

রাজধানী ঢাকায় আরও তিনটি বাস ও একটি প্রাইভেটকারে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার দিনগত রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, উত্তরা ও বসুন্ধরা এলাকায় দুটি রাইদা পরিবহন ও একটি রাজধানী পরিবহনে আগুন দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ এসব তথ্য জানান।
তিনি জানায়, রাত ১২টা ৫৪ মিনিটে সংবাদ আসে যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগে পার্কিং অবস্থায় রাজধানী পরিবহন বাসে আগুন লাগার। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। তবে আগুনের কারণ জানা যায়নি।
রাত ৪টার দিকে উত্তরার সোনারগাঁও জনপদ রোডে পার্কিং অবস্থায় রাইদা পরিবহন বাসে আগুন লাগার খবর আসে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এছাড়া রাত ২টা ৭ মিনিটে যাত্রাবাড়ীর কাজলা টোল প্লাজায় রাইদা পরিবহনের বাসে আগুন লাগার খবর আসে। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বাসটিতে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা আরও জানায়, রাজধানীর বসুন্ধরা মেন গেট ১০০ ফিট সড়কে রাত ২টা ৩৫ মিনিটে একটি প্রাইভেটকারে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয়। পরে খবর পেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে শান্তা মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি চলন্ত বাসে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট।
তার আগে রাজধানীর মেরুল বাড্ডা ও শাহজাদপুর এলাকায় দুটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
মন্তব্য করুন


একজন সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন, এমন প্রস্তাবে সব দল একমত হয়েছে বলে জানান জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ।
রবিবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে চলমান দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৯তম দিনে এ কথা বলেন তিনি।
আলী রীয়াজ জানান, ‘আমরা একটা বিষয়ে একমত হয়েছিলাম, কিন্তু সেটা বলা হয়নি। সেটা হলো, প্রধানমন্ত্রী ১০ বছর মেয়াদে দায়িত্ব পালন করবেন। সনদে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছর উল্লেখ করব।’
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা কি একমত হয়েছি? এ বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ সাহেব একটি শর্ত দিয়েছিলেন, সেটা কি এখনো আছে?’
জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা একবার বলেছি তো বলেছি, ১০ বছরের বেশি কোনো ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল থাকবেন না। আমি বলেছিলাম সংবিধান ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের কমিটি থাকলে বিষয়টি মানব না। আমরা এ হাউসের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নিয়োগসংক্রান্ত বিধান সংবিধানে যুক্ত করব। এর বাইরের বিষয়ে আলোচনা হলে আমাদের শর্ত বহাল থাকবে। আশা করি, সেটা বিবেচনা করবেন। এখন ১০ বছরের বিষয়ে আপনারা ঘোষণা দিতে পারেন। বরং এটা আমাদের প্রস্তাব।’
‘স্বাধীন পুলিশ কমিশন’ গঠনের প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলো একমত জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘পুলিশ কমিশনের বিষয়ে আমরা একমত। গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে আমরা আলোচনা করব। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো আলাপ-আলোচনায় একটি স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনে একমত হয়েছে। যা পুলিশের জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করবে, জনবান্ধবতা নিশ্চিত করবে।’
মন্তব্য করুন


দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য কমে যাওয়া এবং বেকারত্ব বৃদ্ধির বিষয়ে মন্তব্য করে অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিভিন্ন খাতে অর্থনৈতিক সহায়তা ও প্রণোদনার মাধ্যমে এই পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারে সরকার কাজ করছে।
বুধবার (৫ মার্চ) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলোচনায় তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেশি থাকলেও তা গত বছরের তুলনায় বাড়েনি। তবে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেশি থাকায় কিছু মানুষের কষ্ট হচ্ছে এটা সত্য। সরকার দাম কমানোর চেষ্টা করছে।
কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য নানা ধরনের উদ্যোগ চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেকারত্বের হার কমানো গেলে অর্থনৈতিক অবস্থারও উন্নতি হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সাথে আলোচনা হয়েছে।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগের সরকারের সময় অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে হয়েছে তাদের নিজেদের কারণেই। সেসব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের চেষ্টা করা হবে। তবে, সবাইকে কাজ দেওয়া সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়।
মন্তব্য করুন


ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও তার বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীরের আয়কর নথি জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন। আজ সোমবার আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
দুদকের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম পৃথক আবেদনে আয়কর নথি জব্দের জন্য আবেদন করেন। দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন।
এর আগে ৮ জানুয়ারি আদালত বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জিশান মির্জা ও ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছিলেন।
এছাড়া, গত ১৫ ডিসেম্বর দুদক সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবার সদস্যদের বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের করেছিল।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বেনজীর আহমেদ ৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং ২ কোটি ৬২ লাখ টাকা সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। তার স্ত্রী জিশান মির্জা ৩১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন এবং ১৬ কোটি ১ লাখ টাকার তথ্য গোপন করেছেন। তাদের বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকার এবং মেজ মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীর ৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
মন্তব্য করুন


আওয়ামী লীগ আস্তে আস্তে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ মঙ্গলবার আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের দশম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরপরও দেখা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে তারা মিছিল-মিটিং করছে।এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে।
জবাবে উপদেষ্টা জানান, ‘গতকাল ছিল আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। তবে আমরা যেমনটি আশঙ্কা করেছিলাম, তেমন বড় জমায়েত তারা করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ আস্তে আস্তে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে।’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে নাগাদ হতে পারে- জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা মাঠপর্যায়ের প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছি। তবে নির্বাচন কমিশনই দিন-তারিখ ঠিক করবে। আমরা শুধু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার দায়িত্বে আছি।’
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কী আলোচনা হয়েছে- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন ভালো থাকে। কিভাবে আমাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখা যায় এবং ভালো থাকে- এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মোটামুটি সব বাহিনীর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। তারা আজকে নিশ্চিত করেছেন যে নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকবে।
মন্তব্য করুন


মিটফোর্ডে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ শনিবার সকালে ঢাকা জেলা পুলিশ লাইন ও রিজার্ভ ফোর্স কার্যালয় পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা জানায়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিচার প্রক্রিয়া ধীরগতির দায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর না। তবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করছে না।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা খুব অসহিষ্ণু হয়ে গেছি। এই অসহিষ্ণুতা আমাদের কমিয়ে আনতে হবে। সমাজের নীতি-নির্ধারক, অভিভাবক, শিক্ষক, চিকিৎসক সবার চেষ্টায় এই সহিংসতা কমিয়ে আনতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি, কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়। কোনো ঘটনা ঘটলে সেটা যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জানানো হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেটার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
অনেকে অভিযোগ করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো কঠোর হচ্ছে না, এমন অভিযোগের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর না হলে পাঁচজনকে কীভাবে গ্রেফতার করা হলো? গতকাল কাঠমান্ডুর বিমানের ফ্লাইটে ফেরত আসার ঘটনায় যে মহিলা টেলিফোন করেছিল, তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে যে পরামর্শ দিয়েছে তাকেও আইনের আওতায় আনা হয়েছে। অনেক সময় দু-এক জায়গায় হয়তো একটু দেরি হতে পারে। তবে এসব ঘটনায় আমরা সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশনে যাই।
মন্তব্য করুন


বিস্ফোরক মামলায় জামিন পেয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর পর মুক্তি পেয়েছেন ১৬৮ জন বিডিআর সদস্য। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ বিভিন্ন কারাগার থেকে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ৪১ জন, কাশিমপুর-১ কারাগার থেকে ২৬ জন, কাশিমপুর-২ কারাগার থেকে ৮৯ জন এবং কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার থেকে ১২ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল।
এর আগে গত ২১ জানুয়ারি ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া জামিনপ্রাপ্ত ১৭৮ আসামির নাম প্রকাশ করেন। তাদের মধ্য থেকে ১৬৮ জনের তালিকা হাতে পেয়েই মুক্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করে কারাকর্তৃপক্ষ।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে ঘটে যায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা। বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি পৃথক মামলা দায়ের হয়।
হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। সেই রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি ২৭৮ জন খালাস পান।
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। একই সঙ্গে ১৮৫ জনের যাবজ্জীবন সাজা এবং ২২৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া ২৮৩ জন আসামি খালাস পান।
বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ জন আসামির বিচার শুরু হয় ২০১০ সালে। কিন্তু মাঝপথে হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণে মনোযোগ দেওয়ার কারণে বিস্ফোরক মামলার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়।
এদিকে, হাইকোর্টের রায়ের আগে ৫৪ জন আসামির মৃত্যু ঘটে। হত্যা মামলায় দণ্ডিতদের মধ্যে ২২৬ জন আপিল করেছেন। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষ ৮৩ জন আসামির খালাস ও সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে।
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার পুনঃতদন্তের দাবি জানিয়ে শহিদ পরিবারের সদস্যরা গত ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যান। এর পরিপ্রেক্ষিতে, সরকার আল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে একটি কমিশন গঠন করে। তাদের ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ার পর ১৬৮ বিডিআর সদস্যের মুক্তি নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। এই ঘটনা পিলখানা বিদ্রোহের ক্ষত আবারও উন্মোচন করেছে।
মন্তব্য করুন


পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ঢাকার প্রতিটি ভবনে সেপটিক ট্যাংক বা এসটিপি (স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) স্থাপন বাধ্যতামূলক করতে হবে।
বুধবার রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে ‘নির্মিত/নির্মাণাধীন ভবনসমূহে সেপটিক ট্যাংক/এসটিপি স্থাপন’ বিষয়ক অংশীজনের সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেছেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ঢাকা শহরের হাসপাতাল, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসহ সব স্থাপনার জন্য এসটিপি স্থাপন কোনোভাবেই কঠিন কাজ নয়। ঢাকাকে একটি ব্রাউন শহর থেকে সবুজ ও স্মার্ট নগরীতে রূপান্তর করতে হলে কার্যকর স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা জরুরি।
তিনি আরো বলেন, রাজধানীর নদী ও খাল দূষণমুক্ত করা কঠিন হলেও, তা অসম্ভব নয়। এ জন্য সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে এবং উৎস থেকে বর্জ্য ফেলার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। শুধু ড্রেজিং করে কিংবা দায় এড়িয়ে সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়
সভায় পরিবেশ উপদেষ্টা দীর্ঘমেয়াদি ভিশন, কার্যকর গভর্নেন্স এবং আইনগত সংস্কারের ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আইন সংশোধন ও কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঢাকা একটি আধুনিক, পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব নগরীতে রূপান্তরিত হবে।
তিনি নগরীর ছাদবাগান, সড়ক বিভাজকে সবুজায়ন এবং পার্ক সংরক্ষণের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে ভবন নির্মাণে সেপটিক ট্যাংক ও এসটিপি স্থাপনের বাধ্যবাধকতা কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
রাজউকের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল মতিন। বক্তৃতা করেন রাজউকের সদস্য (পরিকল্পনা) মো. গিয়াস উদ্দিন ও রাজউকের উপনগর পরিকল্পনাবিদ সাঈদ রেজাউল হক।
বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা করেন ওয়াটারএইড বাংলাদেশ’র কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, ডাইকি এক্সিস বাংলাদেশ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুই ওয়াসে ও প্রধান নির্বাহী শফিকুল ইসলাম।
সভায় অংশগ্রহণকারীরা ঢাকা শহরকে টেকসই ও বাসযোগ্য নগরীতে রূপান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে মতামত তুলে ধরেন।
মন্তব্য করুন


আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইসরায়েলকে আরও বোমা সরবরাহ করতে বাইডেন প্রশাসনকে আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম। তিনি এই যুদ্ধের সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের বিরুদ্ধে আণবিক বোমা ব্যবহারের তুলনা করেন।
লিন্ডসে গ্রাহাম বলেন, পার্ল হারবারের আক্রমণের পর আমরা নাগাসাকি ও হিরোশিমায় যেভাবে জবাব দিয়েছিলাম, ইসরায়েলেরও তেমন টা করা উচিত। তাদেরকে সেই বোমা সরবারহ করা উচিত।
সম্প্রতি অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার রাফাহ সীমান্তে বারবার নিষেধের পরও ইসরায়েলে সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করায় তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠানো বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এপ্রিল মাসের শুরু থেকেই মার্কিন প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে শেষ পর্যন্ত এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষ করে একাধিক ধরনের বোমার সরবরাহ বন্ধ রাখছে বাইডেন প্রশাসন, যেগুলি দিয়ে ইসরায়েল গাজার শহরাঞ্চলে আক্রমণ চালাতে পারে।
বোমা সরবরাহ সীমিত করা ও রাফাহ সীমান্তে অভিযান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়ে পড়েছে। তবে ইসরায়েলের কট্টর সমর্থন লিন্ডসে গ্রাহাম। তিনি বলেন, এই যুদ্ধে ইসরায়েলের জয় নিশ্চিতে পর্যাপ্ত বোমা সরবরাহ করা উচিত। কোনোভাবেই তাদের হারতে দেওয়া যাবে না।
গত বছরের ৭ অক্টোবর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে হাজার হাজার রকেট ছুড়ে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এতে ইসরায়েলে নিহত হন এক হাজার ৪০০ জন। এরপরেই বছরের পর বছর ধরে গাজায় চলা সামরিক পদক্ষেপ জোরাল করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে প্রাণ হারিয়েছে ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি, আহত ৭৪ হাজারেরও বেশি। হতাহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক। এমন অবস্থায় বিশ্বজুড়ে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হচ্ছে।
মন্তব্য করুন


অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, ‘জুলাই গণহত্যার বিচারে আমরা কি প্রতিশোধ নিতে চাচ্ছি এমন অনেক প্রশ্ন আসছে। আমরা বলতে চাই, আমরা প্রতিশোধ নিতে চাচ্ছি না। আমরা বিচার করতে চাচ্ছি। কেন বিচার করতে চাচ্ছি? আমরা আগামী প্রজন্মকে ইতিহাসের একটি দায় থেকে মুক্ত করতে চাচ্ছি।’
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী জাতীয় সংলাপের আয়োজন ‘ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ’ এ অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। শনিবার শেষ দিনের প্রথম পর্বে ‘গুম-খুন থেকে জুলাই গণহত্যা: বিচারের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এই পর্বে সঞ্চালক ছিলেন সাংবাদিক মনির হায়দার।
সংলাপে অংশ নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘বর্তমান সময়ে এসে কেউ জমি দখলে ব্যস্ত, কেউ ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ব্যস্ত, কেউ পদ-পদবী দখলে ব্যস্ত, কেউ নিজস্ব লোক পুনর্বাসনে ব্যস্ত, কিন্তু খুনিদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য, খুনিদের বিচারের জন্য আমাদের উপর যে পরিমাণ চাপ প্রয়োজন ছিল সেদিকে আপনারা ফোকাস করেন নি।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা যত বেশি চাপে রাখবেন, আমরা তত বেশি এই বিষয়টাকে (বিচার) সামনের দিকে এগিয়ে নিতে দৃঢ় চেষ্ট থাকবো। আপনারা যত বেশি অতন্দ্র প্রহরীর মত দায়িত্ব পালন করবেন, আমরা রাষ্ট্রকে এবং জনগণের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ততবেশি এজেন্ডা ভিত্তিক সাহসিকতা নিয়ে এগিয়ে যাবো।’
দেশে ঐক্যের প্রয়োজন উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘ঐক্য ছাড়া সংস্কার সম্ভব নয়। সংস্কার ছাড়া যৌক্তিক কোন বাংলাদেশ আপনাদের উপহার দেওয়া সম্ভব নয়। ঐক্য ছাড়া, সংস্কার ছাড়া এই বিচার প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ের মধ্যে করাটা কঠিন এবং দুরুহ।’
বিচারের চ্যালেঞ্জ বিষয়ে আলোচনা কম হওয়ায় কিছুটা হতাশা প্রকাশ করে রাষ্ট্রের প্রধান এই আইন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিলো চ্যালেঞ্জের জায়গাটা কি সেটা আমাদের বলবেন। আমরা সেটায় যেন যৌক্তিক সমাধানের জায়গায় যেতে পারি, সেটা সুনির্দিষ্টভাবে আমরা পাইনি।’ তিনি বলেন, ‘আমার কাছে চ্যালেঞ্জের প্রধান জায়গাটা হলো, জুলাই বিপ্লবের শহীদদের রক্তের বিনিময়ে যে চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে আমরা রাস্তায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছিলাম, সেই লক্ষ্য, সেই ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা, সেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, হাতে হাত মিলিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করার যে ঐক্য, সেই ঐক্যটাতে যে ফাটল ধরেছে, সেই ফাটলটাই প্রধান চ্যালেঞ্জ।’
বিভিন্ন মিথ্যা মামলা প্রসঙ্গে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘পার্সোনাল গ্রাস এক্সপোজ করার জন্য মামলা দিয়েছেন, আসামির খাতায় নাম দিয়েছেন, এই মামলাগুলোর পরিণতি কি হবে এবং এটার সাথে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের যে মামলা তার কোনো কনফ্লিক্ট হবে কি-না প্রশ্ন এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘আপনাদের আইনিভাবে, স্পষ্টভাবে বলতে চাই, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে, সেই ট্রাইব্যুনাল ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১৯৭৩ এর ১৯ নম্বর আইন। সে আইনে মানবতাবিরোধী আইনের যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে হত্যা, নির্যাতন, গুমসহ অনেকগুলো অপরাধের কথা বলা হয়েছে, যে অপরাধগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সিভিলিয়ান পপুলেশনের উপর ঘটনা ঘটানো হয়েছে, তার বিচার হবে। সেটি একটা দুইটা স্পেসিফিক ঘটনার দরকার নেই। ইন জেনারেল সেটার বিচার হবে। ঐ আইনেই বলা আছে, ডমেস্টিক অন্যান্য আইনে যাই বলা থাকুক না কেন, ঐটার বিচার ওখানে হবে। অর্ডিনারি গুমের বিচার, খুনের বিচার, নির্যাতনের বিচার, নিপীড়নের বিচার, এইগুলো অর্ডিনারি কোর্টে হতে কোন বাধা নেই এবং সেটাও চলবে।’
মন্তব্য করুন


পঞ্চদশ সংশোধনী মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে ধ্বংস করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের প্রশ্নে রায় ঘোষণার সময় বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন। রায় ঘোষণা এখনও চলমান রয়েছে।
এর আগে, বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ হবে না, এ বিষয়ে রুল জারি করা হয়েছিল। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী রায় ঘোষণা শুরু করেন। রায়ের মূল অংশ পাঠ করেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।
গত ৫ ডিসেম্বর হাইকোর্ট পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে রুলের রায়ের জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেছিল। দীর্ঘ ২৩ কার্যদিবসের শুনানি শেষে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন। রিটকারী সুজনের বদিউল আলমের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া। বিএনপির পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল। জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী। ইনসানিয়াত বিপ্লবের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান, চার আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী, ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে রুলে বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার পক্ষভুক্ত হন। এছাড়া ইনসানিয়াত বিপ্লব, গণফোরাম, চার আবেদনকারী রুলে ইন্টারভেনর হিসেবে পক্ষভুক্ত হন।
মন্তব্য করুন