শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ মামলায় ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো। অন্য তিনজন হলেন এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
মঙ্গলবার (৬ জুন) ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন। এর আগে, সকালে আদালতে হাজির হন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। আদেশের পর ড. ইউনূস সাংবাদিকদের বলেন, এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
গত ৮ মে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলা বাতিলের আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
গত বছরের ১৭ আগস্ট বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলা বাতিলে ইউনূসের আবেদনে জারি করা রুল খারিজ করে রায় দেন। এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূস আপিল বিভাগে আবেদন করেন।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চার জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।
ইউনূস ছাড়াও এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানকে মামলায় বিবাদী করা হয়। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। পরে ওই মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
একই বছরের ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল দিয়েছিলেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।
ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে মামলা বাতিলে জারি করা রুল দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন
সিলেটের ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর নিয়ে উত্তেজনার মধ্যেই এবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অকশন শেড (নিলামঘর) থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ১০টি চাকা গায়েব হয়েছে। এ ঘটনায় গত সোমবার বিমানবন্দর থানায় একটি জিডি করেন বিমানের সহকারী ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) মোশারেফ হোসেন।
জিডিতে বিষয়টিকে চুরি হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। সেখানে বাদী বিমানের কর্মকর্তা মোশারেফ লিখেছেন, গত ১৬ আগস্ট (শনিবার) সন্ধ্যায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ১০টি ‘আনসার্ভিসেবল টায়ার’ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গার কমপ্লেক্সের পাশের অকশন শেডে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
জিডিতে বলা হয়, খুঁজে না পাওয়ার পর বিমানের ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট সুপারভাইজার আরমান হোসেন ও স্টোর হেলপার সামসুল হককে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, একটি ‘বেসরকারি এয়ারলাইন্স কর্মকর্তাকে’ ১০টি চাকা ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে। আর এটি ‘যথাযথ কর্তৃপক্ষকে’ না জানিয়ে করা হয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিমানবন্দর থানার ওসি তাসলিমা আক্তার বলছেন, উড়োজাহাজের চাকার বিষয়ে বিমানের পক্ষ থেকে একটি জিডি করা হয়েছে। পুলিশ বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিমানের একজন কর্মকর্তা জানান, একেকটি চাকার দাম পাঁচ থেকে ১৫ হাজার ডলার। সেই হিসেবে প্রায় কোটি টাকার চাকা বেঁচে দিয়েছেন বিমানের কর্মীরা। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। প্রাথমিকভাবে দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। মূলত অবৈধ অর্থের জন্য টায়ারগুলো সরানো হয়।
এদিকে এ ঘটনার পর দায় স্বীকার করে বিমান কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত দিয়েছেন ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট সুপারভাইজার মো. আরমান হোসেন। সেখানে তিনি বলেন, বিমানের ১০টি টায়ার তিনি ‘বেসরকারি এয়ারলাইন্সকে’ দেন। এরপর বেসরকারি এয়ারলাইন্সটি তাদের থেকে ৬টি টায়ার নিয়ে অকশন শেডে রাখেন। এটি নিরাপত্তা সদস্যদের দৃষ্টিগোচর হয়। নিরাপত্তা শাখার দুজন সদস্য এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি ঘটনা স্বীকার করেন।
পরের ঘটনার বর্ণনায় বিমানের এই অভিযুক্ত কর্মকর্তা আরো জানায়, নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তাদের নির্দেশে তাদের সঙ্গে নিয়ে বেসরকারি এয়ারলাইন্সের ওই টায়ারগুলো ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি বিমানের টায়ারগুলো ফিরিয়ে এনে অকশন শেডে রাখা হয়।
এসব বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এ বি এম রওশন কবীর গণমাধ্যমকে জানান, টায়ারগুলো নিলামের জন্য রাখা হয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই সেগুলো সরানো হয়েছিল। তদন্তে দুজনের সম্পৃক্ততার বিষয় উঠে এসেছে। এর সঙ্গে আরো কারো সম্পৃক্ততা আছে কি না, খোঁজা হচ্ছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী খুব দ্রুতই জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
বাংলাদেশ নিয়ে ফেসবুকে বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার ঠেকাতে মেটাকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার মেটার পরিচালক (মানবাধিকার নীতি) মিরান্ডা সিসন্স প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে এ আহ্বান জানানো হয়।
ড. ইউনূস বলেন, 'ব্যাপক হারে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চলছে এবং আমরা এর ভুক্তভোগী।'
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের অর্জনকে নস্যাৎ করতে কিছু দেশ থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মেটা পরিচালক সিসন্স প্রধান উপদেষ্টাকে মেটার মানবাধিকার নীতি ব্যাখ্যা করে বলেন, তাদের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কেউ যেন বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে সেজন্য তারা সতর্ক থাকেন।
প্রধান উপদেষ্টা মেটাকে তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য প্রযুক্তিকে আরও সহজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, 'ফেসবুকের কারণে আপনাদের সম্ভাবনা প্রচুর। তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে ফেসবুক ব্যবহার করা যেতে পারে। দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর স্বার্থে বাংলাদেশ সরকার ফেসবুকের সঙ্গে যুক্ত থাকবে।'
এ সময় এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত সচিব-২ সজীব এম খায়রুল ইসলাম, বাংলাদেশ ও নেপালে মেটার পাবলিক পলিসি প্রধান রুজান সারোয়ার, মেটার অ্যাসোসিয়েট জেনারেল কাউন্সেল নয়নতারা নারায়ণ, মেটার এশিয়া-প্যাসিফিকের মিসইনফর্মেশন প্রধান অ্যালিস বুদিশাত্রিজো উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
গত বছরের জুলাই-আগস্টে চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি অডিও রেকর্ডিং এর বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংটি যাচাই করে বিবিসি জানিয়েছে, শেখ হাসিনা তার নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার’ করার অনুমতি দিয়েছেন এবং ‘তারা (এসব বাহিনীর সদস্যরা) যেখানেই তাদের (আন্দোলনকারী) পাবে, তারা গুলি করবে’।
অজ্ঞাত একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনের ফাঁস হওয়া অডিওটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ যে, তিনি সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের গুলি করার জন্য সরাসরি অনুমতি দিয়েছিলেন।
ফাঁস হওয়া অডিওটি সম্পর্কে জানেন এমন একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, গত ১৮ জুলাই নিজের সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে শেখ হাসিনা ওই ফোনালাপটি করেন। রেকর্ডিংয়ের কণ্ঠের সঙ্গে শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের মিল শনাক্ত করেছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।
বিবিসি আলাদাভাবে ইয়ারশটের অডিও ফরেনসিক এক্সপার্টদের দিয়ে এই রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করেছে এবং তারা এটিতে এডিট করার বা কোনো রকম পরিবর্তন করার কোনো প্রমাণ পায়নি। অডিওটি কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে এমন সম্ভাবনাও খুবই কম বলে তারা জানিয়েছে।
মানবাধিকার বা পরিবেশ রক্ষার ইস্যুতে অডিও সংক্রান্ত তদন্তের কাজ করে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইয়ারশট। তারা বলছে, ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংটি সম্ভবত এমন একটি ঘরে ধারণ করা হয়েছিল যেখানে ফোন কলটি স্পিকারে বাজানো হয়েছিল। কারণ এতে স্বতন্ত্র টেলিফোনিক ফ্রিকোয়েন্সি এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে কিছু শব্দ ছিল।
ইয়ারশটের বিশেষজ্ঞরা রেকর্ডিংজুড়ে ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সি বা ইএনএফ শনাক্ত করেছে, যে ফ্রিকোয়েন্সি অন্য একটি ডিভাইস থেকে অডিও রেকর্ডিংয়ের ক্ষেত্রে প্রায়ই উপস্থিত থাকে।
এটি এমন এক সূচক যার মানে হলো অডিওটিতে হেরফের করা হয়নি।
তারা শেখ হাসিনার বক্তব্যে ছন্দ, স্বর এবং শ্বাসের শব্দ বিশ্লেষণ করেছে এবং ধারাবাহিক নয়েজের স্তরও শনাক্ত করেছে। অডিওতে কৃত্রিম কোনো পরিবর্তন আনার প্রমাণও খুঁজে পায়নি।
ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বিবিসিকে বলেছেন, ‘রেকর্ডিংগুলো তার (শেখ হাসিনার) ভূমিকা প্রমাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এগুলো স্পষ্ট এবং সঠিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে এবং অন্যান্য প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত।’
তিনি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন যেখানে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।
আওয়ামী লীগের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘বিবিসির উল্লেখ করা টেপ রেকর্ডিংটি সত্য কিনা তা আমরা নিশ্চিত করতে পারছি না’।
মন্তব্য করুন
বন্দর থেকে নির্ধারিত সময়ে পণ্য না নিলে আমদানিকারকদের তিনগুণ জরিমানা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন ও শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে এম ভি আল-বাখেরা সারবাহী নৌযানের দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা জানান, বাজারে ভোজ্যতেলের কিছুটা সংকট থাকলেও শাকসবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে নিত্যপণ্য আমদানি করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, সরবরাহ ব্যবস্থায় কোনো ঘাটতি নেই। তবে কোনো আমদানিকারক বন্দর থেকে নির্ধারিত সময়ে পণ্য না নিলে তাকে তিনগুণ জরিমানা দিতে হবে।
এসময় গত ডিসেম্বরে চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া এম ভি আল-বাখেরা সারবাহী নৌযান দুর্ঘটনায় নিহত ৬ শ্রমিকের পরিবারকে সচিবালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন থেকে দুই লাখ টাকা এবং আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান নোয়াপাড়া গ্রুপের পক্ষ থেকে ৩ লাখ টাকার চেক তুলে দেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত প্রতিবেদন ২৪ জুনের মধ্যে দাখিলের আদেশ দিয়েছেন। প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২০ এপ্রিল) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বিচারিক বেঞ্চ এই আদেশ জারি করেন।
এদিন জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও অন্যান্য আসামিদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ডা. দীপু মনি, আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, গোলাম দস্তগীর গাজী, আমির হোসেন আমু, কামরুল ইসলাম, রাশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনু। এছাড়াও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী ও সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক এমপি সোলাইমান সেলিম, আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাংগীর আলম, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এবং এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানও রয়েছেন।
এর আগে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এই ১৯ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২০ এপ্রিল) তাদের পুনরায় আদালতে উপস্থিত করা হয়।
মন্তব্য করুন
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান (এফ-৭ বিজিআই) বিধ্বস্ত হয়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে আগুন ধরে যায়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বিমানটি উড্ডয়ন করে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই দুর্ঘটনায় পড়ে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ অন্তত ২৯ জন দগ্ধ হয়ে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আহতদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে এবং তাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. নাসির উদ্দিন জানায়, এখন পর্যন্ত অর্ধশতাধিক দগ্ধ রোগী ভর্তি হয়েছেন। তিনি বলেন, 'বহু দগ্ধ রোগীর অবস্থা গুরুতর। তাদের চিকিৎসায় প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হবে। এ কারণে আশেপাশের স্বেচ্ছাসেবী ও রক্তদাতাদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।'
বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনও আহতদের সহযোগিতায় প্রস্তুতির কথা জানিয়ে পোস্ট করছেন। কেউ দোয়া করছেন, কেউ দিচ্ছেন রক্তদানের আহ্বান।
মন্তব্য করুন
কর্মীদের বিদেশ পাঠানোর ক্ষেত্রে ৮০ ভাগ সমস্যা দেশ থেকেই তৈরি হয়। পরে সৃষ্ট সমস্যা সামলাতে হয় দূতাবাসকে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ফরেন সার্ভিস ডে উপলক্ষে কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দূতাবাসের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি জানান, প্রবাসীদের সমস্যা সবার আগে সমাধান করতে হবে। দূতাবাসের সীমাবদ্ধতা থাকলেও মানুষকে আগে সেবা দিতে হবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কর্মীদের বিদেশ পাঠানোর ক্ষেত্রে ৮০ ভাগ সমস্যা দেশ থেকেই তৈরি হয়। পরে সৃষ্ট সমস্যা সামলাতে হয় দূতাবাসকে। সুতরাং প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা দিয়েই কর্মী পাঠানো গেলে প্রবাসীদের সমস্যা কম হবে। একইসঙ্গে মিশনগুলোর ওপর চাপ কমবে।
রেমিটেন্সের ব্যাপারে তৌহিদ হোসেন জানায়, ১৯৮০ এর দশকে এক বিলিয়ন ডলার রফতানি ছিল। এখন (বর্তমান) ৬০ বিলিয়ন ডলার, যেখানে কিছুটা হলেও দূতাবাসের ভূমিকা আছে। এছাড়া সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এক কোটি প্রবাসী দেশে রেমিটেন্স পাঠান।
তিনি জানান, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আরাকান আর্মি বড় সমস্যার জায়গা। বাংলাদেশ না পারছে তাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করতে, না পারছে তাদেরকে এড়িয়ে যেতে।
এ সময় তিনি আরও জানান, মুক্তিযুদ্ধে বৈশ্বিক জনমত সৃষ্টিতে ফরেন সার্ভিসের কর্মকর্তারা কলকাতা থেকে কাজ শুরু করেছিলেন। ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল তখন ৬৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে কলকাতায় ডেপুটি হাইকমিশন গঠন হয়।
মন্তব্য করুন
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, অন্তর্বর্তী দায়িত্ব শেষে তিনি কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দিচ্ছেন না। বুধবার (২ জুলাই) সকালে নিজের ফেসবুক পোস্টে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
রাজনীতির প্রতি কোন টান নেই উল্লেখ তিনি পোস্টে লেখেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরবর্তী ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু জল্পনা চলছে। আমার কিছু বন্ধুর কাছ থেকে শুনেছি যে প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর আমি কোনও শীর্ষ রাজনৈতিক দলে অথবা নতুন প্রতিষ্ঠিত কোনও দলে যোগ দিচ্ছি। সত্যি বলতে, কোনও রাজনৈতিক দল বা এমপি হওয়ার পর আপনি যে ধরণের জীবনধারা গ্রহণ করেন তার প্রতি আমার কোনও ক্রাশ নেই।”
রাজনীতির আর্থিক দিক নিয়ে মন্তব্য করে তিনি লিখেছেন, “সিঙ্গাপুর বা ইউরোপের মতো দেশে রাজনৈতিক নেতৃত্বে আর্থিক সুবিধা থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে সেটা নেই—যতক্ষণ না আপনি একজন দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ হন।”
শফিকুল আলম বলেন, “আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরবর্তী সময়ে আমি কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেব না। আমি সাংবাদিকতা এবং সক্রিয় লেখালেখির পেশায় ফিরে যেতে চাই। আমার মনে কিছু বই আছে। আমি আমার বাকি জীবন জুলাইয়ের বিদ্রোহের উপর একচেটিয়াভাবে লেখার জন্যও ব্যয় করতে পারি।”
এই আন্দোলনকে ‘স্বতঃস্ফূর্ত, সাহসী, সুন্দর ও বিস্তৃত রাজনৈতিক সংগ্রাম’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে শফিকুল আলম লেখেন, “রবার্ট ক্যারো যেভাবে তার প্রিয় বিষয় লিন্ডন জনসনের ওপর পুরো জীবন লেখালেখি করেছেন, তেমনি একজন লেখক সারাজীবন জুলাই বিপ্লব নিয়ে লিখে যেতে পারেন। যদিও অনেকে ‘বিপ্লব’ শব্দটি পছন্দ করেন না।”
নতুন পরিচয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেন শফিকুল আলম। তিনি লেখেন, “আমার জীবনের শেষের দিকে নতুন রূপান্তরের পর কি আমি নিরাপদ থাকব? গত কয়েক মাসে আওয়ামী লীগের অনেক কর্মীর কাছ থেকে ভয়ংকর হুমকি পেয়েছি। তবে হতে পারে, এসব হতাশ কিছু মানুষের হতাশার প্রকাশ, যারা মানুষের শেষ ভালোবাসাটুকুও হারিয়ে ফেলেছে।”
সবশেষে শফিকুল আলম বলেন, “আমি সৃষ্টিকর্তার উপর পূর্ণ আস্থা রাখি। তিনিই আমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং তার কাছেই আমাদের প্রত্যাবর্তন। আমি অপেক্ষায় থাকবো আমার নতুন জীবনের।”
মন্তব্য করুন
ঢাকায় কর্মরত বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা অনেক ভালোভাবে এবং দক্ষতার সঙ্গে দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। পৃথিবীর অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশে বিদেশি কূটনীতিকদের বেশ ভালো মানের নিরাপত্তা দেওয়া হয়। তাদের অব্যাহতভাবে এ মানের নিরাপত্তা দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফ করার পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থার (আইএমও) মহাসচিব পদে বাংলাদেশের প্রার্থিতার পক্ষে প্রচারণার অংশ হিসেবে ঢাকায় কর্মরত কূটনীতিকদের ব্রিফ করেন শাহরিয়ার আলম। ব্রিফিংয়ে কূটনীতিকদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাতিলের প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চান সাংবাদিকরা।
আরও পড়ুন>>বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের নিরাপত্তায় পুলিশের পরিবর্তে থাকবে আনসার
জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, এটা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। আমাদের হাতে প্রচুর কাজ আছে। আমরা এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা এনগেজমেন্টে যেতে চাচ্ছি না। ইটস নট এ ইস্যু। এটা আমাদের নিয়মিত কার্যপরিধির একটা অংশ এবং সবাইকে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
কূটনীতিকদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাতিল নিয়ে আর কথা বলতে চান না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি। বলেন, আমরা খুবই অবগত এবং এটাই আমাদের লাস্ট ওয়ার্ড। কূটনীতিকদের নিরাপত্তা পৃথিবীর অনেক দেশের চেয়ে অনেক ভালোভাবে, দক্ষতার সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী, সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অব্যাহতভাবে দিয়ে যাচ্ছে, ভবিষ্যতেও দিয়ে যাবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কিন্তু এ রিলেটেড ভুল তথ্যের ভিত্তিতে যে প্রশ্নের উদ্ভব হয়েছে, সে ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছি। আমরা এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলতে চাই না।
গত রোববার (১৪ মে) থেকে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ মোট ছয় দেশের কূটনীতিকদের বাড়তি প্রটোকল সুবিধা বাতিল করেছে সরকার।
কূটনীতিকদের বাড়তি প্রটোকল সুবিধা বাতিলের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাই কূটনীতিকদের বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার কোনও আবশ্যকতা নেই।
এদিকে, বিদেশি কূটনীতিকদের আনসার বাহিনী কীভাবে অতিরিক্ত নিরাপত্তা (এসকর্ট) দেবে, সেটি চূড়ান্ত হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) বা আগামী রোববারের (২১ মে) মধ্যে নোট ভার্বালের (কূটনৈতিক পত্র) মাধ্যমে দূতাবাসগুলোকে বিষয়টি জানানোর কথা বলেছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
মন্তব্য করুন
গতকাল রাত থেকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থিত শেখ মুজিবের বাড়িটি ক্রেন দিয়ে ভাঙা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে একটি ভবনের অর্ধেকের বেশি এবং অন্য একটি ভবনের ২০ শতাংশ ভাঙা সম্পন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটির সামনে হাজার হাজার উৎসুক জনতা জমায়েত হয়েছেন। কেউ কেউ হাতুড়ি-শাবল দিয়ে ভাঙার কাজে অংশ নিচ্ছেন, আবার কেউ কেবল দাঁড়িয়ে দেখছেন। একটি ক্রেন দিয়ে দক্ষিণ পাশের ভবনটি ভাঙার কাজ চলছে।
এ সময় ফয়সাল করীম নামের একজন উৎসুক জনতা বলেন, "এই বাড়িটিকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে মানুষকে শান্তিতে থাকতে দেওয়া হয়নি। আজ এটা ভেঙে ফেলা মূলত জনরোষের বহিঃপ্রকাশ। আমরা চাই এই জায়গায় একটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হোক।"
তার কথার মাঝখানেই অন্য একজন বলেন, "বাড়িটি ভেঙে আন্দোলনে শহীদদের পরিবারের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হোক, যাতে তারা এখানে বসবাস করতে পারে।"
এ সময় কেউ কেউ এই জায়গায় মসজিদ নির্মাণের দাবিও তুলেছেন।
গতকাল সন্ধ্যা থেকেই ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে ৩২ নম্বরের এই বাড়িটিতে আসেন এবং ভাঙচুর শুরু করেন। মধ্যরাতে ক্রেন নিয়ে আসা হয় এবং তখন থেকেই বিরতিহীনভাবে ভাঙার কাজ চলছে।
মন্তব্য করুন