আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন জনপ্রিয় গায়িকা বিয়ন্সে নোলস। শুক্রবার স্থানীয় সময়ে হিউস্টনের একটি জনসমাবেশে এ সমর্থন জানান তিনি।
বিয়ন্সে তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, "আমি এখানে একজন সেলিব্রিটি হিসেবে আসিনি, এবং একজন রাজনীতিবিদ হিসেবেও আসিনি। আমি এখানে এসেছি একজন মা হিসেবে।" তিনি বলেন, "একজন মা হিসেবে আমি চাই আমাদের সন্তানরা এমন একটি বিশ্বে বেড়ে উঠুক, যেখানে তাদের নিজেদের স্বত্বার ওপর নিয়ন্ত্রণের স্বাধীনতা থাকবে, যেখানে আমরা বিভক্ত নই—আমাদের অতীত, বর্তমান বা ভবিষ্যতের জন্য।"
হিউস্টনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে, বিয়ন্সে উপস্থিত সবাইকে আহ্বান জানান কমলা হ্যারিসকে নির্বাচিত করার জন্য এবং বলেন, “এবার আমেরিকার জন্য একটি নতুন গান গাওয়ার সময়।” এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস সৃষ্টি করেন।
এসমাবেশে বিয়ন্সের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তার সঙ্গী এবং অভিনেত্রী কেলি রাউল্যান্ডও। বিয়ন্সে তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, “এটি এমনই একটি গান, যা ২৪৮ বছর আগে শুরু হয়েছিল।”
ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের সমর্থনে বিয়ন্সের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের সংযুক্তি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যে আশাবাদী মনোভাব সৃষ্টি করেছে। তারা মনে করছেন, এটি কমলা হ্যারিসের প্রচারণাকে আরও শক্তিশালী করবে।
এদিকে, রিপাবলিকান প্রার্থী এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও টেক্সাসে তার দলের জন্য প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন, যা এই অঙ্গরাজ্যকে তার দলের জন্য একটি শক্তিশালী অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
প্রসঙ্গত, বিয়ন্সের মতো সেলিব্রিটিদের রাজনৈতিক সমর্থন নির্বাচনী প্রচারে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের মধ্যে। এর ফলে আগামী নির্বাচনে ডেমোক্রেট দলের জন্য পরিস্থিতি আরও সুবিধাজনক হতে পারে।
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মরুভূমির দেশ সৌদি আরবে নজিরবিহীন বৃষ্টি ও ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। যার ফলে দেশটির একাধিক শহরের রাস্তাঘাট ও আবাসিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি দেখা দিয়েছে।
সৌদি আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আবহাওয়ার এই নিম্নচাপ আরও কয়েক দিন ধরে চলতে পারে।
একসঙ্গে সৌদি আরবের জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র মঙ্গলবার দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন স্তরের সতর্কতা জারি করেছে। পবিত্র দুই শহর মক্কা ও মদিনা এবং পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। যা সবচেয়ে উচ্চ স্তরের সতর্কতার নির্দেশক।
এছাড়া রাজধানী রিয়াদ, মধ্যাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় আসির ও জাজান প্রদেশে কম মাত্রার কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তবে সেখানেও নাগরিকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে সৌদি আরবের রেড ক্রিসেন্ট অথরিটি এবং অন্যান্য উদ্ধার সংস্থাগুলো পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। রেড ক্রিসেন্ট নিশ্চিত করেছে যে, তাদের অ্যাম্বুলেন্স সেবা ও উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে তারা সর্বোচ্চ প্রস্তুত রয়েছে।
সৌদি কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের সতর্ক থাকার এবং বিশেষত লাল সতর্কতার আওতাভুক্ত এলাকায় নিরাপত্তা নির্দেশিকা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে।
অন্যদিকে সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ জনগণকে উপত্যকা, নিচু এলাকা এবং এমন জায়গা এড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে, যেখানে বৃষ্টির পানি জমা হতে পারে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা গেছে, বন্যার পানি রাস্তাঘাটের গাড়িগুলোকে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং ভবনগুলো ডুবে যাচ্ছে। প্রবল বৃষ্টি ও বজ্রঝড়ের কারণে পানি ক্রমশ বাড়ছে, যা সৌদি আরবে বিরল একটি দৃশ্য।
মন্তব্য করুন
দিল্লির ৪৪টি স্কুলে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বোমা হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। হুমকি পাওয়া স্কুলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ডিপিএস আরকে পুরাম এবং জিডি গোয়েঙ্কা স্কুল। খবর এনডিটিভির।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, হুমকি পাওয়ার পরপরই স্কুলগুলো থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপদে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়েছে। এই হুমকি ইমেইলের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। এনডিটিভি ওই ইমেইলের একটি কপি হাতে পেয়েছে।
ইমেইলটি রোববার রাত ১১টা ৩৮ মিনিটে পাঠানো হয়। সেখানে দাবি করা হয়েছে, স্কুল ভবনের ভেতরে একাধিক বোমা লুকিয়ে রাখা হয়েছে। ইমেইলে আরও বলা হয়েছে, বোমাগুলো আকারে ছোট হলেও সেগুলো অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে লুকানো হয়েছে।
ইমেইল প্রেরক বোমা নিষ্ক্রিয় করার জন্য ৩০ হাজার ডলার দাবি করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, বোমাগুলো ভবনে বড় কোনো ক্ষতি করবে না, তবে এতে বহু মানুষ আহত হতে পারে।
এই ঘটনার পর দিল্লি পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। সকালে যখন স্কুল বাসগুলো শিক্ষার্থীদের নিতে আসতে শুরু করে এবং অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে নামিয়ে দিতে আসেন, তখনই বোমা হামলার সতর্কতা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
জিডি গোয়েঙ্কা স্কুল থেকে দিল্লি ফায়ার ডিপার্টমেন্ট সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে প্রথম একটি বোমা হামলার হুমকির ফোন পায়। এরপর সকাল ৭টা ৬ মিনিটে ডিপিএস আরকে পুরাম স্কুল থেকেও ফোন আসে।
বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল, স্থানীয় পুলিশ এবং ফায়ার ডিপার্টমেন্টের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তল্লাশি শুরু করে। পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
জাতিসংঘের এইড চিফ মার্টিন গ্রিফিথস এক বিবৃতিতে বলেছেন, "বিশ্ব কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে রাফাহকে রক্ষা করার জন্য আবেদন জানালেও সেখানে অবিলম্বে একটি স্থল অভিযান চালানোর সম্ভাবনা রয়েছে। সহজ ভাষায় বললে, রাফাহতে স্থল অভিযান চালালে সেটি এমন এক ট্র্যাজেডি হবে যা ভাষায় বর্ণনা করা সম্ভব না।”
গাজার রাফাহতে অবস্থিত উদ্বাস্তুদের একটি ক্যাম্প।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) জাতিসংঘ সতর্ক করে জানিয়েছে, ইসরায়েল শীঘ্রই গাজার রাফাতে হামলা চালাতে পারে। সংস্থাটি জোর দিয়ে বলেছে, গাজায় সাহায্য প্রদানে ইসরায়েলের ধীর অগ্রগতিকে আক্রমণের জন্য প্রস্তুত হওয়ার বা ন্যায্যতা দেওয়ার একটি অজুহাত হিসেবে দেখা উচিত নয়।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইসরায়েলের ওপর প্রভাব আছে এমন দেশগুলোকে সম্ভাব্য হামলা প্রতিরোধ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। বর্তমানে ১.২ মিলিয়নেরও বেশি উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনি রাফাতে আশ্রয় নিয়েছেন।
প্রায় সাত মাসব্যাপী যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার জন্য হামাসের সর্বশেষ প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া যাই হোক না কেন মঙ্গলবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু একটি 'দীর্ঘ প্রতিশ্রুত' হামলা চালানো হবে বলে প্রতিজ্ঞা করেছেন।
জাতিসংঘের এইড চিফ মার্টিন গ্রিফিথস এক বিবৃতিতে বলেছেন, "বিশ্ব কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে রাফাহকে রক্ষা করার জন্য আবেদন জানালেও সেখানে অবিলম্বে একটি স্থল অভিযান চালানোর সম্ভাবনা রয়েছে। সহজ ভাষায় বললে, রাফাহতে স্থল অভিযান চালালে সেটি এমন এক ট্র্যাজেডি হবে যা ভাষায় বর্ণনা করা সম্ভব না।"
গাজার উত্তরাঞ্চলে মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষের প্রভাব কিছুটা কমানো সম্ভব হয়েছে বলে আন্তোনিও গুতেরেস জানালেও তিনি সেখানে আরো সাহায্য পাঠানোর ওপর জোর দিয়েছেন। গুতেরেস বিশেষভাবে ইসরায়েলের প্রতি গাজার উত্তরাঞ্চলের দুটি সংযোগস্থল খুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
মার্চ মাসে জাতিসংঘ-সমর্থিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গাজায় দুর্ভিক্ষ আসন্ন এবং সম্ভবত মে মাসের মধ্যে গাজার উত্তরাঞ্চলে গাজায় ও জুলাই মাসের মধ্যে ছিটমহলগুলোতে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়তে পারে। গুতেরেস বলেন, গাজার উত্তরাঞ্চলের অসহায় মানুষ "ইতোমধ্যেই ক্ষুধা ও রোগে মারা যাচ্ছে।"
সাহায্য বাড়াতে এবং রাফাহতে হামলা এড়াতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র ইসরায়েলের উপর কী প্রভাব রাখতে পারে এমন প্রশ্ন করা হলে গুতেরেস বলেন, "একটি সম্পূর্ণ বিধ্বংসী ট্র্যাজেডি এড়াতে সম্ভাব্য সব ধরনের চাপ প্রয়োগ করাই গুরুত্বপূর্ণ।"
মার্কিন সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, গাজায় সাহায্য বাড়ানোর জন্য ইসরায়েলকে যে পদক্ষেপ নিতে হবে তা নিয়ে তিনি বুধবার (১ মে) নেতানিয়াহুর সাথে আলোচনা করবেন।
৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় হাজারের ওপর মানুষ নিহত হয় এবং ২৫০ জনের বেশী মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। তারপরেই হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ও জিম্মিদের উদ্ধার করতে গাজায় সামরিক অভিযান চালানো শুরু করে ইসরায়েল। ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় মৃতের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে। রোহিঙ্গা জনগণের ওপর নির্যাতন চালিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করার অভিযোগে আইসিসির প্রসিকিউটর করিম খান এই আবেদন করেছেন।
গত সপ্তাহে করিম খানের অনুরোধে, দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আইসিসি। এই পরোয়ানা জারির পর, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক চাপের মুখে আছেন তিনি।
আইসিসির একটি তিন সদস্যবিশিষ্ট প্যানেল মিয়ানমারের জান্তা প্রধানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। তারা দেখবেন, মিন অং হ্লাইংয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য ‘উপযুক্ত কারণ’ আছে কি না।
মিয়ানমারের এই জান্তা প্রধানের নেতৃত্বে রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক অত্যাচার ও নির্যাতন চালানো হয়েছে। এর ফলে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।
প্রসিকিউটরের আবেদনের পর আইসিসির বিচারকরা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে কখন সিদ্ধান্ত নেবেন, সে ব্যাপারে কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। তবে সাধারণত, তিন মাসের মধ্যে এমন আবেদনের বিষয়ে বিচারকরা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।
প্রসিকিউটরের অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মিয়ানমারের জান্তা প্রধানের বিরুদ্ধে একটি বিস্তৃত, স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ তদন্তের পর তারা তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির অনুরোধ করেছে। এছাড়া মিয়ানমারের আরও উচ্চপদস্থ ব্যক্তির বিরুদ্ধেও পরোয়ানা জারির আবেদন করা হবে।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে প্রবেশ করে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গণহত্যার উদ্দেশ্যে’ রোহিঙ্গাদের ওপর এই নির্যাতন চালানো হয়েছিল।
মিয়ানমার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সদস্য নয়, তবে ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে আদালতটির বিচারকরা বলেছিলেন, মিয়ানমারের এই অপরাধের বিচার করার এখতিয়ার তাদের আছে। কারণ, মিয়ানমারের প্রতিবেশী বাংলাদেশ আইসিসির সদস্য, এবং যেসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, সেগুলো দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় ঘটেছে।
আইসিসি গত পাঁচ বছর ধরে রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে তদন্ত করছে, তবে মিয়ানমারে আদালতের প্রসিকিউটরকে প্রবেশ করতে না দেওয়ায় তদন্তে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে, ২০২১ সালে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচিকে ক্ষমতাচ্যুত করেন সেনাপ্রধান। তারপর থেকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়, এবং সুচিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর তদন্ত প্রক্রিয়া আরও জটিল হয়ে পড়ে।
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজার সংঘাতে মোহাম্মদ আল-তালমাস নামে আরও এক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। তিনি ১৩ জানুয়ারি, সোমবার গুরুতর আহত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। গাজা সিটিতে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা বর্ষণের সময় তিনি আহত হন। এ খবরটি আল জাজিরা জানায়।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস সাংবাদিকদের ওপর হামলা এবং হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনায় ২০৪ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।
আল-তালমাস বার্তা সংস্থা সাফারের সাংবাদিক ছিলেন। তিনি গাজা সিটিতে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্ট, ফেডারেশন অব আরব জার্নালিস্ট এবং বিশ্বের সকল দেশের সাংবাদিক সংস্থাকে গাজার ফিলিস্তিনি সাংবাদিক এবং মিডিয়া কর্মীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের হামলা ও হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করতে বলা হয়েছে।
এদিকে, গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা বেশ এগিয়েছে। কাতারের আমিরের সঙ্গে বৈঠকের পর হামাসের একটি প্রতিনিধি দল জানিয়েছে, গাজার যুদ্ধবিরতির আলোচনা ভালভাবে এগিয়ে চলছে। তবে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চললেও, অন্যদিকে গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার বাহিনী।
বেশ কিছু মেডিক্যাল সূত্র জানিয়েছে, গত ১৩ জানুয়ারি, সোমবার ভোর থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৭০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জানুয়ারি, মঙ্গলবার ১২ জন প্রাণ হারিয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর উত্তর গাজা অবরোধের শততম দিন পার হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরই গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল।
এখন পর্যন্ত গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে কমপক্ষে ৪৬ হাজার ৫৮৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, এছাড়া আহত হয়েছে আরও ১ লাখ ৯ হাজার ৭৩১ জন। প্রতিদিনই ইসরায়েলি হামলায় নিরীহ ফিলিস্তিনিরা প্রাণ হারাচ্ছে।
মন্তব্য করুন
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পোল্যান্ড সফর বাতিল করেছেন। পোল্যান্ডের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাদিস্লো বার্তোসজেউস্কি এক সাক্ষাৎকারে সতর্ক করেছিলেন যে, নেতানিয়াহু পোল্যান্ডে গেলে গ্রেপ্তার হতে পারেন। এই সতর্কবার্তার পর নেতানিয়াহু তার সফর বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মান নাৎসি বাহিনী পোল্যান্ডসহ আশপাশের দেশগুলোর ইহুদিদের যেসব বন্দি শিবিরে আটকে রেখেছিল, সেগুলো আউশউইৎজ নামে পরিচিত। পোল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে এ ধরনের কয়েকটি আউশউইৎজ শিবির ছিল। ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে এসব শিবিরে প্রায় ১০ লাখ ১০ হাজার ইহুদিকে হত্যা করা হয়। নিহতদের বেশিরভাগই পোল্যান্ড ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের নাগরিক ছিলেন।
যুদ্ধ শেষে আউশউইৎজ শিবির মুক্ত হওয়ার পর থেকে প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে এই ঘটনাকে স্মরণ করা হয়। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে আউশউইৎজ মুক্তির ৮০তম বার্ষিকী উদযাপন হবে, যেখানে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর অংশগ্রহণের কথা ছিল।
কিন্তু পোল্যান্ডের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বার্তোসজেউস্কি শনিবার এক সাক্ষাৎকারে বলেন, "আমরা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরকে জানিয়ে দিয়েছি যে, নেতানিয়াহু যদি পোল্যান্ডে আসেন, তবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ভিত্তিতে আমরা পদক্ষেপ নেব। কারণ, পোল্যান্ড আইসিসির নির্দেশনা মেনে চলার চুক্তিবদ্ধ দেশ।"
এই সতর্কবার্তার পর ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ পোল্যান্ডকে জানিয়েছে, নেতানিয়াহু এবার সেখানে আসবেন না।
উল্লেখ্য, গত নভেম্বরে গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযান পরিচালনা এবং সেখানকার বাসিন্দাদের খাদ্য, পানি ও ওষুধ থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগে আইসিসি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
যদিও ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া আইসিসিকে স্বীকৃতি দেয়নি, তবুও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশসহ বিশ্বের অনেক দেশ আইসিসির সনদে স্বাক্ষর করেছে। পোল্যান্ডও সেই তালিকায় থাকায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে থাকা পরোয়ানা কার্যকর করতে দেশটির আইনত বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সূত্র : জেরুজালেম পোস্ট
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট (নির্বাচিত) ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও গ্রিনল্যান্ড ও পানামা খাল দখল নিয়ে নিজের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, এই দুটি জায়গা দখলে নিতে সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তি ব্যবহারের কথাও ভাবছেন।
৭ জানুয়ারি, মঙ্গলবার, ফ্লোরিডায় নিজের রিসোর্টে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, তিনি কি পানামা খাল ও গ্রিনল্যান্ড দখলে সামরিক বা অর্থনৈতিক শক্তি প্রয়োগ করবেন না? তার নিশ্চয়তা কি দিতে পারবেন? এর জবাবে ট্রাম্প বলেন, "না, আমি এখনই আপনাকে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না। তবে আমি বলতে পারি, আমাদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য তাদের প্রয়োজন।"
গ্রিনল্যান্ড ও পানামা খাল উভয়কেই যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, "ডেনমার্ক যদি গ্রিনল্যান্ড বিক্রি করতে রাজি না হয়, তাহলে তাদের ওপর শুল্ক আরোপ করা হবে।"
এদিকে, ট্রাম্প কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানির ব্যয় ও কানাডাকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার সমালোচনা করেন। তিনি কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে থাকা সীমান্তকে "কৃত্রিমভাবে আঁকা রেখা" বলেও অভিহিত করেন।
তবে ডেনমার্ক ও পানামা ট্রাম্পের ধারণা অস্বীকার করেছে। ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটা ফ্রেডরিকসেন ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, "গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয় এবং আমরা একে অন্যের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও অংশীদার হিসেবে কাজ করছি।"
পানামার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভিয়ের মার্টিনেজ-আচা সাংবাদিকদের জানান, "পানামা খাল এখনো ও ভবিষ্যতেও শুধুমাত্র পানামার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।"
কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি ট্রাম্পের মন্তব্যের নিন্দা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করেন, "ট্রাম্পের মন্তব্য কানাডার শক্তির প্রতি পূর্ণ অবহেলা প্রকাশ করে। আমাদের অর্থনীতি শক্তিশালী, আমাদের জনগণ শক্তিশালী, এবং আমরা কখনো হুমকির সামনে নতজানু হবো না।"
অ্যাটলান্টিক কাউন্সিলের সাবেক কূটনীতিক ড্যানিয়েল ফ্রিড ট্রাম্পের মন্তব্যকে জাতীয় ক্ষমতার আঞ্চলিক সম্প্রসারণ হিসেবে চিত্রিত করে বলেন, "ট্রাম্প যদি গ্রিনল্যান্ড দখল করেন, তাহলে ন্যাটো ধ্বংস হয়ে যাবে, কারণ আমরা তখন আর ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য কোনো হুমকি থাকবো না।"
গ্রিনল্যান্ডের জনসংখ্যা মাত্র ৫৭ হাজার। তবে এটি বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ এবং আর্কটিক অঞ্চলে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বড় স্পেস ফ্যাসিলিটি রয়েছে, এবং সেখানে পৃথিবীর বিরল কিছু পদার্থ ও উপাদানের বৃহত্তম মজুত রয়েছে, যা ব্যাটারি ও হাই-টেক ডিভাইস তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, এটি স্পষ্ট নয় যে ট্রাম্প কানাডা ও গ্রিনল্যান্ড নিয়ে কতটা সিরিয়াস। তবে তার এসব বক্তব্য বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে।
মন্তব্য করুন
চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি ত্বরান্বিত করতে ২০২৫ সালে আরও সক্রিয় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) নতুন বছরের আগমনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, ২০২৪ সালের শেষে চীনের জিডিপি অন্তত ১৭ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। খবরটি রয়টার্সের।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে শি জিনপিং বলেন, গত বছরে চীন দেশের ভিতরে এবং বাইরের পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে উন্নয়নের উচ্চমান ধরে রাখতে সর্বাত্মক নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
চীন দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণ ব্যবসায় মন্দা, স্থানীয় সরকারের ঋণের ঊর্ধ্বগতি এবং ভোক্তাদের আস্থার অভাবে অর্থনৈতিক চাপের মধ্যে রয়েছে। গত বছর এই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে দেশটিকে। এর মধ্যে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার ফলে উচ্চ রফতানি শুল্ক আরোপের আশঙ্কাও বাড়িয়েছে।
তিনি বলেন, চলমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় নতুন কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। দেশের সীমানার বাইরে পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে, পাশাপাশি পুরোনো থেকে নতুন চালিকাশক্তিতে রূপান্তরের চাপও বাড়ছে।
তবে, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সব বাধা অতিক্রম করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদী। শি জিনপিং আরও বলেন, ‘‘প্রতিবারের মতো আমরা ঝড়বৃষ্টির মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠব, কঠিন সময়ের মধ্যে আমরা শক্তিশালী হয়ে উঠব। নিজেদের সক্ষমতার ওপর আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে।’’
চীনের কর্তৃপক্ষ গত সেপ্টেম্বরে ঋণের সুদের হার হ্রাস এবং বাড়ি ক্রয়ে বিধিনিষেধ কমানোর মতো পদক্ষেপ নিয়ে নির্মাণ ব্যবসা ও অভ্যন্তরীণ চাহিদা চাঙা করার চেষ্টা করেছে।
বিদায়ী বছরের শেষ মাসে শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতা ২০২৫ সালে তুলনামূলক সহজ মুদ্রানীতি প্রণয়ন করার আহ্বান জানিয়েছেন। এর বাস্তবায়ন হলে, বিগত ১৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম বিধিনিষেধমূলক নীতিমালা আসবে। পাশাপাশি, ২০২৫ সালে ভোক্তা ব্যয় এবং বন্ড ইস্যু বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, ২০২৫ সালে ৪১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের ট্রেজারি বন্ড ইস্যু করতে সম্মত হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য করুন