আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
চীনের ২৬টি টেক্সটাইল কোম্পানির ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে ওয়্যারহাউজ ফ্যাসিলিটির আওতায় চীনের তুলা আমদানি করবে না ওয়াশিংটন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে হোয়াইট হাউস এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, চীনের উইঘুর সংখ্যালঘুদের দিয়ে জোর করে পণ্য তৈরি করায় চীন। ওই সব পণ্য নিজেদের সরবরাহ চেইন থেকে সরাতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এর আগে চীনের টেলিকম সরঞ্জাম ও বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি (ইভি) খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
সিএনএনের প্রতিবেদেন বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র উইঘুর ফোর্সড লেবার প্রিভেনশন অ্যাক্ট এনটিটি লিস্টে এবার চীনের ২৬টি কোম্পানিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলে সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে এসব কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে ওয়াশিংটনের চীনা দূতাবাস যুক্তরাষ্ট্রের এ নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলের স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করবে। ২০২১ সালে উইঘুর ফোর্সড লেবার প্রিভেনশন অ্যাক্ট এনটিটি লিস্ট পাস করে যুক্তরাষ্ট্র।
মন্তব্য করুন
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠন হয় অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। এই ১২ মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের ১২টি বড় সাফল্যের তথ্য জানালেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি সাফল্যের বিষয়গুলো উল্লেখ করেন।
১. শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা
জুলাই বিপ্লবের পর দেশে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরেছে, যার ফলে নৈরাজ্য ও প্রতিশোধের চক্র বন্ধ হয়েছে। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নৈতিক নেতৃত্ব ছিল এই স্থিতিশীলতার মূল চালিকাশক্তি, যা জাতিকে সহিংসতা নয়; বরং পুনর্মিলন ও গণতন্ত্রের পথে পরিচালিত করেছে।
২. অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার
ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বড় ভূমিকা রেখেছে এই সরকার। খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ শতাংশ থেকে প্রায় অর্ধেকে নামানো হয়েছে।
সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ৮.৪৮ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে (যা ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন), রেমিট্যান্সে রেকর্ড ৩০.৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, রপ্তানি ৯ শতাংশ বৃদ্ধি, বহু বছর পর টাকার মান ডলারের বিপরীতে বেড়েছে এবং ব্যাংক খাত স্থিতিশীল হয়েছে।
৩. বাণিজ্য ও বিনিয়োগে অগ্রগতি
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সফল শুল্ক আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন, দুর্বল সরকার এটি পারবে না। কিন্তু এই সকার সেটি করে দেখিয়েছে।
উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ অর্জন (যেমন হানদা গ্রুপের ২৫ কোটি ডলারের টেক্সটাইল বিনিয়োগে ২৫ হাজার কর্মসংস্থান), এবং আগের সরকারের চেয়ে দ্বিগুণ এফডিআই প্রবাহ। চীনা বিনিয়োগকারীরাও বাংলাদেশে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
৪. গণতান্ত্রিক সংস্কার ও জুলাই সনদ
সংস্কার কমিশন গঠন, ৩০টির বেশি রাজনৈতিক দলের মধ্যে জাতীয় ঐক্য তৈরি এবং ঐতিহাসিক জুলাই সনদ চূড়ান্ত করা হয়েছে, যা প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতা ও ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদের ফিরে আসা রোধে সুরক্ষা দিচ্ছে। জুলাই সনদ গণতন্ত্রের নতুন যুগের সূচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
৫. জুলাই হত্যাযজ্ঞের বিচার
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের স্বচ্ছ বিচার শুরু হয়েছে, যাতে দোষীদের জবাবদিহির আওতায় আনা হচ্ছে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে।
এখন পর্যন্ত চারটি প্রধান বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শেখ হাসিনার বিচারও শুরু হয়েছে।
৬. নির্বাচন পরিকল্পনা ও সংস্কার
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রবাসী, নতুন ভোটার এবং নারীদের অন্তর্ভুক্তির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। নাগরিক মতামতের জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু হচ্ছে। প্রায় ৮ লাখ পুলিশ, আনসার ও সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা করা হয়েছে যাতে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করা যায়।
৭. প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনগত সংস্কার
বিচার বিভাগ: সংস্কারমুখী নিয়োগের মাধ্যমে স্বাধীনতা নিশ্চিত।
পুলিশ: মানবাধিকার সেল, বডিক্যাম, স্বচ্ছ জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষ এবং জাতিসংঘ মানদণ্ডের প্রতিবাদ ব্যবস্থা।
আইন: দেওয়ানি ও ফৌজদারি কার্যবিধিতে ব্যাপক পরিবর্তন, গ্রেপ্তারের ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবারকে জানানো বাধ্যতামূলক, আইনজীবী ও চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত, অনলাইন জিডি চালু।
৮. সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও ইন্টারনেট অধিকার
দমনমূলক সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল, সব সাংবাদিক মামলা প্রত্যাহার, সমালোচনার স্বাধীনতা নিশ্চিত এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের অধিকারকে প্রথমবারের মতো মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
৯. পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন
একক দেশের ওপর নির্ভরতা থেকে সরে এসে বহুমাত্রিক ও ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি গড়ে তোলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, চিকিৎসা সহায়তা ও সংকট মোকাবিলায় সহযোগিতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সার্ক পুনরুজ্জীবন ও আসিয়ান সদস্যপদ অর্জনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
১০. প্রবাসী ও শ্রমিক অধিকার
সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা পুনরায় চালু, মালয়েশিয়ার মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা চালু, উপসাগরীয় দেশে অনিয়মিত কর্মীদের বৈধতা প্রদান, জাপানে ১ লাখ তরুণ পাঠানোর পরিকল্পনা এবং ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, সার্বিয়া-তে শ্রমিক পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
১১. শহীদ ও আহত বিপ্লবীদের সহায়তা
জুলাই বিপ্লবের শহীদ ও আহতদের তালিকা প্রণয়ন। ৭৭৫টি শহীদ পরিবারের মাঝে প্রায় ১০০ কোটি টাকা সঞ্চয়পত্র ও ভাতা প্রদান, ১৩ হাজার ৮০০ জন আহত বিপ্লবীর জন্য ১৫৩ কোটি টাকার সহায়তা। গুরুতর আহতদের বিদেশে উন্নত চিকিৎসা ও পুনর্বাসন।
১২. সামুদ্রিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন
বঙ্গোপসাগরকে ‘জলভিত্তিক অর্থনীতির’ মূল সম্পদ ঘোষণা, চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধি (+২২৫ কনটেইনার দৈনিক হ্যান্ডলিং), উপকূলীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা সম্প্রসারণ এবং গভীর সমুদ্র মৎস্য আহরণ ও শিল্প প্রকল্পে বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব।
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫ টি বোয়িং বিমান কেনার অর্ডার দিয়েছে বাংলাদেশ। আজ রোববার সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুবুর রহমান।
মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরকার ২৫টি বোয়িংয়ের অর্ডার দিয়েছে। এর আগেও ১৪টি বোয়িং অর্ডার ছিল। এবার রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ ইস্যুকে মাথায় রেখে অর্ডার বাড়ানো হয়েছে।’
বানিজ্য সচিব বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক কমাতে তৃতীয় দফা আলোচনার জন্য চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার (২৮ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দেবে। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে থাকছেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমানসহ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক হার কমানোর লক্ষ্যে এই আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওয়াশিংটনে ২৯ ও ৩০ জুলাই ইউএসটিআরের (যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তর) অফিসে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সম্ভব হলে ৩১ জুলাই আরেকটি বৈঠক হতে পারে।’
শুল্ক আলোচনার অগ্রগতি প্রসঙ্গে সচিব বলেন, ‘রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ চুক্তির খসড়া পাওয়ার পর আমরা কয়েক দফায় কাজ করেছি। ওয়াশিংটনে দুই দফা সরাসরি বৈঠক হয়েছে, অনলাইনে সভা হয়েছে, আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকও করেছি। সব পক্ষের মতামত নিয়েই ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রকে চূড়ান্ত অবস্থান জানানো হয়েছে। সব খসড়ার জবাব দিয়ে আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি।’
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘এই আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর শুল্ক হার কমবে এবং ভারতের কিংবা ভিয়েতনামের তুলনায় বাংলাদেশের পণ্যের ওপর তুলনামূলক কম শুল্ক বসবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে দেশটি থেকে গম, তুলা এবং বোয়িং উড়োজাহাজ কেনার কথাও বলেন বাণিজ্য সচিব।
তিনি আরও বলেন, ‘বোয়িং কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্র সরকার নয়, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ভারত ও ভিয়েতনাম ১০০টি করে অর্ডার দিয়েছে, ইন্দোনেশিয়া দিয়েছে ৫০টি। তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী সরবরাহ করবে কোম্পানি। অর্ডার অনুযায়ী যাদের আগে দেয়া হয়েছে, তারা আগে পাবে। আমাদের কিছু বোয়িং অতিদ্রুত দরকার। হয়তো আগামী দুই এক বছরের মধ্যে কিছু বিমান হাতে পাওয়া যাবে।’
মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সরকারি ও বেসরকারি খাত মিলিয়ে দেশে ৯ মিলিয়ন টন গম আমদানি হয়। আগে কখনও এককভাবে কোনো দেশ থেকে তা আনা হতো না। কিন্তু এখন রেড সি সংকটে সরবরাহ চেইনে পরিবর্তন এসেছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ওপর নির্ভরতা বাড়াতে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির চুক্তি ইতিমধ্যেই হয়েছে। তুলার ক্ষেত্রেও তাদের কাছ থেকেই আমদানি চলছে, যদিও সেটা কিছুটা কমেছে। বেসরকারি খাত সয়াবিন তেল আমদানির পরিকল্পনা করছে, এ নিয়েও তারা যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসবে।’
বাংলাদেশের মার্কিন নির্ভরতা বাড়লে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হবে কি না এমন প্রশ্নে বাণিজ্য সচিব বলেন, ‘আমরা যদি আরেকটি দেশ থেকে সুবিধাজনক পণ্য আমদানি করি, তাতে চীন বা অন্য কোনো দেশের সঙ্গে টানাপোড়েন হবে না। ব্যবসায়িক বাস্তবতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির কারণে চীনের ওপর সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ছে। উৎপাদন স্থানান্তর হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এর কিছু অংশ আমরা বাংলাদেশে টানতে পারি।’
বাণিজ্য সচিব বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যেসব আলোচনা চলছে, সেখানে বিনিয়োগ ইস্যু থাকলেও সেটা মুখ্য নয়। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সঙ্গে ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতিতে রয়েছে। সেটি কমানোর লক্ষ্যেই তারা রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ নীতিতে যাচ্ছে।’
তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য কেনার কারণে দেশের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। ব্যবসায়ীরা সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করেই আমদানি করছেন। সরকার কাউকে চাপ দিচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে ব্যবসায়িক স্বার্থই প্রধান বিবেচনা।’
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সংক্রান্ত ইস্যুতে রাজনীতি কোনওভাবে প্রবেশ করবে না। যারা প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে পণ্য সরবরাহ করবে, দ্রুত সরবরাহ করবে এবং মানসম্মত পণ্য দেবে, তাদের কাছ থেকে পণ্য কেনা হবে। সেটা ভারত বা অন্য কোনো দেশ হতে পারে। তিনি আরও বলেন, আগামী রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকবে।
তিনি জানান, ভারত থেকে চাল আমদানি করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া হয়নি। তবে ভারত, মিয়ানমার এবং ভিয়েতনামের সঙ্গে আলোচনা চলছে, এবং এসব বিষয়ে রাজনীতি কোনওভাবেই সংযুক্ত হবে না।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "হ্যাঁ, দাম স্বস্তি থাকবে। খেজুরের এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) হয়ে গেছে, এবং খেজুর চলে আসবে।"
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, "যে স্থিতিশীলতা আশা করা হচ্ছে, তা পূর্ণভাবে আসেনি, তবে দাম কিছুটা কমছে। বর্তমানে চাল ও মসুর ডাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এগুলো খাদ্যদ্রব্য, এবং এর আগেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।"
তিনি বলেন, "ভবিষ্যতের দামের বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। সয়াবিন তেলের দাম অনেক বেড়ে গেছে, এ ব্যাপারে আমরা আলোচনা করছি, এবং ইতোমধ্যে কিছু সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে। আমরা সব ধরনের শুল্ক কমিয়ে দিয়েছি। তাই একটু ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন।"
পশ্চিমবঙ্গের একজন রাজনীতিবিদ বলেছেন যে, বাংলাদেশে কিছু রপ্তানি করা হবে না। সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "এটা কূটনীতিকরা দেখবেন। ভারতে যখন অতিরিক্ত চাল বা পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়, তখন তারা কোথায় বিক্রি করবে, তা তারাই ঠিক করবেন।"
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, "সাপ্লাই চেইনে অনেক বিষয় জড়িত। অনেক মানুষ যুক্ত থাকে, পরিবহন, বাজার ইত্যাদি বিষয়গুলো ঠিক না হলে তো পণ্য গুদামে পড়ে থাকবে, তবে তা তো ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে হবে।"
বাজারে পাঁচ লিটার বোতলের সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না, এমন তথ্য দেওয়া হলে তিনি বলেন, "এটা একটু সমস্যা হয়েছে। সয়াবিন তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক বেড়ে গেছে।"
সিন্ডিকেটের বিষয় নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "সিন্ডিকেট এক জায়গায় থাকে না। চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট, পরিবহণ সিন্ডিকেট, রাজনৈতিক সিন্ডিকেট—সবই রয়েছে। আমি সবসময় বলি, রাজনৈতিক সমঝোতা করা খুব কঠিন, কিন্তু চাঁদাবাজির সমঝোতা করা অনেক সহজ।"
ট্যাক্স কমানোর পরও প্রভাব পড়ছে না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "এটাই আমার জন্য চিন্তার বিষয়। আমি তো সবকিছুর ওপর শুল্ক শূন্য করে দিয়েছি, তবে তাতে সঠিক ফল পাচ্ছি না।"
মন্তব্য করুন
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে শুধু নির্বাচন কমিশনের জন্য ৫ সদস্যের সিলেকশন কমিটি গঠনের সঙ্গে একমত বিএনপি। এজন্য একটা সার্চ কমিটি গঠন করার সুপারিশ করা হয়েছে।
আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৮ তম দিন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা শুধুমাত্র সংবিধানে উল্লেখ থাকলেই যথেষ্ট নয়, তার কার্যকর স্বাধীনতা উপযুক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে নিশ্চিত করতে হবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা অতীতে বলে এসেছি যে, প্রতিটি সাংবিধানিক এবং সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের জন্য সংবিধানে আলাদা করে নিয়োগ প্রক্রিয়া না এনে, সংশ্লিষ্ট আইনের মাধ্যমে সেসব প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আচরণবিধি নিশ্চিত করতে হবে। তবে, নির্বাচন কমিশনের বিষয়টি সংবিধানে আলাদা করে উল্লেখ করা যায়- এই ক্ষেত্রে আমরা একমত।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য জানায়, সংলাপে সব পক্ষের আলোচনার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট সিলেকশন কমিটি গঠনের প্রস্তাব চূড়ান্ত রূপ পেয়েছে। এই কমিটিতে থাকবেন- জাতীয় সংসদের স্পিকার (সভাপতি), বিরোধী দল থেকে নির্বাচিত ডেপুটি স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা এবং প্রধান বিচারপতির মনোনীত একজন আপিল বিভাগের বিচারপতি।
এই কমিটি নির্বাচন কমিশনের জন্য প্রার্থী খুঁজে বের করতে একটি অনুসন্ধান প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে, যেখানে সিভিল সোসাইটি, রাজনৈতিক দল ও সাধারণ জনগণ নাম জমা দিতে পারবে। সংসদে একটি আইন প্রণয়ন করে এই অনুসন্ধান বা সার্চ কমিটির কাঠামো নির্ধারণ করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এই সার্চ কমিটি জীবনবৃত্তান্ত যাচাই-বাছাই করে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রস্তুত করবে এবং সেটি সিলেকশন কমিটির কাছে পাঠাবে। কমিটি চাইলে এই তালিকা থেকে অথবা নিজেরা আরও প্রার্থী বিবেচনায় নিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে কমিশনারদের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে।’
মন্তব্য করুন
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সবচেয়ে বেশি ভেঙে পড়েছে বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা। ভোটের প্রতি আগ্রহ হারিয়েছে মানুষ। এই অবস্থায় আসন্ন নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসা। আর সেই চ্যালেঞ্জটাই নিতে চান প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন।
ভেঙে পড়া নির্বাচন ব্যবস্থার উত্তরণে দেশের সব মানুষের সহযোগিতা চেয়েছেন এই প্রধান নির্বাচন কমিশনার। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে তার কমিশন।
সোমবার ঢাকার সাভারে ‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারযোগ্যদের তথ্য সংগ্রহ শুরুর মাধ্যমে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি’ উদ্বোধনকালে সিইসি বলেন, ‘ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা জনগণের সহযোগিতা চাই। নির্বাচনী অনিয়ম রুখতে এবং সত্যিকারের নির্বাচন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে নির্বাচন কমিশন।’
সিইসি জানান, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারযোগ্যদের তথ্য সংগ্রহের এই কর্মসূচি চলবে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এরপর বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ, ছবি তোলা এবং অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। সবকিছু শেষ করে জুনের মধ্যে হালনাগাদ কাজ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি অথবা তার আগে যাদের জন্ম হয়েছে, অথচ ভোটার তালিকায় নাম নেই, তাদের অন্তর্ভুক্তির সুযোগ থাকছে। একইসঙ্গে মৃত ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া এবং ঠিকানা পরিবর্তনের সুবিধাও রাখা হয়েছে।
নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জনগণের আস্থা ফেরানোর উপর জোর দিয়ে সিইসি বলেন, ‘যেদিন মানুষ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভয়ভীতিহীন পরিবেশে ভোট দিতে পারবে, সেদিনই ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই সংগ্রাম আজ থেকে শুরু হলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভোটের দিন অনিয়ম প্রতিরোধে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। ভোটকেন্দ্র দখল কিংবা ব্যালট বাক্স লুটের মতো অনিয়মের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি।’
তরুণদের ভোটের প্রতি আগ্রহ ফেরানোর আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘অনেক তরুণ জানিয়েছেন, তারা ভোট দিতে পারেনি। তাদের ভোটের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চাই। এটাই আমাদের যাত্রার সূচনা।’
ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়ে অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে জানে। আমরা জনগণের সাথে আছি এবং তাদের পাশে থেকে সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করবো।’
সরকার প্রধানের দেওয়া সম্ভাব্য সময়সূচি অনুযায়ী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইসি সেই সময়কে মাথায় রেখে কাজ করছে বলে জানান সিইসি। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে আগামী জুলাই-আগস্টের মধ্যে নির্বাচনের দাবি করা হয়েছে।
সিইসি বলেন, ‘এ যাত্রা লম্বা হতে পারে। তবে আমরা জনগণকে সাথে নিয়ে নির্ভুল ও সুষ্ঠু নির্বাচনী ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।’
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) মিটারের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি টাকা আদায় করলে জরিমানা বা কারাদণ্ডের নির্দেশনা দিয়েছিল। তবে পরবর্তীতে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বিআরটিএ এবং সিদ্ধান্তটি বাতিল করে সংস্থাটি।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ৪ স্ট্রোক থ্রি-হুইলার যান সম্পর্কিত বিআরটিএ কর্তৃক ইস্যুকৃত সাম্প্রতিক নির্দেশনাটি বাতিল করা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করা হয়েছে এবং অবরোধ প্রত্যাহার করে যান চলাচলে কোনো রকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
এর আগে সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সিএনজি চালকদের অবরোধের কারণে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছিল। মিটারের ভাড়া ইস্যুতে সিএনজি চালকরা সড়ক অবরোধ করে যান চলাচলে বাধা দিচ্ছিলেন। রাজধানীর রামপুরা, মিরপুর ১৪ ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবরোধের খবর পাওয়া যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, অবরোধের কারণে রাজধানীজুড়ে প্রচণ্ড যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অনেকেই গন্তব্যে পৌঁছাতে দেরি করছেন।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, মিটারের ভাড়া বৃদ্ধি এবং মিটারে না চললে জরিমানার আইন বাতিল করতে হবে। বিআরটিএ এ সিদ্ধান্ত বাতিল না করা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলতে থাকবে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি মিটারের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি টাকা আদায় করলে চালকদের জরিমানা বা কারাদণ্ডের নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৩৫(৩) ধারা অনুযায়ী রুট পারমিটপ্রাপ্ত অটোরিকশাগুলো যেকোনও গন্তব্যে যাত্রী নিতে বাধ্য। চালকরা মিটারের চেয়ে বেশি ভাড়া দাবি বা আদায় করতে পারবেন না। যদি কেউ এই নিয়ম লঙ্ঘন করেন, তাহলে আইনের ৮১ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, ছয় মাসের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে। এ ছাড়া চালকের লাইসেন্স থেকে এক পয়েন্ট কেটে নেওয়ার বিধান রয়েছে।
বিআরটিএ’র তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় নিবন্ধিত অটোরিকশা রয়েছে ২০ হাজার ৮৯৪টি। ২০১৫ থেকে ২০২৪ সালের (১০ বছর) মধ্যে সবচেয়ে বেশি অটোরিকশা নিবন্ধন পেয়েছে ২০১৯ সালে। সে বছর নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে ৬ হাজার ৮৩৯টি অটোরিকশা। তার আগের বছর ২০১৮ সালে ৫ হাজার ৬৩৭টি অটোরিকশা নিবন্ধন দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন
প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চলতি মে মাসের প্রথম ১২ দিনে ৭৭ কোটি ৩৯ লাখ ৭০ হাজার (৭৭৩ মিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১০৮ টাকা)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই ও দ্বিতীয় মাস আগস্টে টানা দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল। পরে টানা ৬ মাস কেটে গেলেও দুই বিলিয়ন ডলারের মাইলফলকে পৌঁছাতে পারেনি রেমিট্যান্স।
অবশেষে অর্থবছরের নবম মাস মার্চে দুই বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করে প্রবাসী আয়। তবে পরের মাস এপ্রিলে আবারও হোঁচট খায়; ওই মাসে আসে ১৬৮ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স।
এদিকে চলতি মে মাসের ১২ দিনে ৭৭ কোটি ৩৯ লাখ ৭০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। প্রতি ডলার ১০৮ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রার যার পরিমাণ ৮ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা। আর প্রতিদিন আসছে প্রায় ৬ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। এভাবেই রেমিট্যান্সের ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে দুই বিলিয়নের মাইলফলকে যাবে রেমিট্যান্স।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, প্রবাসীদের বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। সামনে কোরবানির ঈদ আছে। এতে প্রবাসীরা নিজ নিজ পরিবারের কোরবানি ও কেনাকাটায় প্রচুর টাকা পাঠিয়ে থাকেন। আশা করা যায় চলতি মাস (মে) ও আগামী মাসে রেমিট্যান্স ভালো অবস্থান ধরে রাখবে।
মন্তব্য করুন
গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত না দিলে সেটি প্রত্যর্পণ চুক্তির লঙ্ঘন হবে, এমন মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ আইনসহ অন্যান্য সমসাময়িক বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরত আনার বিষয়ে অগ্রগতি কতদূর জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আমরা প্রত্যর্পণের জন্য চিঠি পাঠিয়েছি। এরপর ভারত যদি শেখ হাসিনাকে ফেরত না নেয়, তবে সেটি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হবে। এই ব্যাপারে আমরা কী পদক্ষেপ নেবো, তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।"
তিনি আরও বলেন, "ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। আমরা যা কিছু করণীয়, তা করেছি এবং আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে হলে আমরা তা প্রয়োজনে গ্রহণ করবো।"
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এরপর তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের হয়। এদিকে, তাকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার উদ্যোগী হয়ে রয়েছে।
গত ২৩ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার বিষয়ে ভারতকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল ওইদিনই কূটনৈতিক চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে, শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে গত ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার মহেশ সাচদেব বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সরকার কর্তৃক প্রত্যর্পণ অনুরোধের বিরুদ্ধে আদালতে যেতে পারেন।
তিনি আরো বলেন, "যেমন ইউরোপীয় কয়েকটি দেশ ভারতের প্রত্যর্পণ অনুরোধ বিভিন্ন শর্তে প্রত্যাখ্যান করেছে, শেখ হাসিনাও একইভাবে বলতে পারেন যে, তিনি তার দেশের সরকারের ওপর আস্থা রাখেন না এবং তার বিরুদ্ধে অবিচারের আশঙ্কা রয়েছে।"
মন্তব্য করুন
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে কানাডায় নাগরিকত্বের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালকের পদ পেতে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার এবং নিয়মবহির্ভুত কার্যকলাপের আশ্রয় নেয়া হয়েছিল বলেও দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে দুদক জানায়, যৌক্তিক কারণ ছাড়াই সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সফরের সঙ্গী করা হয়েছে। তার ক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতা হিসেবে দেয়া তথ্যাদি যথাযথ ছিল না। এছাড়া পুতুল পাসপোর্টধারী কানাডার নাগরিক ছিলেন বলেও তথ্য পাওয়া গেছে।
পুতুল পারিবারিক রাজনৈতিক প্রভাবের অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে বেআইনিভাবে ঢাকার ‘পূর্বাচল নতুন শহর আবাসিক প্রকল্প’-এর ডিপ্লোমেটিক জোনে ১০ কাঠা প্লট আয়ত্ব করেন। এরই মধ্যে তার ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়েছে।
বিবৃতিতে দুদক আরও জানায়, এছাড়া পুতুল ‘সূচনা ফাউন্ডেশন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান খুলে বিভিন্ন সামাজিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে জোরপূর্বক উপঢৌকন আদায় ও অর্থ আত্মসাত করেছেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের আওতায় অটিস্টিক সেলকে ব্যবহার করে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে রাষ্ট্রের বিপুল অর্থ লুফে নিয়ে নিজে লাভবান হয়েছেন।
তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওপর অবৈধ প্রভাব বিস্তার করে ফাউন্ডেশনের নামে প্রাপ্য অর্থ করমুক্ত করিয়ে নেন। এতে সরকারের বিপুল অর্থে ক্ষতি হয়েছে।
মন্তব্য করুন