ঘন কুয়াশায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীবাহী বাসসহ ১০টি যানবাহনের সংঘর্ষে একজন নিহত এবং অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম মো. ফরহাদ হোসেন (৪০), যিনি ফরিদপুরের ভাঙা এলাকার বাসিন্দা এবং একটি বাসের চালক ছিলেন।
হাঁসাড়া হাইওয়ে থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সগির মিয়া জানান, এক্সপ্রেসওয়ের নিমতলা এলাকার কিছু দূরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। যানবাহনগুলো ঢাকা থেকে মাওয়ার দিকে যাচ্ছিল।
জানা যায়, ভোরে প্রথমে দুটি পণ্যবাহী ট্রাকের সংঘর্ষ ঘটে। এরপর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে একটি বাস পেছন থেকে আরেকটি বাসকে ধাক্কা দেয়, এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। একই সময়ে একটি পিকআপভ্যান একটি প্রাইভেটকারকে চাপা দেয়, যার ফলে আরও কয়েকজন আহত হন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে।
হাঁসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, "দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহনগুলো সরিয়ে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করি। সকালে ঘন কুয়াশার কারণে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।"
তিনি আরও জানান, আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, ঘন কুয়াশার মধ্যে অতিরিক্ত গতির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
মন্তব্য করুন
জুলাইয়ে শহিদদের ত্যাগ জাতিকে একটি ন্যায় ও সাম্যভিত্তিক, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘জুলাই আমাদের নতুন করে আশার আলো- একটি ন্যায় ও সাম্যভিত্তিক, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে। হাজারো শহীদের আত্মত্যাগ আমাদের রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ এনে দিয়েছে তা যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে।’ সোমবার (৪ আগস্ট) জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার ও তার স্বার্থলোভী গোষ্ঠী এখনও দেশকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করতে হবে। আসুন সবাই মিলে আমরা এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলি, যেখানে আর কোনো স্বৈরাচারের ঠাঁই হবে না।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় দিন আজ। এক বছর আগে এই দিনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পূর্ণতা পায়, দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্ত হয় প্রিয় স্বদেশ। বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ, যাদের যূথবদ্ধ আন্দোলনের ফসল আমাদের এই ঐতিহাসিক অর্জন, তাদের সবাইকে আমি এই দিনে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।
আরও পড়ুন: ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন করে জুলাইয়ের চেতনার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে: রাষ্ট্রপতি
তিনি বলেন, আজ আমি স্মরণ করছি সেই সব সাহসী তরুণ, শ্রমিক, দিনমজুর ও পেশাজীবীদের, যারা ফ্যাসিবাদী শক্তিকে মোকাবিলা করতে গিয়ে শাহাদত বরণ করেছেন। গণ-অভ্যুত্থানে শাহাদত বরণকারী সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে আহত সকল জুলাই যোদ্ধা, চিরতরে পঙ্গু হওয়া ও দৃষ্টিশক্তি হারানো সকল জুলাই যোদ্ধাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন অধ্যাপক ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, টানা ১৬ বছরের স্বৈরাচারী অপশাসনের বিরুদ্ধে সম্মিলিত বিস্ফোরণ ছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থান। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য ছিল— একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পরে এ সকল লক্ষ্য বাস্তবায়নে রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল খাতে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, জুলাই গণহত্যার বিচারের কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। জুলাই শহিদদের স্মৃতি রক্ষা ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ড. ইউনূস বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে রাজনৈতিক ও নির্বাচন ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনীয় সকল সংস্কারে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা চলমান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, একটি টেকসই রাজনৈতিক সমাধানের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে অন্তর্বর্তী সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।
মন্তব্য করুন
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় বছরের সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৪১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
শনিবার (৩ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, গত একদিনে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১২৮ জন আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৩ জন। তবে এই ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে কারো মৃত্যু হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৩৯৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৩৪৫ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৫২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ২৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৬০৭ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ৬৭২ জন। এদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৮৬৯ জন। ঢাকায় ১ হাজার ২৫২ এবং ঢাকার বাইরে ৬১৭ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১ জুন) সর্বোচ্চ ১১২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মন্তব্য করুন
দেশের প্রথম মনোরেল নির্মিত হতে যাচ্ছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। নগরীর যানজট নিরসনে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)।
রোববার (১ জুন) সকালে নগরীর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সঙ্গে জার্মানি প্রতিষ্ঠান ওরাসকম ও মিশরের প্রতিষ্ঠান আরব কন্ট্রাক্টর গ্রুপের এ সংক্রান্ত সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। প্রতিষ্ঠান দুটি নগরীতে ফিজিবিলিটি স্টাডি করবে।
চুক্তি অনুযায়ী ওরাসকম ও আরব কন্ট্রাক্টর গ্রুপ মনোরেল নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের (ফিজিবিলিটি স্টাডি) কাজ শুরু করার কথা রয়েছে।
মনোরেল প্রকল্পের অর্থায়ন, প্রযুক্তি ও বাস্তবায়ন কাঠামো তুলে ধরেন আরব কন্ট্রাক্টরস ও ওরাসকম পেনিনসুলা কনসোর্টিয়ামের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ কাউসার আলম চৌধুরী।
তিনি জানান, ‘চট্টগ্রাম বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী। এখানে যানজট ও পরিবহণ সংকট ক্রমবর্ধমান। মনোরেল একটি আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব সমাধান। আমরা এই প্রকল্পে পূর্ণাঙ্গ বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।’
তিনি জানায়, প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের সম্ভাব্য তিনটি রুট হচ্ছে : লাইন-১ (২৬.৫ কি.মি.) কালুরঘাট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত (বহদ্দারহাট, চকবাজার, লালখান বাজার, দেওয়ানহাট ও পতেঙ্গা হয়ে), লাইন-২ (১৩.৫ কি.মি.): সিটি গেট থেকে শহীদ বাশিরুজ্জামান স্কয়ার (এ.কে. খান, নিমতলী, সদরঘাট ও ফিরিঙ্গি বাজার হয়ে) পর্যন্ত লাইন-৩ (১৪.৫ কি.মি.): অক্সিজেন থেকে ফিরিঙ্গি বাজার (মুরাদপুর, পাঁচলাইশ, আন্দরকিল্লা ও কোতোয়ালি হয়ে) পর্যন্ত।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মনোরেল প্রকল্প চট্টগ্রাম নগরীর গণপরিবহন খাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে চলেছে উল্লেখ করে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামকে দক্ষিণ এশিয়ার গেটওয়ে হিসেবে গড়ে তোলা হবে। প্রস্তাবিত মনোরেল প্রকল্পটির মোট দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৫৪ কিলোমিটার এবং এতে বিনিয়োগ হবে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা। পুরো অর্থায়ন আনবে বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান-ওরাসকম কনস্ট্রাকশন ও আরব কন্ট্রাক্টরস।
তিনি বলেন, ‘এই বিনিয়োগের জন্য চসিকের কোনো আর্থিক দায় থাকবে না। কেবল আমরা প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট ও ভূমি বরাদ্দ দেব। এই মনোরেল শুধু যানজট নিরসনে নয়, বরং চট্টগ্রামকে একটি পরিবেশবান্ধব, পর্যটন ও ব্যবসাবান্ধব নগরীতে রূপান্তর করার দিকেও এগিয়ে নেবে। এটি দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে সংযোগের একটি আধুনিক সেতুবন্ধন তৈরি করবে। মনোরেল থেকে রাজস্ব আসবে শুধু টিকিট নয়, বরং বিজ্ঞাপন, স্টেশনে দোকানপাট, আশপাশের সম্পত্তিমূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমেও। একটি ভাল গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলে ৫-৭ গুণ পর্যন্ত অর্থনৈতিক রিটার্ন পাওয়া যায়।’
অনুষ্ঠানে গ্রেটার চিটাগাং ইকোনমিক ফোরামের প্রেসিডেন্ট আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রামকে একটি স্মার্ট ও টেকসই নগরীতে রূপান্তরের অংশ হিসেবে মনোরেল প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ব্যবসায়ী, পেশাজীবী ও নগরবাসীকে নিয়ে একটি ইকোনমিক ফোরাম গঠন করে এই প্রকল্পকে বাস্তবায়নে কাজ করবো।’
চসিক কর্মকর্তারা জানান, মনোরেল একটি আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা, যা একক রেলপথ দিয়ে চলে। এটি সাধারণত উঁচু পিলারের ওপর স্থাপন করা হয়। মনোরেল প্রযুক্তি মেট্রোরেলের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ খরচ সাশ্রয়ী। এটি কম জায়গায় স্থাপন করা সম্ভব, ফলে ঘনবসতিপূর্ণ শহর বা স্থাপনার মধ্য দিয়েও সহজে চলাচল করতে পারে। মনোরেলের যাত্রী ধারণক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম হলেও এটি দ্রুত নির্মাণযোগ্য এবং শহরের যানজট কমাতে কার্যকর। বর্তমানে জাপান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া ও ভারতের কিছু শহরে মনোরেল সফলভাবে চালু রয়েছে।
কর্মকর্তারা আরও জানান, এর আগে ২০২১ সাল থেকে বিদেশি আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান মনোরেল নির্মাণে চসিককে প্রস্তাব দিয়েছিল। এ বিষয়ে তারা কয়েকবার তৎকালীন সিটি মেয়রের সঙ্গে বৈঠক করেছিল। কিন্তু নানা কারণে এটি আর আলোর মুখ দেখেনি।
মন্তব্য করুন
বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলনে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বাংলাদেশের ‘টোন’ (কণ্ঠস্বর) ভিন্ন হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে আগামী ১৭ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভারতের নয়াদিল্লিতে ৫৫তম বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলনে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সংক্রান্ত বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয় আলোচনার লক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সভা শেষে তিনি সীমান্ত সম্মেলনের আলোচ্যসূচি তুলে ধরেন।
এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনি নতুনত্ব কী চাচ্ছেন? নতুনত্ব হলো, আগে যেভাবে কথা বলা হতো, এবার কথার টোন আলাদা হবে।’ তিনি আরও বলেন, সীমান্ত সম্মেলনে কী বিষয়ে আলোচনা হবে এবং বাংলাদেশের অবস্থান কী হবে, সে বিষয়ে আজ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মূল আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে বিএসএফ এবং ভারতীয় নাগরিক ও দুষ্কৃতকারীদের দ্বারা সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর গুলি চালানো বন্ধ করা। এছাড়াও সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, অনেক সময় দেখা যায় বিএসএফ এবং তাদের দেশের দুষ্কৃতকারীরা সীমান্তে বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যায়, এটাও যাতে তারা না করেন, সেজন্য তাদের বলা হবে। অনেক সময় তারা সীমানা লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে পারাপারের চেষ্টা করে, এগুলো যাতে না হয়, সে বিষয়েও আলোচনা হবে।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, ‘ভারতীয়রা অনেক সময় সীমান্তের কাছে মাদক বা ফেনসিডিলের কারখানা তৈরি করে সেগুলো বাংলাদেশে পাঠায়। এ বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হবে। সীমান্তে ১৫০ গজের মধ্যে অনেক কাজ আছে যেগুলো করার নিয়ম নেই, সেগুলো অনেক সময় তারা করতে চায়। কিছু কাজ আছে যেগুলো করতে হলে দুই দেশের অনুমোদন লাগে।’
আগরতলা দিয়ে ভারতের শিল্প বর্জ্য বাংলাদেশে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি আছে। তবে চুক্তিতে ইটিপি/এসটিপি লেখা আছে, যা উচিত ছিল ইটিপি ও এসটিপি। এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নদীগুলোর পানি যাতে সুষম বণ্টন হয়, সে বিষয়েও আলোচনা হবে। ছোটখাটো নদীগুলোর ক্ষেত্রে আলোচনা করা হবে, কারণ বড় নদীগুলোর বিষয়ে আলাদা নদী কমিশন রয়েছে। ফেনীর মুহুরির চরে বর্ডার পিলার স্থাপন নিয়ে সমস্যা আছে, সেটা নিয়েও আলোচনা হবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সেটা তারা কীভাবে বন্ধ করতে পারে, সে বিষয়েও আলোচনা হবে। এছাড়াও কো-অর্ডিনেটর বর্ডার ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান নামে একটি বড় বিষয় আছে, এটা নিয়েও আলোচনা হবে।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, কীভাবে দুই দেশের সম্পর্ক আরও ভালো হয়, আস্থা আরও বাড়ে, সে বিষয়গুলো নিয়েও কথা বলা হবে। গত সরকার ভারতের সঙ্গে কয়েকটি অসম চুক্তি করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। এগুলো যাতে বাতিল হয়, সেজন্য আমরা বলব। বলব চুক্তি এভাবে নয়, ওইভাবে হওয়া দরকার ছিল। এই চুক্তিগুলোর বিষয়ে আমরা এর আগেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের (ভারত) জানিয়েছি।’
ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও বাংলাদেশে অবস্থানকারীদের শাস্তি ও জরিমানা বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ভিসা ছাড়া যারা বাংলাদেশে আছে, তারা ধীরে ধীরে চলে যাচ্ছে। আমরা তাদের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছি। তারা জরিমানা দিয়ে চলে যেতে পারবে। এরপরও যদি তারা থাকে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, ‘সীমান্ত হত্যা, ১৫০ জায়গায় বেড়া নির্মাণ, চাঁপাইনবাবগঞ্জে আঙ্গরপোতা-দহগ্রামের সমস্যা, নদীগুলো নিয়ে সমস্যা—এসব আমাদের মূল এজেন্ডা। এসব বিষয়ে আমরা ছাড় দেব না।’
মন্তব্য করুন
২০২৪ এর জুলাই-অগাস্ট মাসে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার সুষ্ঠুভাবেই করা হবে বলে জানান অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, এই বিচার নিয়ে আপনাদের হতাশ হওয়ার কিছু নাই। আমাদের সরকারের আমলেই কাঙ্ক্ষিত রায় পাবেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিচার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হওয়া হত্যাকাণ্ডের বিচার বিষয়ে এক আলোচনাসভা ও তথ্য প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘বিচার প্রক্রিয়ার কাজ এগিয়ে যাচ্ছে, এই সরকারের আমলেই গণহত্যার বিচার পাবে শহীদ পরিবার। এমনভাবে সাক্ষ্য এবং প্রক্রিয়া রেখে যাওয়া হবে, যা কোনোভাবেই ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না।’
আসিফ নজরুল বলেন, আর আমি বিশ্বাস করি না, ভবিষ্যতে যারাই ক্ষমতায় আসুক, তারা বিচারে শৈথিল্য বা গাফেলতি দেখাবে। তারা সবাই নির্যাতিত মানুষ।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর থেকে ১৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ আরোপ করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। শুল্ক নিয়ে হোয়াইট হাউসের এক ঘোষণায় এই পরিমাণের কথা উল্লেখ করা হয়। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১ আগস্ট) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের বিষয়টিকে বর্তমান অন্তর্বতী সরকারের অন্যতম সফলতা হিসেবে দেখছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
শুক্রবার (১ আগস্ট) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা জানায়।
ওই পোস্টে আসিফ নজরুল লেখেন, ‘১৫ শতাংশ কমিয়ে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ২০ শতাংশ। অ্যানাদার সাকসেস অফ ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট’।
এদিকে হোয়াইট হাউসের ঘোষণা অনুযায়ী, অন্যান্য দেশের মধ্যে পাকিস্তানের ওপর ১৯ শতাংশ, আফগানিস্তানের ওপর ১৫ শতাংশ, ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ, ব্রাজিলের ওপর ১০ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মিয়ানমারের ওপর ৪০ শতাংশ, ফিলিপাইনের ওপর ১৯ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ওপর ২০ শতাংশ, ভিয়েতনামের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ওয়াশিংটন।
ভারতের তুলনায় কম শুল্ক হওয়ায় একে একটি সম্ভাবনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেছেন, ‘আজ আমরা সম্ভাব্য ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক এড়াতে সফল হয়েছি। এটা আমাদের পোশাক খাত ও এ খাতের ওপর নির্ভরশীল লাখ লাখ মানুষের জন্য সুসংবাদ।’
বাংলাদেশ গার্মেন্টস প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেলও একই কথা বলেন। তার ভাষায়, এ সিদ্ধান্ত অনেকাংশেই বাংলাদেশের জন্য খুশির খবর। যুক্তরাষ্ট্রে চীনের বাজার হারানোর সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় প্রথমে ভারতকে সেই শূন্যস্থান পূরণে এগিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, আমাদের চেয়ে ভারতের ওপর বেশি শুল্ক নির্ধারণ হয়েছে—২৫ শতাংশ।
অর্থাৎ, মার্কিন ক্রেতারা এখন বাংলাদেশকেই চীনের বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করতে পারেন।
মন্তব্য করুন
যারা খাল বা ভূমি দখল করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, ভূমিদস্যুরা দেশ ও সমাজের শত্রু। তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
আজ মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া ঝাউবাড়ি এলাকায় শুভাঢ্যা খাল খনন ও সুরক্ষা কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, একসময় এই খালটি সচল এবং প্রবাহমান ছিল। কিন্তু ভূমিদস্যুরা দখল করে এটিকে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করেছে। আর কিছুদিন গেলে এই খালটি ফিরে পাওয়া যেত না। ভূমিদস্যুরা এটিকে রাস্তায় পরিণত করত।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, যে খাল দিয়ে মানুষ যাতায়াত করত এবং বুড়িগঙ্গা থেকে ধলেশ্বরী নদী পর্যন্ত পানি প্রবাহিত হতো, সেই খালটিকে আজ ভূমিদস্যুরা দখল ও দূষণ করে সর্বনাশ করেছে। যারা এই নির্দেশনা মানবে না, তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ফিলিস্তিনের গাজায় নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার ইউএনআরডব্লিউএ’র সমর্থনেও আলাদা প্রস্তাব পাস হয়েছে। ইসরায়েল আইন করে এই সংগঠনকে তাদের দেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) পাস হওয়া ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গাজা ভূখণ্ডে অবিলম্বে নিঃশর্তে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে হবে। কর্মকর্তাদের মতে, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধের ফলে গাজায় ৪৪ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
এই প্রস্তাবকে অবশ্যপ্রতীকী পদক্ষেপ মনে করা হচ্ছে, কারণ ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র তা খরিজ করে দিয়েছে। আর ইসরায়েলের ওপর এই প্রস্তাব মানার কোনো আইনি বাধ্যবাধকতাও নেই। তবে রাজনৈতিক দিক থেকে দেখতে গেলে এর একটা চাপ আছে। কারণ, এতগুলো দেশ যখন কোনো প্রস্তাবে সমর্থন দেয়, তখন তাকে পুরো বিশ্বের মত প্রকাশ বলে বিবেচনা করা হয়।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য ছিল, গাজায় ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্ত করার শর্তে যুদ্ধবিরতি হতে পারে। না হলে হামাস ওই বন্দিদের মুক্তি দেবে না। যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর রবার্ট উড বলেছেন, এই প্রস্তাবের ভাষা ভুল ও লজ্জাজনক।
বুধবার যুদ্ধবিরতির ওই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ১৫৮টি দেশ। বিপক্ষে ভোট পড়ে ৯টি। আর ১৩টি দেশ ভোটদান থেকে বিরত থাকে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, অবিলম্বে নিঃশর্তে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে হবে। বন্দিদের নিঃশর্তে মুক্তি দিতে হবে।
এদিন সাধারণ পরিষদে আরেকটি প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। সেখানে ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের নিয়ে জাতিসংঘের সংগঠন ইউএনআরডব্লিউএ নিয়ে এই প্রস্তাবের পক্ষে ১৫৯টি দেশ ভোট দেয়, ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র-সহ সাতটি দেশ এর বিরুদ্ধে ভোট দেয়। ১১টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে।
এই প্রস্তাবে ইউএনআরডব্লিউএ নিয়ে ইসরায়েলের আইনের নিন্দা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ইসরায়েল যেন ইউএনআরডব্লিউএ-কে যথাযোগ্য মর্যাদা দেয় এবং তাদের কাজে যেন কোনও বাধা না দেয়।
এই প্রস্তাব পাস করার আগে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর অনেকেই তাদের ভাষণে ফিলিস্তিনকে সমর্থন জানায়।
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের দূত রিয়াদ মানসুর বলেন, গাজা এখন যন্ত্রণার ক্ষতচিহ্ন হয়ে আছে। স্লোভেনিয়ার দূত বলেছেন, গাজা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। আলজেরিয়ার ডেপুটি অ্যাম্বাসেডার বলেছেন, ফিলিস্তিনের দুরবস্থা নিয়ে চুপ করে থাকার জন্য বিশ্বকে বড় মূল্য দিতে হবে।
মন্তব্য করুন
নির্বাচনের আগে পুলিশ সুপার (এসপি) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) লটারির মাধ্যমে বদলি ও পদায়ন করা হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
জাতীয় নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির দিকনির্দেশনা মূলক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার হাতে এসপি ও ওসিদের বদলি পদায়নের ক্ষমতা রয়েছে। তাই নির্বাচনের আগে সংশ্লিষ্ট সবার উপস্থিতিতে লটারির মাধ্যমে বদলি ও পদায়ন করা হবে। এখানে সচিবালয় সাংবাদিক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককেও লটারিতে উপস্থিত রাখা হবে।’
তিনি জানান, আসন্ন নির্বাচনকে উপলক্ষ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৮ লাখ সদস্য কাজ করবে। তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। নিজ নিজ এলাকায় তাঁরা প্রশিক্ষণ নেবেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন জাতীয় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, সে জন্য যা যা করার দরকার তা করা হবে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণে নির্বাচনের যে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন সে অনুযায়ী আমরা আমাদের কাজ এগিয়ে নিচ্ছি। ওই ভাষণের ধারাবাহিকতায় আজকে এই সভা ডাকা হয়েছে। নির্বাচনের আগে যে সমস্ত লজিস্টিক সাপোর্ট দরকার তা নিয়েই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।’
মন্তব্য করুন
সরকার চলতি বছরের মাঝপথে ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়ে জনগণের ওপর চরম চাপ সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চলমান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেই সরকার ১০০টিরও বেশি পণ্যের ওপর ভ্যাট ও শুল্ক আরোপ করেছে। এ সিদ্ধান্ত জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
বর্তমান রাজস্ব আদায় দিয়ে বাজেট মেটানো সম্ভব হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার কার্যত অর্থনীতিকে ধ্বংসের পথে নিয়ে গেছে। এখন ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়ে জনগণের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকার টাকার অযৌক্তিক মুদ্রণ করে অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এভাবে চলতে থাকলে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে। জ্বালানি খরচসহ দৈনন্দিন খরচও বেড়ে যাবে, যা জনগণের নাভিশ্বাস উঠাবে।’
সরকারের অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন প্রকল্প বাদ দিয়ে বাজেটের খরচ ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব। এতে অন্তত ৬০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে বাজেটে আরও ১ কোটি টাকার সাশ্রয় করা যেতে পারে।’
আন্তর্জাতিক মহলে সরকারের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াবে। তাই আইএমএফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কঠিন শর্ত শিথিল করার চেষ্টা করা উচিত।’
সরকারকে ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের উচিত সবার আগে বাজেটের অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো এবং সঠিক নীতি গ্রহণের মাধ্যমে জনগণের স্বস্তি নিশ্চিত করা।’
মন্তব্য করুন