ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাত আলী বলেছেন, হরতালসহ যেকোনো নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগসহ কোনো গোষ্ঠী যদি হরতাল বা অন্যান্য কর্মসূচির মাধ্যমে নাশকতার চেষ্টা করে, তাহলে তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) একুশে বইমেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
তিনি আরও বলেন, বইমেলার নিরাপত্তায় ডিএমপির পাশাপাশি র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও নিয়োজিত থাকবে। এবার বইমেলা চলাকালীন টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত সড়ক সারাদিন বন্ধ থাকবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বইমেলা চলাকালীন এক মাস ঢাবি এলাকায় কোনো ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারবে না।
ডিএমপি কমিশনার আরও উল্লেখ করেন, বইমেলায় উস্কানিমূলক কোনো বই যেন না থাকে, সে বিষয়ে বাংলা একাডেমিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বইমেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে নিশ্ছিদ্র করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বইমেলায় খাবারের দোকানগুলোতে যাতে অতিরিক্ত মূল্য ধার্য করা না হয়, সে বিষয়ে পুলিশকে নজরদারি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজধানীতে চলমান বিভিন্ন আন্দোলন প্রসঙ্গে সাজ্জাত আলী বলেন, ছোট ছোট আন্দোলনের নামে রাস্তা বন্ধ করা উচিত নয়। তিনি আরও বলেন, পুলিশের উদ্দেশ্য কাউকে আঘাত করা নয়, বরং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা।
মন্তব্য করুন
আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগ পর্যন্ত সারা দেশে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, আমাদের অনেক অস্ত্র খোয়া গেছে। এগুলো উদ্ধার করতেই এই অভিযান চলছে এবং নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে।
আজ সোমবার দুপুরে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
৫ আগস্ট ঘিরে মানুষের মধ্যে কোনো আতঙ্ক রয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ৩ আগস্ট নিয়েও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছিল। আল্লাহর রহমতে কোনো সমস্যা হয়নি। বর্তমান সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হয়েছে এবং আগের তুলনায় অনেক ভালো অবস্থানে এসেছে।
তিনি আরও জানান, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত হলেও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি।
তবে তা উন্নত হয়েছে কি না, সেটা জনগণই ভালো বলতে পারবেন।
মন্তব্য করুন
মব সৃষ্টিকারীরা নির্বাচনের সময় সুবিধা করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্র্যাসি এন জ্যাকবসনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
সিইসি জানান, জাতীয় সংসদে ৩০০ আসনের নির্বাচন একসঙ্গে হবে। তখন ওই ৩০০ জায়গাতেই ‘মব’ ভাগ হয়ে যাবে। যারা মব সৃষ্টি করেন, তারা নিজ নিজ এলাকায় চলে যাবে। তখন একসঙ্গে এত লোক একত্রে আর পাওয়া যাবে না। যারা মব সৃষ্টি করতে চায় বা মব সৃষ্টি করবে, তারা নির্বাচনের সময় সুবিধা করতে পারবে না।
নাসির উদ্দীন জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি মূলত জানতে চেয়েছেন—নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি কোন পর্যায়ে রয়েছে। যেহেতু ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে।
জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা ৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে নির্বাচনি চিঠি পাওয়ার পর থেকেই প্রস্তুতি জোরদার করেছি। যদিও তার আগেই বড় বড় কাজগুলো শুরু করে দেওয়া হয়েছিল, যেন প্রস্তুতির ঘাটতি না থাকে। নির্বাচন কমিশনকে যাতে কোনো ব্লেম (দোষ) দিতে না পারে।’
মন্তব্য করুন
দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব সৃষ্টিকারী ও সাম্প্রদায়িক উসকানির বিরুদ্ধে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রোববার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানেন এ বছর সারাদেশে পূজা মণ্ডপের সংখ্যা ৩৩ হাজার ৩৫৫টি। এটা গতবারের চেয়ে প্রায় এক হাজার বেশি। পূজার নিরাপত্তার স্বার্থে ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। তারা দুই অক্টোবর পর্যন্ত মোট নয় দিন এ দায়িত্ব পালন করবেন।
তিনি বলেন, দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় সারাদেশে প্রায় এক লাখ সেনা সদস্য নিয়োজিত থাকবে। সারাদেশে প্রায় ২৪টি বেস ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় সারাদেশে বিজিবির ৪৩০ প্লাটুন কাজ করছে। ২ লক্ষ ৩ হাজার ৫৬৪ জন আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি পূজা মণ্ডপে কমিটির সাতজন সদস্য পালাক্রমে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া নিরাপত্তায় স্বেচ্ছাসেবীদের এনটিএমসির অ্যাপের মাধ্যমে সংযুক্ত করা হয়েছে। দুর্গাপূজা উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রায় ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পূজায় সারাদেশে ৭০ হাজারের মতো পুলিশ সদস্য কাজ করছেন। পুলিশ এবং আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গতবারের ন্যায় দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ পূজা মণ্ডপে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব সৃষ্টিকারী ও সাম্প্রদায়িক উসকানির বিরুদ্ধে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনেক জায়গাতেই গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সেদিন কালিমন্দির পরিদর্শন করতে গিয়ে কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, তারাও এরকম গুজবের খবর পেয়েছেন।
পূজা উপলক্ষ্যে কোনো ধরনের নাশকতার শঙ্কা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, কোনো ধরনের ঝুঁকি নেই। এবার যেহেতু পূজা মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে, সেহেতু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংখ্যা বেড়েছে। এবার পূজা অবশ্যই ভালো হবে। আমি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জের পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেছি, কোথাও কারও মধ্যে কোনো শঙ্কা দেখিনি। কিছুসংখ্যক ফ্যাসিস্টের দোসর আছে, তারাই এসব প্রচার করে।
মন্তব্য করুন
ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) শনিবার সন্ধ্যায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাকিমপুর সীমান্ত চৌকির কাছ থেকে বাংলাদেশের এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাকে আটক করেছে। তিনি অবৈধভাবে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ বিএসএফের।
বিএসএফ জানায়, সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে নিয়মিত টহলের সময় ওই কর্মকর্তাকে সন্দেহজনকভাবে সীমান্ত অতিক্রম করতে দেখে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া কাগজপত্রে তিনি বাংলাদেশ পুলিশের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তার নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ভারতীয় কর্মকর্তারা জানায়, এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত বিরল। এর আগে কোনো দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা ভারতীয় ভূখণ্ডে এভাবে প্রবেশ করতে গিয়ে ধরা পড়েননি।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বিশ্বের দীর্ঘতম আন্তর্জাতিক সীমান্তগুলোর একটি, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গেই রয়েছে প্রায় ২ হাজার ২১৭ কিলোমিটার। নদীঘেরা ভৌগোলিক অবস্থান, ঘনবসতি এবং শহরাঞ্চলের নিকটবর্তী হওয়ায় উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত এলাকায় অনুপ্রবেশ, চোরাচালান ও মানবপাচারের ঝুঁকি সবসময়ই বেশি থাকে।
বিএসএফ দীর্ঘদিন ধরে এই সীমান্ত এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশ, মাদক ও গরু পাচার, জাল মুদ্রা চোরাচালান রোধে কাজ করছে। এ জন্য সীমান্তজুড়ে নজরদারি বাড়ানো, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বেড়া নির্মাণের মতো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আটক কর্মকর্তা এককভাবে প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন, নাকি কোনো চক্রের হয়ে কাজ করছিলেন—তা এখনো স্পষ্ট নয়। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এক কর্মকর্তা জানান, এ ঘটনা সীমান্তে সর্বক্ষণ সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তা আরও একবার সামনে এনেছে। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানো হয়েছে।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
মন্তব্য করুন
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নূরুল হুদাকে আটকের সময় যেভাবে মব জাস্টিস করা হয়েছে তা কাম্য নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে এ ধরনের ঘটনায় বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে তা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের মৌচাকে হর্টিকালচার সেন্টার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, গতকাল সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতারের যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা সঠিক নয়। তাকে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। উত্তরা থেকে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদা আটক হয়েছেন। তাকে আটকের সময় যেভাবে মব জাস্টিস করা হয়েছে তা কাম্য নয়।
কৃষি জমি দখল রোধে কৃষি জমি সুরক্ষা আইন করা হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, বিদেশি ফলের পাশাপাশি দেশীয় ফলের উৎপাদন বাড়াতে হবে যেন এসব ফল হারিয়ে না যায়।
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চোখের জরুরি চিকিৎসার জন্য স্ত্রী রাহাত আরা বেগমকে নিয়ে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক গেছেন। সোমবার (১২ মে) দিবাগত রাত ২টা ৪৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তারা ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ব্যাংককের উদ্দেশে রওনা দেন।
বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ‘সোমবার মির্জা ফখরুল ইসলামের চোখে সমস্যা দেখা দিলে তাকে দ্রুত গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানান, তার চোখের রেটিনায় জরুরি অস্ত্রোপচার প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসকদের পরামর্শে ব্যাংককের রুটনিন আই হসপিটালে যোগাযোগ করে দ্রুত অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া হয়েছে। সেখানে তার চিকিৎসা চলবে।’
মির্জা ফখরুল ইসলামের একান্ত সহকারী ইউনুস আলী জানিয়েছেন, বিএনপি মহাসচিবের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে দেশবাসী ও দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে দোয়া চেয়েছেন তার পরিবার।
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন। সোমবার রাত কিংবা মঙ্গলবার সকালের মধ্যে এই বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় পৌঁছাবে বলে জানা গেছে।
রোববার (৫ জানুয়ারি) রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে অবগত হয়ে কাতারের আমির রাজকীয় বহরের বিশেষ এই বিমান পাঠিয়েছেন। এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সর্বাধুনিক চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে।
লন্ডন যাত্রার আগে রোববার রাত ৯টার দিকে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’-তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন খালেদা জিয়া।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, “বেগম খালেদা জিয়া তার চিকিৎসার জন্য আগামী মঙ্গলবার রাতে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। সেই কারণেই আমরা জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম।”
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ ও কিডনি সমস্যাসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন। লন্ডনে পৌঁছানোর পর তিনি কিছুদিন তার ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় থাকবেন।
পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের মাল্টি ডিসিপ্লিনারি কেয়ার ইউনিটে যাবেন। সেখানেই তার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
ইতিমধ্যে খালেদা জিয়ার যাবতীয় চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র এবং মেডিকেল রিপোর্ট যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গত বছরের ২৬ অক্টোবর, জন হপকিন্স হাসপাতালের তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায় এসে এভারকেয়ার হাসপাতালে বেগম খালেদা জিয়ার লিভার এবং পেটের ফ্লুইড জমা ও রক্তক্ষরণ রোধে বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি ট্রান্সজুগুলার ইনট্রাহেপাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট (TIPSS) সম্পন্ন করেছিলেন।
এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলই যুক্তরাষ্ট্রে তার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
মন্তব্য করুন
কারাগার থেকে পালানো বন্দীদের মধ্যে এখনো ৭০০ আসামি পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন। তিনি আরো জানান, লুট হওয়া ২৯টি অস্ত্রও এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
কারা মহাপরিদর্শক জানান, ‘পালানোদের মধ্যে ৯ জন জঙ্গি, ৬৯ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত রয়েছেন।
বাকিরা বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। বর্তমানে কারাগারে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দী আছেন ১৬৩ জন। আরো ২৮ জন ডিভিশনের আবেদন করেছেন, তবে তার অনুমোদন পাননি।’
তিনি আরো জানান, কারাগারকেন্দ্রিক সংশোধন কার্যক্রমে গুরুত্ব দিতে বাংলাদেশ জেলের নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নতুন নাম প্রস্তাব করা হয়েছে ‘কারেকশন সার্ভিসেস বাংলাদে’। এ জন্য ‘কারেকশন সার্ভিস অ্যাক্ট-২০২৫’ খসড়া চূড়ান্ত করে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি বন্দীদের স্থান সংকুলানের জন্য নতুন করে দুটি কেন্দ্রীয় ও চারটি জেলা কারাগার চালু করা হয়েছে। এছাড়া সমন্বয় বাড়াতে ঢাকা বিভাগকে ভেঙে দুটি বিভাগ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
সীমান্ত পুরোপুরি নিরাপদ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বুধবার (২৩ এপ্রিল) চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বর্তমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের উপায় নিয়ে আজ বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। শুধু আইন-শৃঙ্খলা নয়, সকল গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে এখানে পর্যালোচনা করা হয়েছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া পাহাড়ের মাটি কেটে নেওয়া, অবৈধ পাহাড় ধ্বংসসহ পরিবেশগত নানা সমস্যা নিয়েও আমরা কথা বলেছি।’
মিয়ানমার সীমান্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আরাকান সীমান্ত একটি জটিল অঞ্চল। আমরা মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখলেও বাস্তবে সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ আরাকান আর্মির হাতে। এখানে বাণিজ্যিক লেনদেনের ক্ষেত্রে দ্বৈত করের সমস্যা রয়েছে—একদিকে মিয়ানমার সরকার, অন্যদিকে আরাকান আর্মি উভয়ই শুল্ক আদায় করে। তবে আমরা এই সমস্যা সমাধানে কাজ করছি। সর্বোপরি, আমাদের সীমান্ত সম্পূর্ণ সুরক্ষিত।’
সাম্প্রতিক সময়ে আরাকান সংক্রান্ত ভাইরাল ভিডিও ও টিকটক কনটেন্ট সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আরাকান আর্মির সঙ্গে দীর্ঘদিনের সংঘাতের প্রেক্ষাপটে কিছু সামাজিক জটিলতা তৈরি হয়েছে। তাদের কিছু সদস্য বাংলাদেশে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে—এটা স্বীকার করতেই হবে। তবে ভাইরাল ভিডিওগুলোর সবই সত্য নয়, আবার সবটা মিথ্যও বলা যাবে না। এখানে সতর্কতার সঙ্গে বিচার করা জরুরি।’
পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি—পাহাড়ের বর্তমান অবস্থা আগের তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিশীল। আমি এখানে তিন দফায় দায়িত্ব পালন করেছি। একসময় ল্যান্ডমাইনের বিস্ফোরণে গণহারে প্রাণহানি হতো, যা মিডিয়ায়ও আসত না। এখন পর্যটকরা নির্বিঘ্নে সাজেক পর্যন্ত ভ্রমণ করছেন। ছোটখাটো অপরাধ সমতলেও ঘটে, শুধু পাহাড়কে দোষারোপ করা যায় না।’
যৌথ বাহিনীর তৎপরতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় যৌথ বাহিনীর অভিযান কোনোভাবেই কমেনি। বরং গণমাধ্যম ও জনসাধারণের সহযোগিতায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সত্য ঘটনা প্রকাশে আপনাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশনের সুযোগ নিয়ে প্রতিবেশী দেশের কিছু মহল বিভ্রান্তি ছড়ায়। বাংলাদেশের সাংবাদিকরা সর্বদা সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন—এ ধারা বজায় রাখার অনুরোধ রইল।’
ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের সংঘাত প্রসঙ্গে তার পরামর্শ, ‘এরা আমাদেরই তরুণ ভাই। তাদের মধ্যে সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দিতে হবে।’
চট্টগ্রামের রাউজানে সম্প্রতি বেড়ে যাওয়া হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ফটিকছড়ি, রাউজান, পটিয়া ও সাতকানিয়া—এ অঞ্চলে পাহাড় ও সমতলের মিশ্র অবস্থান। সন্ত্রাসীরা অপরাধ করে পাহাড়ে আত্মগোপন করছে। আমরা স্থানীয় পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। কোনো অপরাধী প্রকাশ্যে থাকলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মন্তব্য করুন
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারও পক্ষে অন্যায় বা বেআইনিভাবে নির্দেশনা দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
নির্বাচনী কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি জানান, নির্বাচনে আমাদের নির্দেশনা হবে সম্পূর্ণ আইনের বিধি মোতাবেক। বেআইনি নির্দেশনা, কারও পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেবো না। সঠিক কাজটি, সঠিকভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেবো।
শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় মিলনায়তনে ‘নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০২৫’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
সিইসি বলেন, আমাদের ওপর আস্থা আছে বলেই প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলছেন- ঐতিহাসিক নির্বাচন করবো। আমরা অনুরাগ, বিরাগের বশবর্তী না হয়ে, আইন মেনে কাজ করবো।
কারাবন্দি ও সরকারি কর্মকর্তাদের ভোটে আনার (ভোটাধিকার প্রয়োগের) কথা ভাবছেন জানিয়ে সিইসি বলেন, এবারের নির্বাচন বিশেষ পরিস্থিতিতে হচ্ছে। তাই আমাদের বিশেষভাবে এটা মোকাবিলা করতে হবে। বিশেষভাবে এটাকে ফেইস করতে হবে। যারা বিদেশে আছেন তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করবো। যারা জেলখানায় আছেন, যারা সরকারি কর্মকর্তা তাদের ভোটে আনার কথা ভাবছি। এই কাজগুলো নতুন। আমরা একসঙ্গে অনেক কাজ নিয়ে ফেললাম।
নির্বাচনী কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা যে শপথ করেছি সেটা আপনাদের কাছে ছড়িয়ে দিলাম। আমরা আমাদের শপথ রক্ষা করতে পারবো যদি আপনারা সঠিকভাবে কাজ করেন। দায়িত্ব আপনাদের কাছে দিয়ে দিলাম। আমাদের মাসুদ সাহেব (নির্বাচন কমিশনার) শপথের কথা বলেছেন, এখানে কোরআনের আয়াত আলোচনা হয়েছে। আমি অত বিস্তারিত আর যাবো না। আমরা শপথ নিয়েছি পাঁচজন। শপথ নিয়েছি, কিসের শপথ? একটা সঠিক নির্বাচনের শপথ।
সিইসি আরও বলেন, আমি কিন্তু গত বছরের ২ মার্চ পহেলা রমজানে আপনাদের শপথ করিয়েছিলাম। আপনারা কিন্তু ওয়াদা করেছিলেন যে নিরপেক্ষভাবে কাজ করবেন এবং প্রফেশনালি কাজ করবেন, আইন মেনে কাজ করবেন। আমাদের ব্রিগেডিয়ার ফজল সাহেব (নির্বাচন কমিশনরা) বলেছেন যে আমরা কোনো রকমের কোনো অন্যায় ইন্সট্রাকশন এখান থেকে দেবো না। আমরা কিন্তু বেআইনি কোনো ইন্সট্রাকশন দেবো না। আমরা কাউকে ফেভার করার জন্য ইন্সট্রাকশন দেবো না। আমরা কারও পক্ষে কাজ করার জন্য ইন্সট্রাকশন দেবো না। আমাদের ইন্সট্রাকশন হবে সম্পূর্ণ আইনের বিধি মোতাবেক। আইন মোতাবেক, সঠিক কাজটি সঠিকভাবে করার নির্দেশনা আমরা দেবো। সঠিকভাবে আপনারা কাজ করবেন এটা নিশ্চিত করতে হবে। আপনারা কাজটা সঠিকভাবে করছেন এটা শুধু আপনাদের জন্য না, এটা দেশের জন্য করতে হবে।
নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য এ সময় সিইসি কর্মকর্তাদের হাত তুলে আল্লাহকে সাক্ষী রেখে শপথ করতে বলেন। কর্মকর্তারা হাত তুলে সে শপথ করেন।
এ এম এম নাসির উদ্দিন আরও বলেন, কাজ আদায় করা ডিফিকাল্ট- এখন এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছি। আমরা অনেক চ্যালেঞ্জ নিচ্ছি, যার কিছু অদৃশ্য। আমি পজিটিভ মানুষ, নেগেটিভ কিছু দেখতে চাই না।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিনা আহমেদ, আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ, নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ প্রমুখ।
মন্তব্য করুন