গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত না দিলে সেটি প্রত্যর্পণ চুক্তির লঙ্ঘন হবে, এমন মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ আইনসহ অন্যান্য সমসাময়িক বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরত আনার বিষয়ে অগ্রগতি কতদূর জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আমরা প্রত্যর্পণের জন্য চিঠি পাঠিয়েছি। এরপর ভারত যদি শেখ হাসিনাকে ফেরত না নেয়, তবে সেটি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হবে। এই ব্যাপারে আমরা কী পদক্ষেপ নেবো, তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।"
তিনি আরও বলেন, "ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। আমরা যা কিছু করণীয়, তা করেছি এবং আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে হলে আমরা তা প্রয়োজনে গ্রহণ করবো।"
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এরপর তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের হয়। এদিকে, তাকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার উদ্যোগী হয়ে রয়েছে।
গত ২৩ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার বিষয়ে ভারতকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল ওইদিনই কূটনৈতিক চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে, শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে গত ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার মহেশ সাচদেব বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সরকার কর্তৃক প্রত্যর্পণ অনুরোধের বিরুদ্ধে আদালতে যেতে পারেন।
তিনি আরো বলেন, "যেমন ইউরোপীয় কয়েকটি দেশ ভারতের প্রত্যর্পণ অনুরোধ বিভিন্ন শর্তে প্রত্যাখ্যান করেছে, শেখ হাসিনাও একইভাবে বলতে পারেন যে, তিনি তার দেশের সরকারের ওপর আস্থা রাখেন না এবং তার বিরুদ্ধে অবিচারের আশঙ্কা রয়েছে।"
মন্তব্য করুন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস মন্তব্য করেছেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে কিছু নেই।
বুধবার (২৬ মার্চ) সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ৭১ এর বীর সেনানীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
এদিন মির্জা আব্বাস জানান, ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে কিছু নেই, যারা দ্বিতীয় স্বাধীনতার কথা বলে তারা আজকের দিনকে খাটো করে দেখাতে চায়। তাদের মুক্তিযুদ্ধে কোনো ভূমিকা ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজনীতির মাঠে সবাই সব দলের প্রতিপক্ষ। দলগতভাবে মতভেদের পার্থক্য থাকলেও দেশের প্রয়োজনে সবার ঐক্য একই থাকবে।’
এদিকে, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, ৭১ দেশকে জন্ম দিয়েছে, তবে বিগত সময়ে স্বাধীনতার ধারণা নষ্ট করা হয়েছে। একাত্তরে অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষা করতেই চব্বিশের অভ্যুত্থান হয়েছে।
মন্তব্য করুন
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের মধ্যে বর্তমানে প্রায় ৭০০ জন এখনও পলাতক অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে জরুরি সেবা (হটলাইন) উদ্বোধন উপলক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, "৭০০ জনের মতো বন্দি কারাগার থেকে বের হয়ে গেছে, তবে তারা এখনও ধরা পড়েনি। যারা ছিল, তারা এখন কারাগারে রয়েছে।"
একই সময়, তিনি চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের প্রসঙ্গেও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, "ছিনতাই ও চাঁদাবাজি অস্বীকার করছি না, তবে যারা এসব করছে, তারা ধরা পড়ছে। আবার, যারা পালিয়ে যাচ্ছে, তারা এসব কাজ করছে, যা সত্যি কথা। আমরা চেষ্টা করছি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি কমিয়ে আনার জন্য।"
পুলিশের স্বল্পতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "পুলিশের সংখ্যা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই, তবে আগের মতো কাজের উদ্যম নেই। তাদের উদ্যম বাড়ানোর জন্য আমরা সর্বদা চেষ্টা করে যাচ্ছি।"
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, জামিনে বেরিয়ে আসা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, "তাদের দ্রুত ধরা হয়ে আইনের আওতায় আনা হবে।"
৫ আগস্টের পর অনেক দাগী আসামিকে ক্ষমা করা হয়েছে, এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, "সাধারণ ক্ষমায় কেউ বের হয়নি, তারা জামিনে বের হয়েছে।"
এছাড়া, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, এখন থেকে ০৯৬১২০২১৬৯০ নম্বরের মাধ্যমে বন্দিদের অবস্থান, প্যারোলে মুক্তি, শারীরিক অবস্থা, হাজিরা, সাক্ষাৎকার ও কথা বলার তারিখের তথ্য পাওয়া যাবে। বন্দির স্বজনরা এই নম্বরে ফোন করে সমস্ত তথ্য জানতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের জরুরি সেবা সার্ভিসে নিয়োগ দিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
মন্তব্য করুন
সরকারের নির্দেশে মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদের অনুসারীদের বিশ্ব ইজতেমার মাঠ ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সরকার ধর্মীয় স্বার্থে উস্কানিমূলক বক্তব্য থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, কামারপাড়া, আবদুল্লাহপুর, উত্তরা, এবং তুরাগ নদীর দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইজতেমা মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় পরিস্থিতি সামাল দিতে সাদপন্থিরা মাঠ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান রেজা আরিফ।
তিনি বলেন, সরকার সতর্ক করে দিয়েছে যে, দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। সংঘর্ষ এড়াতে সরকারের অনুরোধে সম্মান জানিয়ে উভয় পক্ষকে মাঠ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাঠের নিয়ন্ত্রণ সরকার নিজ হাতে নেবে এবং কোনো পক্ষকেই সেখানে অবস্থান করতে দেওয়া হবে না।
এর আগে, বুধবার ভোরে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। তারা হলেন—কিশোরগঞ্জের বাচ্চু মিয়া (৭০), বগুড়ার তাইজুল ইসলাম (৬৫) এবং ঢাকার বেলাল (৬০)। সংঘর্ষে আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমার প্রস্তুতি নিতে সাদ অনুসারীরা মাঠে প্রবেশের চেষ্টা করলে জুবায়েরপন্থিদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। মঙ্গলবার রাত তিনটার পর সাদপন্থিরা কামারপাড়া ব্রিজ পার হয়ে মাঠে প্রবেশ করে। এসময় জুবায়েরপন্থিদের বাধা উপেক্ষা করে তারা বিদেশি নিবাসের গেট খুলে মাঠে ঢোকে এবং সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের উপদেষ্টারা একটি জরুরি বৈঠক করেন। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, তথ্য উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এবং ধর্ম উপদেষ্টা আ ক ম খালিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
সরকারের এই সিদ্ধান্ত উভয় পক্ষের সংঘর্ষ এড়াতে এবং ইজতেমার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে নেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন
বর্তমান রাষ্ট্র কাঠামো ও অর্থনৈতিক কাঠামোর পরিবর্তন দরকার। যেটা রাতারাতি পরিবর্তন সম্ভব নয়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এটি সংস্কার করতে হবে। শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গেলো ১৫ বছরে দেশের মানুষের সব স্বপ্নকে গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে। অর্থনীতি, গণতন্ত্র ও রাজনীতির কাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে। জবাবদিহিতার অভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট করা হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের পুনর্গঠনে সব সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সবাই মিলে সহযোগিতা করছে বলেই সরকার চলছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিলম্ব না করে অতিদ্রুত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে যেতে হবে। যৌক্তিক কারণে নির্বাচন চায় বিএনপি। অর্থনীতি ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে জিয়াউর রহমান বড় পরিবর্তন নিয়ে এসেছেন, যা পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ট্রাম্পের ট্যারিফ আমাদের খুব বিপদে ফেলতে যাচ্ছে। এখান থেকে উত্তরণে বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা জরুরি।
মন্তব্য করুন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সব শহিদকে জাতীয় বীর হিসেবে ঘোষণা করা হবে। একইসঙ্গে শহিদদের পরিবার, আহত যোদ্ধা ও আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতাকে সব ধরনের আইনি সুরক্ষা দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে বিষয়টি উঠে আসে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সকল শহীদকে জাতীয় বীর হিসেবে ঘোষণা করে শহীদদের পরিবার, আহত যোদ্ধা এবং আন্দোলনকারী ছাত্রজনতাকে প্রয়োজনীয় সকল আইনি সুরক্ষা দেওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করছে।
মন্তব্য করুন
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে কানাডায় নাগরিকত্বের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালকের পদ পেতে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার এবং নিয়মবহির্ভুত কার্যকলাপের আশ্রয় নেয়া হয়েছিল বলেও দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে দুদক জানায়, যৌক্তিক কারণ ছাড়াই সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সফরের সঙ্গী করা হয়েছে। তার ক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতা হিসেবে দেয়া তথ্যাদি যথাযথ ছিল না। এছাড়া পুতুল পাসপোর্টধারী কানাডার নাগরিক ছিলেন বলেও তথ্য পাওয়া গেছে।
পুতুল পারিবারিক রাজনৈতিক প্রভাবের অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে বেআইনিভাবে ঢাকার ‘পূর্বাচল নতুন শহর আবাসিক প্রকল্প’-এর ডিপ্লোমেটিক জোনে ১০ কাঠা প্লট আয়ত্ব করেন। এরই মধ্যে তার ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়েছে।
বিবৃতিতে দুদক আরও জানায়, এছাড়া পুতুল ‘সূচনা ফাউন্ডেশন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান খুলে বিভিন্ন সামাজিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে জোরপূর্বক উপঢৌকন আদায় ও অর্থ আত্মসাত করেছেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের আওতায় অটিস্টিক সেলকে ব্যবহার করে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে রাষ্ট্রের বিপুল অর্থ লুফে নিয়ে নিজে লাভবান হয়েছেন।
তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওপর অবৈধ প্রভাব বিস্তার করে ফাউন্ডেশনের নামে প্রাপ্য অর্থ করমুক্ত করিয়ে নেন। এতে সরকারের বিপুল অর্থে ক্ষতি হয়েছে।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার শেষে রায় হলে শেখ হাসিনার দেশে ফেরার বিষয়ে ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানানো হবে। তিনি এ বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি আন্তর্জাতিক আইনের উল্লেখ করে বলেন, "ভারত এ আইন মেনে কাজ করতে বাধ্য হবে।"
গত শনিবার নিক্কেই এশিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস। সোমবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়।
তিনি বলেন, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার সবকিছু ধ্বংস করে গেছে, নির্বাচনের আগে আমাদের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা, আমলাতন্ত্র ও বিচারব্যবস্থায় ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন। এ জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনি ব্যবস্থা, সংবিধান এবং বিচার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে। জানুয়ারির মধ্যে ওই কমিশনগুলোর সুপারিশ হাতে পাওয়ার পর পূর্ণাঙ্গ সংস্কার বাস্তবায়ন করার কথা জানান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তবে এ সংস্কার বাস্তবায়নে কিছুটা সময় লাগবে।
তিনি বলেন, "নতুন বাংলাদেশ" গড়তে আমরা একেবারে শূন্য থেকে শুরু করেছি, তাই সংস্কার বাস্তবায়নে সময় লাগবে।
নির্বাচন কখন হবে তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেছেন, "নির্বাচনের সময় নির্ভর করবে সংস্কার প্রক্রিয়ার ওপর। এর ফলাফলই সময় নির্ধারণ করবে।"
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সাধারণ নির্বাচনে ড. ইউনূস প্রার্থী হবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, "না, আমি রাজনীতিবিদ নই। আমি সবসময় রাজনীতি থেকে দূরে থেকেছি।" তিনি মনে করেন, রাষ্ট্রের যেসব ব্যক্তি নীতি-নৈতিকতা সমুন্নত রাখেন, নিয়ম-কানুন মেনে চলেন এবং দুর্নীতিমুক্ত থাকেন, তারা নির্বাচনে দাঁড়ানো উচিত।
ড. ইউনূস বলেন, হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে দেশের শাসনকাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে, আর গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করে তা পুনর্গঠন করার বিরাট কাজ এখন আমাদের করতে হবে।
তিনি বলেন, "হাসিনার শাসনামলে গণতন্ত্রের রীতি-নীতি একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে। টানা তিন মেয়াদে ভোটারবিহীন ভুয়া নির্বাচন আয়োজন করা হয়েছে, যাতে হাসিনা এবং তার দল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। একজন ফ্যাসিবাদী শাসক হিসেবে এসব করেছেন হাসিনা।"
ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, "এ বছর আগস্টে ছাত্রনেতৃত্বাধীন সরকারি চাকরিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে কয়েকশ শিক্ষার্থী নিহত হন। এরপর শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন হাসিনার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। শেষ পর্যন্ত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে হাসিনার ১৫ বছরের শাসন শেষ হয়। তিনি হেলিকপ্টারে চড়ে ভারতে পালিয়ে যান। অক্টোবরে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা এবং তার বেশ কয়েকজন সহযোগীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।"
কূটনৈতিক ফ্রন্টে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী ও সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়। এ ক্ষেত্রে ড. ইউনূস দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) পুনরুজ্জীবনের প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি ভারত ও পাকিস্তানের বৈরী সম্পর্কের কারণে সার্ক কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, সার্কের লক্ষ্য হলো, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর মতো নিজেদের মধ্যে চলাফেরার স্বাধীনতা এবং আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য উৎসাহিত করা। তিনি ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন।
হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগের বিষয়ে ড. ইউনূস বলেছেন, "সংখ্যালঘু ইস্যুতে যা বলা হচ্ছে তার বেশিরভাগই প্রোপাগান্ডা।" তিনি দাবি করেন, এসব তথ্য সঠিক নয়। তিনি ভারতীয় সাংবাদিকদের বাংলাদেশে এসে সঠিক তথ্য সংগ্রহের আহ্বান জানান এবং বলেন, "আমরা এসব অপ-তথ্যের বিরুদ্ধে ভারত সরকারকে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য কাজ করছি।"
অন্য আঞ্চলিক সম্পর্কের বিষয়ে ড. ইউনূস চীনকে "আমাদের বন্ধু" হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, "সড়ক ও বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ থেকে শুরু করে সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত চীন আমাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে।"
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ বেইজিংয়ের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
ড. ইউনূস দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সংস্থা (আসিয়ানে) বাংলাদেশের যোগদানের বিষয়ে জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, "বাংলাদেশ আসিয়ানে যোগ দেওয়ার বিষয়ে একটি প্রতিশ্রুতিশীল সুযোগ হিসেবে এটি গ্রহণ করতে চায়, বিশেষ করে ২০২৬ সালে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসার পর।"
তিনি জানান, মালয়েশিয়া আগামী জানুয়ারিতে আসিয়ানের সভাপতি হতে যাচ্ছে এবং তিনি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তার দমন-পীড়ন থেকে বাঁচতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, "এই দায় (রোহিঙ্গা) বাংলাদেশ কতদিন বহন করবে?" তিনি বলেন, "রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আমাদের একটি সুস্পষ্ট গন্তব্য এবং অভিন্ন লক্ষ্য ঠিক করা দরকার।"
বাংলাদেশ মিয়ানমারে জাতিসংঘ-শাসিত একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে, যাতে রোহিঙ্গারা সেখানে নিরাপদে থাকতে পারে এবং তাদের দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে তারা নিজেদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারে।
মন্তব্য করুন
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, বিশ্ব ইজতেমা যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘ইজতেমা নিয়ে সহিংসতার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। সাদ ও জুবায়ের দুটি পক্ষই আমাদের সঙ্গে প্রেস ব্রিফিংয়ে ছিল। অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। কঠোর হাতে তাদের দমন করা হবে।’
তিনি আরও জানান, নির্বাচনসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, ‘১৮৫ জনের মতো পুলিশ সদস্য কাজে যোগ দেয়নি, এ সংখ্যা নগণ্য। বাকি পুলিশ সদস্যরা কার্যকরী অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য সশস্ত্র বাহিনী যেমন র্যাব, বিজিবি উপস্থিত রয়েছে। নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে কোনো অসুবিধা হবে না।’
সভায় মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত, পুলিশ সুপার শামসুল আলম সরকারসহ জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে। বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি যথাক্রমে ১৪ টাকা ও ১২ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সচিবালয়ে ভোজ্যতেলের আমদানি, সরবরাহ ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে এক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, "বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৮৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে, খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১২ টাকা বৃদ্ধি করে ১৬৯ টাকা করা হয়েছে।"
এছাড়া, পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৯২২ টাকা এবং খোলা পাম তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৬৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন এই দাম আজ থেকেই কার্যকর হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও জানান, বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ বাড়াতে ইতিমধ্যে দুটি তেল কোম্পানি উৎপাদন শুরু করেছে। শিগগিরই আরও ৬-৭টি কোম্পানি তেল উৎপাদনে যুক্ত হবে।
এর আগে, ১৩ এপ্রিল রাতে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিল। তবে সরকারি সিদ্ধান্ত না আসায় সেদিন দাম পরিবর্তন কার্যকর হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ৯ ডিসেম্বর সর্বশেষ বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
মন্তব্য করুন
আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগ পর্যন্ত সারা দেশে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, আমাদের অনেক অস্ত্র খোয়া গেছে। এগুলো উদ্ধার করতেই এই অভিযান চলছে এবং নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে।
আজ সোমবার দুপুরে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
৫ আগস্ট ঘিরে মানুষের মধ্যে কোনো আতঙ্ক রয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ৩ আগস্ট নিয়েও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছিল। আল্লাহর রহমতে কোনো সমস্যা হয়নি। বর্তমান সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হয়েছে এবং আগের তুলনায় অনেক ভালো অবস্থানে এসেছে।
তিনি আরও জানান, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত হলেও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি।
তবে তা উন্নত হয়েছে কি না, সেটা জনগণই ভালো বলতে পারবেন।
মন্তব্য করুন