের উত্তর ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলতে বলা হয়েছে। কিন্তু প্রথমে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার যে, গণপরিষদের প্রস্তাবে আমরা একমত কি না। একইভাবে ‘গণভোট’, ‘গণপরিষদ’ এবং আইন সভা হিসেবে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন চাই কি না—এ প্রশ্নের উত্তরও ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলতে বলা হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, সংবিধানের ‘প্রস্তাবনা’র মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংস্কার কমিশনের সুপারিশে থাকলেও স্প্রেডশিটে তা উল্লেখ করা হয়নি। স্প্রেডশিটে প্রায় ৭০টি প্রস্তাব উল্লেখ করা হলেও মূল প্রতিবেদনে সুপারিশের সংখ্যা প্রায় ১২৩টি।
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের মূল প্রতিবেদনে প্রায় ১৫০টি সুপারিশ তুলে ধরা হলেও স্প্রেডশিটে মাত্র ২৭টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, যার অধিকাংশই সংবিধান সংস্কারের সাথে সংশ্লিষ্ট। তিনি মনে করেন, স্প্রেডশিটের পাশাপাশি মূল সুপারিশমালার উপর মতামত সংযুক্ত করলে বিভ্রান্তি এড়ানো সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের স্প্রেডশিটের অবস্থা এবং কমিশন সদস্যদের বিভিন্ন সময়ের বক্তব্য ও কিছু রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের মধ্যে মিল পাওয়া যায়। এতে জনমনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, এসব বিষয় যেন একটি পূর্বনির্ধারিত কর্মপরিকল্পনার অংশ, যা গণতন্ত্রের স্বার্থের পক্ষে কিনা তা বলা কঠিন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমান ও সালেহ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
মন্তব্য করুন
বিএনপি বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে এবং সংবিধান মোতাবেক বিচার বিভাগের সকল কার্যক্রম যেন আইনসম্মত ও সাংবিধানিক হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির চলমান সংলাপের তৃতীয় দিনের শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাউদ্দিন আহমেদ জানান, আজকের বৈঠকে মূলত বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিষয়ে আলোচনা হবে।
কমিশনের সহসভাপতি আলী রিয়াজ জানায়, বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় অনেক বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। কিছু বিষয়ে ভিন্নতা থাকলেও সেসব সংস্কারের বিষয়ে বিএনপি অত্যন্ত আন্তরিকভাবে আলোচনা করছে। তিনি আরও আশা প্রকাশ করেন, আজকের বৈঠকের মধ্য দিয়েই বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার সমাপ্তি ঘটতে পারে।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। এর জন্য নির্বাচন বন্ধ হয়ে থাকতে পারে না। দিনের পর দিন আমরা অনির্বাচিত সরকারের হাতে দেশ চালাতে দিতে পারি না।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাগপা আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সংস্কার নিয়ে কমিশন কাজ করছে ভালো কথা। সংস্কার নতুন কোন ধারণা নয়। সংস্কার নিয়ে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু দেশে যে অস্থিরতা চলছে তা অনেকটা কমে যাবে যদি নির্বাচিত সরকার থাকে।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে বিএনপি। আর জুলাই বিপ্লবে স্বতস্ফুর্ত অংশ নিয়েছে দলটি। আওয়ামী লীগ যতোবারই ক্ষমতায় এসেছে ততোবারই ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। গুম খুন, বিনা বিচারে হত্যা এটা আওয়ামী লীগের আমলেই হয়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, নিত্যপণ্যসহ সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ট। কিন্তু সরকার এ নিয়ে কিছু করছে না। জনগণের সমস্যা খুঁজে বের না করে অনেকে রাজনীতিবিদদের দোষ খোঁজে বেড়াচ্ছে। বর্তমান সরকারের প্রতি বিএনপির সমর্থন রয়েছে। বর্তমান সরকার সফল হোক, এটাই চায় বিএনপি।
মন্তব্য করুন
কোনো বিশেষ দলকে ক্ষমতায় বসানোর উদ্দেশ্যে নির্বাচন নিয়ে কালক্ষেপণ করলে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য তা ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বনানীতে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক র্যালিতে অংশ নিয়ে তিনি এ হুঁশিয়ারি করেন।
পার্থ বলেন, 'নির্বাচন নিয়ে কালক্ষেপণের কোনও সুযোগ নেই। কোনো দলকে ক্ষমতায় আনার জন্য যদি বর্তমান সরকার পরিকল্পিত বিলম্ব করে, তাহলে ১৭ মিনিটেই সরকারের পতন ঘটবে।'
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতা অর্জিত হলেও দেশের মানুষ এখনো মুক্তির স্বাদ পায়নি। তার মতে, ভালো মানুষ এবং সৎ নেতৃত্ব ছাড়া রাজনীতিতে কোনও সংস্কার সম্ভব নয়।
এ সময় তরুণ প্রজন্ম এবং শিক্ষিত মানুষদের রাজনীতিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে পার্থ বলেন, '১৭ বছর পর এবার স্বাধীনভাবে বিজয় দিবস পালনের সুযোগ এসেছে। এ সুযোগ আর নষ্ট হতে দেয়া যাবে না।'
পরে তার নেতৃত্বে একটি বিজয় র্যালি বের হয়। র্যালিটি বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বনানী মাঠে গিয়ে গুলশান ডিসিসি মার্কেটে শেষ হয়।
সূত্র: ইত্তেফাক
মন্তব্য করুন