ডেস্ক রিপোর্টঃ
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’-এ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিএনপির ৩ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
আমন্ত্রিত অন্য দুই নেতা হলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আগামী ৫-৬ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ অনুষ্ঠিত হবে।
মন্তব্য করুন
ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের পতনের পর কিছুটা হলেও মুক্তি ও স্বস্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল সংলগ্ন মাঠে বিএনপির বর্ধিত সভায় শোক প্রস্তাব উত্থাপনকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যারা ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে সাহসিকতার সাথে শেখ হাসিনার নিষ্ঠুর শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন, তাদের অনেকেই আজ আমাদের মাঝে নেই। তাদের অনেকেরই কোনো খোঁজ মেলেনি। কতজন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, কতজনকে আয়নাঘরে বন্দী করে রাখা হয়েছে, তাদের কোথায় রাখা হয়েছে, তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। অসংখ্য নেতাকর্মী ও দেশের বিভিন্ন পেশার মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন। আমরা তাদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।’
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ সংগ্রাম ও রক্তের বিনিময়ে ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে আজ দলের এই বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সভার শুরুতেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে দলের প্রতিষ্ঠাতা, মহান স্বাধীনতার ঘোষক ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর বিক্রমকে। তিনি ছিলেন বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা, দেশ গঠনের অগ্রদূত এবং জাতীয়তাবাদের প্রবর্তক। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ন্যায়নিষ্ঠা, সততা ও দেশপ্রেমের এক অনন্য প্রতীক ছিলেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।
তিনি আরও যোগ করেন, ‘যখনই দেশ ও গণতন্ত্র বিপন্ন হয়েছে, জিয়াউর রহমান তখনই আপসহীনভাবে দেশ ও গণতন্ত্রের পক্ষে সংগ্রাম করেছেন।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, গণতন্ত্রের প্রতীক ও গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হচ্ছে। এছাড়া, ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের সময় দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়। আজকের বর্ধিত সভায় তাদের স্মরণে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এছাড়াও, দেশের বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, সুরকার, গীতিকারসহ যাদের আমরা হারিয়েছি, তাদের সকলের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়।
মন্তব্য করুন
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ভোট দেওয়ার বয়স ১৬ বছর এবং নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বয়স ২৩ বছর করার প্রস্তাব দেবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে।
শনিবার (২২ মার্চ) সকালে রাজধানীর রূপায়ণ সেন্টারে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার।
তিনি বলেন, ‘আগামীকাল (রোববার) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে সংস্কার সুপারিশমালা জমা দেওয়া হবে। সেখানে ভোট দেওয়ার বয়স ১৬ বছর এবং নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বয়স ২৩ বছর করার প্রস্তাব করবে এনসিপি।’
গণ-অভ্যুত্থানের পর সংবিধান আর কার্যকর নেই উল্লেখ করে নতুন সংবিধান রচনা করার দাবি জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির এই নেতা।
সারোয়ার বলেন, ‘এনসিপি মনে করে আগামী নির্বাচন গণপরিষদ হওয়া উচিত। সংবিধান সংস্কার কাজ শেষ করে একটা নির্দিষ্ট সময় পর এই গণপরিষদই আইন সভায় রূপান্তরিত হবে।’
বর্তমানে ভোটার হওয়ার জন্য একজনকে ১৮ বছর বয়স পূর্ণ করতে হয়। আর নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে ২৫ বছর বয়স পূর্ণ করতে হয়। এবার এই বয়সসীমা কমিয়ে আনার প্রস্তাব রাখতে যাচ্ছে তরুণদের নিয়ে গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, কংগ্রেসম্যানদের সই জালকারী, জো বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টা হাজিরকারী বিএনপি একটা জালিয়াত রাজনৈতিক দল।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়িতে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা'য় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আপনাদের মনে আছে, বিএনপি গত বছর ২৮ অক্টোবর জো বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টাকে হাজির করেছিল। সে বিএনপি কার্যালয়ে শুধু ইংরেজি বলছিল, পুলিশ যখন ধরে নিয়ে গেল তখন দেখি গড়গড়িয়ে বাংলা বলে। তার আগে বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসম্যানদের সই জাল করেছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, শুধু তাই নয়, তারা সে সময় বলেছিল ভারতের অমিত শাহ ফোন করেছিল। কিন্তু অমিত শাহ’র অফিস থেকে বলা হলো তিনি কাউকে ফোন করেননি, যে আওয়াজ প্রচার করা হয়েছিল সেটা অমিত শাহ’র নয়। এসব জালিয়াতিই তাদের কাজ।
ড. হাছান বলেন, দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি দেখে বিএনপি ও তাদের দোসরদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। মাঝেমধ্যে দেখি জিএম কাদেরেরও মাথা খারাপ হয়ে যায়। নির্বাচনের আগে আমরা দেখেছি বিএনপি প্রতিদিন বিভিন্ন এম্বেসিতে ঘুরে বেড়াত আর দেন দরবার করতো, নির্বাচনটা যাতে বন্ধ করা যায়। এসবে কোনো লাভ হয় নাই। নির্বাচন হয়েছে, ৪২ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছে। যদি নির্বাচনের দিন কুয়াশা এবং প্রচন্ড ঠান্ডা না থাকতো তাহলে আরও বেশি মানুষ ভোট দিতো। আর বিএনপি যদি নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে মানুষের উপর হামলা, ট্রেনের মধ্যে শিশুসন্তানসহ পুরো পরিবারকে জ্বালিয়ে হত্যা না করতো তাহলে ভোটের হার ৬০ শতাংশের বেশি হতো।
অন্যান্য দেশের পরিসংখ্যান উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, গত দু’তিন বছরে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত অনেক দেশে নির্বাচন হয়েছে, সেখানে অনেক দেশে ৪০ শতাংশের কম ভোট পড়েছে। যদিও বা সেখানে নির্বাচনে বর্জন ও প্রতিহতের কোনো হুমকি ছিল না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে অত্যন্ত চমৎকার নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন যদি চমৎকার না হতো তাহলে পৃথিবীর ৮০টা দেশের সরকার কিংবা রাষ্ট্রপ্রধান আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতেন না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট চিঠি লিখে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, আমরা বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই। সর্বশেষ দুদিন আগে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীও আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এসব কারণে বিএনপির মাথা খারাপ। সম্ভবত সেজন্য বিএনপি নেতা ড. মঈন খান ইদানিং জ্যোতিষীর মতো কথা বলছেন। বয়সে সিনিয়র বিএনপি নেতা ড. মঈন খানের প্রতি সম্মান রেখে বলছি, তিনি রাজনীতির বাইরে এখন জ্যোতিষীর দায়িত্বও পালন করা শুরু করেছেন।
ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'বঙ্গবন্ধু যখন দেশ পরিচালনা করছিলেন তখন মঈন খানের বাবা আবদুল মোমেন খান খাদ্য সচিব ছিলেন। খাদ্যবাহী জাহাজ ভারত মহাসাগর থেকে ফেরত যাবার পেছনে তার বাবার কারসাজি ছিল, যাতে দেশে খাদ্য সঙ্কট তৈরি হয়।'
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, 'খাদ্য সঙ্কট তৈরি করে বঙ্গবন্ধুকে অজনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে আবদুল মোমেন খানের ভূমিকা ছিল। সেটির পুরস্কার স্বরূপ জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করার পর আবদুল মোমেন খানকে মন্ত্রীর মর্যাদায় খাদ্য উপদেষ্টা বানিয়েছিলেন। ৭৯ সালের নির্বাচনের পর আবদুল মোমেন খান সংসদে খাদ্য মন্ত্রী হিসেবে বক্তব্যে বলেছিল খাদ্যের জন্য দরকার হলে দেশ বিক্রি করে দিব। ওনারই সন্তান মঈন খান।'
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, 'আজকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে, বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটাতে হলে, জননেত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প একমাত্র শেখ হাসিনাই, এই দেশে আর কোন বিকল্প নেই। তিনি জাতিকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন ডিজিটাল বাংলাদেশের। এবং সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটেছে। ২০১৮ সালে আমাদের স্লোগান ছিল- আমার গ্রাম আমার শহর। আজকে গ্রামগুলো শহরের মত হয়ে গেছে, গ্রাম আর শহরের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।'
তিনি বলেন, 'এবার আমরা স্লোগান দিয়েছি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। স্মার্ট বাংলাদেশ বলতে, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নেন্স এবং স্মার্ট পিপল। এই চারটি অনুসঙ্গকে আমরা সাথে নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ রচনা করতে চাই। ইনশাল্লাহ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এই অভিযাত্রায়ও বিজয়ী হবো। কিন্তু আমাদের অভিযাত্রাকে আটকে দিতে চায় বিএনপি এবং তাদের দোসররা। সেই কারণেই নানা ষড়যন্ত্র।'
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, শফিক আদনান প্রমুখ।
দিন অনুষ্ঠান শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ চট্টগ্রাম নগরীর কদম মোবারক এতিমখানায় যান। সেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ উপ-কমিটির উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে প্রধান অতিথি হিসেবে সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে সুষম খাবার বিতরণ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহজাদা মহিউদ্দিন প্রমুখ।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্ত করার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। সরকারের পুলিশ সংস্কার কমিটির কাছে এ সুপারিশ করেছে দলটি।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটি জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিএনপির পুলিশ সংস্কার কমিটির প্রধান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, সরকারের পুলিশ সংস্কার কমিটি বিএনপির কাছে সুপারিশ না চাইলেও আমরা সুপারিশমালা দিয়েছি। রাষ্ট্রের এই অত্যাবশ্যকীয় সেবার (পুলিশ) সংস্কার এখন সময়ের দাবি। সুপারিশমালায় বিএনপি পুলিশ কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, জনগণের সঙ্গে পুলিশের দূরত্ব কমানোর সুপারিশ করেছি আমরা।সুপারিশে পুলিশ বাহিনীকে সঠিক দিকনির্দেশনা, পরামর্শ এবং সহায়তা দেওয়ার জন্য একটি পুলিশ কমিশন গঠনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান হবেন স্বরাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান।
সুপারিশে স্থানীয় পর্যায়ে পুলিশকে অপরাধ দমনে সহায়তা দেওয়া, জনসাধারণ-পুলিশ সম্পর্ক উন্নয়নে এবং সংশ্লিষ্ট এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পরামর্শ দেওয়ার জন্য প্রত্যেক উপজেলা-থানায় একটি নাগরিক কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। স্থানীয় গণ্যমান্য, সুশিক্ষিত ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিবর্গ সমন্বয়ে এ কমিটি গঠিত হবে।
সুপারিশে বিএনপি আরও বলছে, পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোয় থাকা র্যাব ইতোমধ্যে দেশে এবং বিদেশে ব্যাপকভাবে নিন্দিত ও সমালোচিত হয়েছে। দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠন, জাতিসংঘ, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এবং সুধীজন র্যাবকে দেশে সংঘটিত অধিকাংশ গুম, খুন, নির্যাতন ও নিপীড়নের জন্য দায়ী করেছে। বাহিনীটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে র্যাবকে বিলুপ্ত করার সুপারিশ করা হলো। র্যাবের দায়িত্ব আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এবং থানা পুলিশ যেন পালন করতে পারে সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
কমিউনিটি পুলিশিংয়ে জোর দিয়েছে বিএনপি। তারা বলছে, এর মাধ্যমে সমাজে বিবিধ অপরাধ প্রবণতা এবং সামাজিক অস্থিরতা কমবে, পুলিশ-জনসাধারণের মধ্যে দূরত্ব কমবে, জনসচেতনতা বাড়বে এবং আইনের শাসন জোরালো হবে। এই উদ্দেশ্যে গ্রামাঞ্চলে প্রতিটি ইউনিয়নে এবং শহরাঞ্চলে প্রতিটি ওয়ার্ডে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে থেকে একজন কমিউনিটি পুলিশ কর্মকর্তা (উপ-পরিদর্শক পদের নিচে নয়) নিয়োজিত হবেন। সংশ্লিষ্ট এলাকায় তার একটি অস্থায়ী দপ্তর থাকবে।
তিনি নিয়মিতভাবে এলাকার গণপ্রতিনিধি, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান, ইমাম, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি, মহিলা সমাজ, কৃষক ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত কমিটির সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করবেন। সবার অংশগ্রহণে প্রাপ্ত সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে কমিউনিটি পুলিশ কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট এলাকায় অপরাধ দমন ও নিবারণে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেবেন।
এ ছাড়া এলাকায় জমি সীমানা, সম্পদ মালিকানা, মানহানি বা অন্য কারণে মতবিরোধ, গৃহবিবাদ, শিশু ও নারী নির্যাতন, মাদক সেবন, জুয়া, সুদ, গ্যাং কালচার, সাম্প্রদায়িক উসকানি ইত্যাদি আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা চালাবেন।
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করেও তিস্তা নদীর এক ফোঁটা পানি আনতে পারেনি। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে লালমনিরহাটে তিস্তা বাঁচাও আন্দোলন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হলে ভারতকে দাদাগিরি করা বন্ধ করতে হবে। ভারতের সাথে বন্ধুত্ব চাই, তবে তা সম্মানের ভিত্তিতে হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ছেলেরা লড়াই করেছে। ৩৬ দিনের সংগ্রামের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়েছিলেন। একদিকে ভারত আমাদের পানি দিচ্ছে না, অন্যদিকে তারা আমাদের শত্রু শেখ হাসিনাকে দিল্লিতে রাজার মতো সম্মান দিয়ে রেখেছে।
তিস্তা রক্ষার আন্দোলনকে শেষ পর্যন্ত এগিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সংগ্রামের মাধ্যমে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা এবং সব অধিকার আদায় করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি নির্বাচন চায়, কারণ নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ চায় মন্তব্য করে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক আব্দুল হালিম বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ চায়। আশা করি অন্তর্বর্তী সরকার যত দ্রুত সম্ভব মৌলিক সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দেবে।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ তথ্য জানান।
আব্দুল হালিম বলেন, বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের আমলে জামায়াতের ১১ জন শীর্ষ নেতাকে হত্যা করা হয়েছে, ৩০ জন ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছেন, ১ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পতিত আওয়ামী লীগ একেক দিন একের রূপে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে দলটির পতন হয়েছে। এখন জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নির্বাচন জরুরি বলে দাবি করে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব মৌলিক সংস্কার শেষে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন দেবে বলে প্রত্যাশা জামায়াতের।
আলোচনাসভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনাকে কোনো দেশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না; আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ, দেশের জনগণ ও সংবিধান।
শুক্রবার বিকালে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে মুক্তিযুদ্ধের হারিয়ে যাওয়া মূল্যবোধের প্রত্যাবর্তন মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের গত ৪৪ বছরে সবচেয়ে সাহসী রাজনীতিকের নাম শেখ হাসিনা, সবচেয়ে বিচক্ষণ নেতার নাম শেখ হাসিনা, সবচেয়ে দক্ষ প্রশাসকের নাম শেখ হাসিনা, সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতার নাম শেখ হাসিনা, সবচেয়ে সফল কূটনীতিকের নাম শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর থেকে যে পরিবর্তন হয়েছে সেই পরিবর্তনের রূপান্তরের রূপকার শেখ হাসিনা। আজকে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন দৃশ্যমান তা শেখ হাসিনার ম্যাজিক।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় আরও বক্তব্য দেন- সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বেনজির আহমেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী ও উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।
অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন শহিদ আলতাফ মাহমুদের কন্যা শাওন মাহমুদ, শহিদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলিমের কন্যা ডা. নুজহাত প্রমুখ।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
বিএনপি সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে উপ-রাষ্ট্রপতি ও উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদসহ মোট ৬২টি প্রস্তাবনা জমা দিয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজের হাতে লিখিত প্রস্তাবনা তুলে দেয়।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সালাউদ্দিন আহমেদ। তিনি জানান, বিএনপির পক্ষ থেকে সূচনা থেকে তফসিল পর্যন্ত মোট ৬২টি প্রস্তাবনা জমা দেওয়া হয়েছে। জুলাই-আগস্টের বিপ্লব এবং বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায়, ভবিষ্যতে যেন একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হয়, সেসব বিষয় মাথায় রেখে প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, "আমরা বিচার বিভাগের ক্ষেত্রেও সুপারিশ করেছি। উপ-রাষ্ট্রপতি ও উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ সৃষ্টির প্রস্তাব দিয়েছি। নির্বাহী, বিচার বিভাগ এবং আইন বিভাগসহ সব ক্ষেত্রেই এমন প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে, যাতে ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় থাকে।"
সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশন এ প্রস্তাবনাগুলো সরকারের কাছে উপস্থাপন করবে। কোনো বিষয়ে দ্বিমত থাকলে ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকার বিষয়টি দেখবে।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের জানান, বিএনপির জমা দেওয়া প্রস্তাবনা এখনো পড়ে দেখা হয়নি। তবে সবার সঙ্গে আলোচনা করে যেখানে প্রয়োজন, সেখানে সুপারিশ প্রণয়ন করা হবে।
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডন যাত্রা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছিল। এবার জানা গেছে, জানুয়ারির প্রথমার্ধে তিনি লন্ডন যাচ্ছেন। দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে, তার শারীরিক অবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে মেডিকেল বোর্ডের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়। সম্ভাব্য যাত্রার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ জানুয়ারি। তবে এটি এখনও নিশ্চিত নয়। সবকিছু খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে রওনা হবেন। তার সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন ১৬ সদস্যের একটি টিম। এ টিমে তার চিকিৎসা বোর্ডের বেশিরভাগ সদস্য, তিনজন দলীয় নেতা, দুজন একান্ত সচিব, একজন প্রটোকল অফিসার, পুত্রবধূ এবং দুজন গৃহকর্মী অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
হিথ্রো বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাবেন তার পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দীর্ঘ ৮ বছর পর মায়ের সঙ্গে তারেক রহমানের এ সাক্ষাৎ হবে।
সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার লন্ডন সফরের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের ভিসা প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। যেসব হাসপাতালে তার চিকিৎসা হবে সেখানকার অ্যাপয়েন্টমেন্টও নিশ্চিত করা হয়েছে।
এর আগে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, খালেদা জিয়া শারীরিক ও মানসিকভাবে বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন ভারতে। নেতাদের প্রায় সবাই আত্মগোপনে। গ্রেপ্তার হয়েছেন কেউ কেউ। জেলা-উপজেলার নেতাকর্মীদেরও দেখা মিলছে না। টানা ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের এই হাল নিয়ে নানা আলোচনা। নানা প্রশ্ন। আওয়ামী লীগ আর রাজনীতিতে ফিরতে পারবে? ফিরলে কীভাবে, কোন কৌশলে ফিরবে? এসব প্রশ্নের চটজলদি জবাব হয়তো কারও কাছে নেই। তবে দলের নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রের বরাতে মানবজমিন জানতে পেরেছে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছেন শেখ হাসিনা। তার ধারণা ওই নির্বাচন আওয়ামী লীগের কোনো সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে। সুযোগের বিপরীতে হতাশার বার্তাও নিয়ে আসতে পারে মার্কিন মুলুকের নির্বাচন। আসছে ৫ই নভেম্বর গণতান্ত্রিক পৃথিবীর অন্যতম দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। কিন্তু গত জুলাইয়ে বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসকে সমর্থন দেয়ায় নয়া দৃশ্যপট তৈরি হয়েছে। এরপর থেকেই ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলকান শিবির প্রচারণায় নেমে পড়েছে। ডেমোক্রেট প্রার্থী কমালা হ্যারিসের সামনে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হওয়ার হাতছানি। অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্যও বিশেষ বার্তাবহ হতে পারে। বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সরকারের সম্পর্কের বৈরিতার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে সময়ে সময়ে। আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং দেশটির কর্মকর্তাদের হেয় করে কথা বলা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের তরফেও বহু চেষ্টা চালানো হয়েছে আওয়ামী লীগের সরকারের সময়ে। দফায় দফায় কর্মকর্তারা সফর করেছেন। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন আয়োজনে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গেও নানা সময়ে আলোচনা চালিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এই চেষ্টাকে ভালো চোখে দেখেনি বরং গণতান্ত্রিক এই চেষ্টাকে অবজ্ঞা করে স্বৈরতান্ত্রিক ভাবধারায় সরকার পরিচালনা করা হয়েছে। জুলাই-আগস্টের বিপ্লবে বিদেশি শক্তির হাত থাকতে পারে এমন কথাও বলা হয়েছে আওয়ামী লীগের কারও কারও তরফে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট করেই জানিয়েছে, জুলাই-আগস্টের বিপ্লব বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এখানে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না।
আওয়ামী লীগ মনে করছে, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ডেমোক্রেট শিবির জয় পেলে বাংলাদেশ নিয়ে তাদের অবস্থান পরিবর্তন হবে না এবং ভারত সরকারের সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান সম্পর্ক অপরিবর্তিত থাকবে। অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হলে বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন অবস্থানের হেরফের হতে পারে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও নতুন বাতাবরণ তৈরি হতে পারে। সুযোগ তৈরি হতে পারে আওয়ামী লীগের জন্যও। যদিও কূটনৈতিক বোদ্ধারা মনে করেন, নির্বাচনে সরকার পরিবর্তন হলেও যুক্তরাষ্ট্রর নীতি পরিবর্তন খুব একটা হয় না।
এসব দিক চিন্তা করে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদেরও ওই দেশের নির্বাচন নিয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তানভীর কায়সারের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার টেলিফোন আলাপে এমন একটি ইঙ্গিত মিলেছিল। যদিও ওই টেলিফোন আলাপ প্রকাশ হওয়ার পর তানভীরকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। ওই ফোনালাপে শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে স্থানীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ৫ই নভেম্বরের আগে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অবস্থানের খুব একটা হেরফের হচ্ছে না। এরপর পরিস্থিতি বিবেচনায় দলীয় নির্দেশনা আসতে পারে। পরিবর্তন আসতে পারে দলের নেতৃত্বেও।
ওদিকে শেখ হাসিনাকে নিয়ে প্রচ্ছন্ন চাপে পড়েছে ভারত সরকার। দেশটিতে আশ্রয় নেয়ার পর শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্টে অবস্থানের নির্ধারিত ৪৫ দিন পেরিয়ে গেছে আরও আগেই। এমন অবস্থায় তিনি কোন স্ট্যাটাসে ভারতে অবস্থান করছেন তা যুক্তরাষ্ট্রের তরফে জানতে চাওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে চাউর হয়েছে ভারতে ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট পেয়েছেন শেখ হাসিনা। এই ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট ব্যবহার করে তিনি তৃতীয় কোনো দেশ ভ্রমণ করতে পারবেন। যদিও এই ডকুমেন্ট পাওয়ার বিষয়ে ভারত বা বাংলাদেশ কোনো পক্ষ থেকেই স্পষ্ট বার্তা পাওয়া যায়নি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এ বিষয়ে জানিয়েছেন, ‘ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট যেকোনো দেশ যেকোনো ব্যক্তিকেই ইস্যু করতে পারে। আমাদের তা ঠেকানোর কোনো উপায় নেই। ভারত ‘ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট’ দিলে দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট বা অবনতি হবে এমন আশঙ্কা নেই বলেও তিনি জানান।
কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনাকে ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট নিয়েই ভারতে অবস্থান করতে হবে। এই ডকুমেন্ট দিয়ে তিনি তৃতীয় কোনো দেশেও যেতে পারবেন।
ওদিকে বিভিন্ন সূত্রে বিদেশি সংবাদ মাধ্যমে খবর বেরিয়েছে- ভারতের বাইরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন শেখ হাসিনা। কিন্তু আমিরাত তাকে গ্রহণ করেনি। তাকে বিমানবন্দরে ১৭ ঘণ্টা অবরুদ্ধ অবস্থায় কাটাতে হয়েছে এমন খবরও এসেছে। যদিও এসব খবরের সত্যতা কোনো সরকারি সূত্র নিশ্চিত করেনি।
ভারতে অবস্থান করা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশে ইতিমধ্যে গণহত্যার দায়ে অনেক মামলা দায়ের হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব মামলার বিচার প্রক্রিয়াও শুরু হতে যাচ্ছে দ্রুতই। এসব মামলায় পরোয়ানা জারি হলে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইতে পারে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সঙ্গে করা ভারতের চুক্তির আওতায়ই এটির সুযোগ রয়েছে। এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে দুই দেশের মধ্যে নতুন করে টানাপড়েন হতে পারে এমন আশঙ্কাও রয়েছে। দলীয় সূত্রের দাবি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের পর দলীয় অনেক বিষয় খোলাসা হতে পারে। শেখ হাসিনা ভারতে থাকবেন নাকি অবস্থান পরিবর্তন করবেন সেটিও এরই মধ্যে নিশ্চিত হতে পারে।
সূত্র: মানবজমিন।
মন্তব্য করুন